মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: পশ্চিম বর্ধমানের অন্ডালে যাত্রীবাহী বেসরকারি বাস থেকে বেআইনি কয়লা উদ্ধার করল পুলিশ। কে বা কারা বাসে পাচারের উদ্দেশে কয়লা তুলেছিল, তা স্পষ্ট নয়। জরিমানা করা হয়েছে বাসের চালককে। ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। 


গরু ও কয়লা পাচারকাণ্ডে, সিবিআই-ইডি’র তদন্ত নিয়ে, তোলপাড় রাজ্য। সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন ইসিএলের বর্তমান ও প্রাক্তন কর্তা, নিরাপত্তা আধিকারিক ও কয়েকজন ব্যবসায়ী।  অন্যদিকে, আবার কয়লাকাণ্ডের তদন্ত চালাচ্ছে সিআইডি’ও। কিন্তু, এতসবের পরও কি



থামেনি অবৈধ কয়লা পাচার? প্রশ্নটা উঠছে, কারণ পশ্চিম বর্ধমানের অন্ডালে ফের পাচারের সময় উদ্ধার হল  কয়লা! এবার যাত্রীবাহী বাস থেকে! পুলিশ সূত্রে দাবি, গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে, বৃহস্পতিবার অন্ডাল মোড়ের কাছে, আসানসোল থেকে বর্ধমানগামী এই বাসটিকে দাঁড় করানো হয়। বাসের ছাদ, সিটের নীচে এবং বাঙ্কারে রাখা ছিল কয়লা। পুলিশ সূত্রে দাবি, প্রায় ২ টন কয়লা উদ্ধার হয়। এদিকে, আসানসোলে বেআইনি কয়লা উদ্ধার নিয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানউতোর 


পশ্চিম বর্ধমানের বিজেপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জিতেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ''কয়লাকাণ্ডে এত গ্রেফতার হল, তারপরও এইভাবে কয়লা পাচার হচ্ছে...তৃণমূলের মদত না থাকলে এ সব হয় না।'' অন্যদিকে, পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদ তৃণমূল নেতা ও পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, ''মিথ্যে অভিযোগ, পুলিশ ধরেছে এতেই প্রমাণ হয়, আমাদের মদত থাকে না।''


একদিকে সিআইডি, অন্যদিকে ইডি-সিবিআই। কয়লাকাণ্ডে এতগুলি এজেন্সির তদন্তের জন্যই কি কয়লা পাচারের কৌশল বদলাচ্ছে পাচারকারীরা? তাই কি ট্রাকের বদলে যাত্রীবাহী বাসে কয়লা পাচারের চেষ্টা? এই প্রশ্নও তুলে দিয়েছে বৃহস্পতিবারের ঘটনা।


উল্লেখ্য, কয়লাকাণ্ডে ইডি-সিবিআইয়ের তদন্ত। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর স্ত্রী, শ্যালিকা, মন্ত্রী মলয় ঘটককে জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে শাসক-বিরোদী দড়ি টানাটানি এখন চরমে। গরু পাচার থেকে, কয়লা পাচার নিয়োগ দুর্নীতি থেকে চিটফান্ড কেলেঙ্কারি CBI-ED’র তদন্ত ঘিরে নানা ইস্যুতে যখন তৃণমূলকে বাংরবার বিদ্ধ করছে বিজেপি।


কিছুদিন আগে, কয়লা পাচারকাণ্ডে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে CID তলব করা হয়েছিল। সূত্রের খবর, অন্ডালের একটি পুরনো মামলায় তাঁকে ডাকা হয়েছিল। যদিও হাজিরা এড়িয়েছিলেন জিতেন্দ্র। সূত্রের খবর, চিঠিতে জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানিয়েছেন, তিনি পাণ্ডবেশ্বরের প্রাক্তন বিধায়ক। পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে অন্ডাল পড়ে না। সেইসঙ্গে জিতেন্দ্র জানিয়েছেন, তিনি আসানসোল পুরসভার প্রাক্তন মেয়র। অন্ডাল আসানসোল পুর এলাকার মধ্যেও পড়ে না। এই প্রেক্ষিতে আড়াই বছরের পুরনো অন্ডালের একটি মামলায় কেন তাঁকে ডাকা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেতা। সূত্রের খবর, তিনি জানিয়েছেন, এই ইস্যুতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন। হাইকোর্ট যে নির্দেশ দেবে, সেই মতোই তিনি চলবেন।