মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর (পশ্চিম বর্ধমান): দুর্গাপুর পুরসভার (Durgapur Municipality) ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের একাংশে নেই জলের কল, নেই বিদ্যুৎও। এমনই একাধিক অভিযোগে পুরসভার বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন বাসিন্দাদের একাংশ। তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার পরিষেবাকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি (BJP)। অন্যদিকে দুর্নীতি ইস্যুতে রাজ্যের শাসক দলকে বিঁধল সিপিএম। এদিকে দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বরো চেয়ারম্যান।
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ: নোংরা হাইড্রেনের পাশেই পাইপ দিয়ে পড়ছে জল। সেই জলই ব্যবহার করা হচ্ছে রান্নাবান্না থেকে কাপড় কাচার মতো সমস্ত কাজে। প্রত্যন্ত কোনও গ্রামের নয়। এই ছবি খোদ দুর্গাপুর পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে থাকা জলের পাইপ থেকে জল সংগ্রহ করে দিনযাপন করতে হচ্ছে এখানকার বাসিন্দাদের।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বারবার দরবার করেও মেলেনি কোনও জলের কল। দুর্গাপুরের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মুন্নি বেবির কথায়, দৈনন্দিন কাজে এই জলই ব্যবহার করি। বারবার আবেদন সত্ত্বেও পানীয় জলের কল বসানো হয়নি।
দুঃসহ দিনযাপন: এখানেই শেষ নয়। দুর্গাপুরের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকায় এখনও নেই বিদ্যুৎ সংযোগ! বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, কিছুদিন আগে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতাকে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য টাকা দেওয়া সত্ত্বেও এখনও অন্ধকারের মধ্যেই কাটাতে হচ্ছে।
টাকা নিয়ে দুর্নীতি? ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের আরেক বাসিন্দা, মহীপাল দাস জানিয়েছেন, ইলেকট্রিকও নেই। তৃণমূল নেতাকে টাকা দিলে খোকন রুইদাস নামে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতাকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পাঁচশ টাকা করে নিয়ে দিয়েছিলাম, এখনও আসেনি। নেই পানীয় জল, বিদ্যুৎ সংযোগ। পশ্চিম দুর্গাপুরের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই-এর কথায়, এটা লজ্জার ছবি, যে মানুষ আজ না জেনে এই জল ব্যবহার করছে, পুরসভার ব্যর্থতা।
পশ্চিম বর্ধমানের সিপিএম জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের কথায়, মানুষ ভালো না খারাপ জল সেটা না বুঝে পাইপ লাইন বেয়ে আসা হাই ড্রেনে পড়া ঐ জল খাচ্ছে ব্যবহার করছে, এটা সভ্য সমাজের ছবি? খোকন রুইদাস নামে ঐ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। কোনও রহস্যময় কারণে তৃণমূল নেতারা সব জেনেও না জেনে বসে থাকার ভান করছে। যদিও দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল।
তৃণমূলের দাবি: দুর্গাপুর পুরসভা ৪ নম্বর বরোর তৃণমূল (TMC) নেতা ও চেয়ারম্যান সুনীল চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দল দুর্নীতির কাজে মদত দেয় না। বিদ্যুত সংযোগ দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার বিষয়টি মিথ্যে অভিযোগ। প্রয়োজনে আমি নিজে গিয়ে জলের ব্যবস্থা করব। অগাস্টেই শেষ হচ্ছে তৃণমূল পরিচালিত দুর্গাপুর পুরসভার মেয়াদ। পানীয় জল ও বিদ্যুতের সমস্যার প্রতিফলন ভোটবাক্সে পড়ে কি না, সেটাই দেখার।