রুমা পাল, সুকান্ত মুখোপাধ্যায় ও সুনীত হালদার, কলকাতা: ঘনাচ্ছে দুর্যোগের মেঘ। তবে, ঘূর্ণিঝড় 'সিত্রাং' (Cyclone Sitrang) মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রশাসন। দক্ষিণবঙ্গের জেলাপ্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মুখ্যসচিব। ধান তুলে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী। হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে বিদ্যুত্‍ দফতর। জরুরি পরিষেবায় যুক্ত সরকারি কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে (Weather Update)।


ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় তৎপর রাজ্য প্রশাসন


ইয়াস, ফণী, আমফান...একের পর এক ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছে রাজ্যে। তছনছ করে দিয়েছে জনজীবন। প্রাণহানিও ঘটেছে। লক্ষ লক্ষ মানুষের মাথার উপর থেকে ছাদ উড়ে গিয়েছে। আলোর উৎসবে এ বার ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ভ্রূকুটি। 


আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, কালীপুজোর মধ্যেই রাজ্যের উপকূলের দিক ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়। তাতেই পরিস্থিতি মোকাবিলায় তত্‍পর হয়েছে প্রশাসন। দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির জন্য খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। শুক্রবার, জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন, মুখ্যসচিব। 


বৈঠকে ছিলেন, ২০টি দফতরের সচিবরাও।  নবান্নের তরফে জানানো হয়েছে, ঝড়ের কারণে একাধিক দফতরের কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ছুটি বাতিল হয়েছে পুরকর্মীদের একাংশেরও। 


আরও পড়ুন: Weather Update: সাগরে ঘনাচ্ছে দুর্যোগের মেঘ, উপকূলবর্তী এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা


শুক্রবার, কলকাতা পুরসভায় বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে বৈঠক করেন মেয়র। প্রথম দফায় পুর আধিকারিকদের সঙ্গে মিটিং। দ্বিতীয় দফায়, ভার্চুয়াল বৈঠক করেন, উপকূলবর্তী এলাকার প্রশাসনের সঙ্গে।


কলকাতা পৌরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এ নিয়ে বলেন, "দুই ২৪ পরগনায় মারাত্মকভাবে ঝড় আসবে। কলকাতায় ঝড়টা ৯০ মিলিলিটার। ওরা সব ক্রেন, সব বলা আছে... কাটিং মেশিন রেডি রাখতে বলেছি। ad dept -কে বলেছি, যাতে হোর্ডিং খুলে ফেলে। পড়ে যেতে পারে। রবিবার স্পষ্ট হবে, সোমবার দুপুরের পর বৃষ্টি শুরু হবে। আমরা সব স্কুল, কমিউনিটি হল খুলে রাখছি।"


পৌরসভা সূত্রে খবর, শনিবার থেকে পাম্পিং স্টেশনগুলির ট্রায়াল রান শুরু হবে। অন্য দিকে, ঘর্ণিঝড় সতর্কতার মধ্যে, বিদ্যুত্‍ দফতরও প্রস্তুত বলে জানিয়েছে। বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, বিদ্যুৎ দফতর সম্পূর্ণ ভাবে প্রস্তুত। সমস্ত কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সমস্ত কাস্টমার কেয়ার এবং সমস্ত সাবস্টেশন ২৪ ঘণ্টা কাজ করবে। প্রায় ৬৯ হাজার আধিকারিক ও কর্মী বিভিন্ন জায়গায় মোতায়েন থাকবে।"


হেল্পলাইন প্রকাশ করল বিদ্যুৎ দফতর


বিদ্যুত্‍ দফতরের তরফে চালু করা হেল্পলাইন নম্বর হল - ৮৯০০ ৭৯৩৫০৩।  হেমন্তে নতুন ফসল ঘরে তোলার পালা। তার আগে, দুর্যোগের সতর্কবার্তা। তাই আগেই ধান তুলে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী। এই পরিস্থিতিতে প্রতিমা নিরঞ্জনেও বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছে প্রশাসন। দুর্যোগ-আশঙ্কার মধ্যে তত্‍পর হাওড়া প্রশাসনও। ২৪ ঘণ্টার জন্য খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। সাফাই কর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মী এবং মোটর ভেহিকেলস দপ্তরে কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পৌরসভার তরফে জানানো হয়েছে, নীচু জায়গায় জল বের করার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৫৭টি পাম্প।