কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: দুর্গা পুজো শেষ। কিন্তু আন্দোলনরত চাকরি প্রার্থীদের (Job Seekers Agitation) দুর্গতির শেষ নেই। উৎসবের শহরে  কান্নার রোল। প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীরা ধর্মতলা চত্বরে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন। মাতঙ্গিনী হাজরার পাদদেশে ১১৩ দিন অবস্থান আন্দোলন করছেন আপার প্রাইমারির চাকরিপ্রার্থীরা। এদিন ধর্না মঞ্চে যান শিল্পী সমীর আইচ। চাকরিপ্রার্থীদের সমবেদনাও জানান তিনি। পাশাপাশি শিক্ষা ব্যবস্থায় দুর্নীতির অভিযোগও সরবও হন তিনি। 


উৎসবের শহরে কান্নার রোল: হকের চাকরি কবে মিলবে? কবে ঘুচবে বেকারত্বের জ্বালা? যত দিন যাচ্ছে তত জোরাল হচ্ছে এই প্রশ্ন। এদিন চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে দেখা করেন শিল্পী সমীর আইচ। এদিন তিনি বলেন, "গোটা রাজ্যে শিক্ষা নিয়ে যা হচ্ছে, তা ভয়ানক ছবি। ১১৩ ধরে অবস্থান করছেন। এই সরকার কীভাবে রাজ্য চালাচ্ছেন তা এই জায়গায় এলেই বোঝা যায়। স্বাস্থ্য বা অন্যান্য বিভাগক নিয়ে এখনও কিছু বলছি না। কিন্তু দেখুন কীভাবে আমাদের ঘরের ছেলেমেয়েরা বঞ্চিত হচ্ছে। শাসকদলের কিছু মানুষ পয়সা লুঠবেন। প্রায় গোটা শিক্ষা দফতরটা জেলে। এখানে প্রমাণিত কী ধরনের দুর্নীতি হচ্ছে, যার খেসারত দিতে হচ্ছে আমাদের মতো ঘরের ছেলেমেয়েদের।''


নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে গতকাল গ্রেফতার হয়েছেন। গতকালের পর আজ সকালেও জেরা করবে ইডি। ইডি সূত্রে খবর, তদন্তে সহযোগিতা করছেন না মানিক। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে ইডি-র হাতিয়ার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট। তদন্তকারীদের নজরে মানিক ভট্টাচার্যর ফোন কলের ডিটেলস ও মেসেজও। ইডি সূত্রে দাবি, নিয়োগ নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও বিভিন্ন জেলার নিয়োগকারীদের সঙ্গে মেসেজ আদানপ্রদান হয়েছে মানিকের। প্রার্থী তালিকা তৈরি নিয়েও টেক্সট। এই সমস্ত তথ্য প্রমাণ সামনে রেখেই আজ মানিককে জেরা করতে চায় ইডি। খবর সূত্রের। পাশাপাশি, মানিকের মোবাইল ফোনে মেলা সন্দেহজনক দুটি নাম DD ও RK-র পরিচয় সম্পর্কেও জানতে চায় ইডি। খবর সূত্রের।


নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মানিক ভট্টাচার্য সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর দাবি ইডি-র। আদালতে ইডি-র দাবি, টাকার বিনিময়ে চাকরি-বিক্রির অন্যতম মূল মাথা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি। ইডি-র দাবি, ২০১১-র পর মানিকের আমলে ৫৮ হাজারেরও বেশি নিয়োগ হয়েছে। এই পরিসংখ্যান পেশ করে কী পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে, সেটাই আদালতে তুলে ধরার চেষ্টা করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী। আদালতে ইডি-র দাবি, গত ২২ জুলাই মানিকের বাড়ি থেকে যে সমস্ত নথি ও ডিজিটাল তথ্যপ্রমাণ বাজেয়াপ্ত হয়েছে, তাতে বিপুল পরিমাণ টাকা নয়ছয়ের প্রমাণ মিলেছে। টাকা নয়ছয়ে মানিক ভট্টাচার্যর সরাসরি যোগ রয়েছে। সব জেনেশুনেই মানিক দুর্নীতিতে মদত দিয়েছেন এবং নিজেও জড়িত ছিলেন বলে আদালতে দাবি করে ইডি। 


আরও পড়ুন: Cow Smuggling Case: গরুপাচার মামলায় তৎপর সিবিআই, নজরে অনুব্রত মণ্ডলের আত্মীয়দের সম্পত্তি