মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: দুর্গাপুর শহরের (Durgapur Town) প্রাণকেন্দ্র সিটি সেন্টার (City Center) এলাকায় বাড়ছে দুষ্কৃতীদের দাপট। দীর্ঘ সময় ধরে ফাঁকা পড়ে থাকা বাড়িতে ডেরা বানাচ্ছে সমাজ বিরোধীরা। এলাকায় বাড়ছে চুরি, ছিনতাই। এমনই অভিযোগে সরব হয়েছেন স্থানীয়রা। ফাঁকা বাড়ি চিহ্নিত করে এলাকায় রাতের টহলদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানিয়েছে পুলিশ (Durgapur Police)। 


দীর্ঘদিন বাড়িতে কেউ থাকেন না। ঝোপে-আগাছায় ভরে গিয়েছে চারদিক। জানালা থেকে খসে পড়ছে কাচ। এই সব শুনসান নিরিবিলি বাড়িতেই না কি তৈরি হচ্ছে অপরাধীদের আখড়া! যা নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছেন পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার এলাকার বাসিন্দারা।


দুর্গাপুর সিটি সেন্টারের বাসিন্দা নীলাঞ্জন রায় চৌধুরীর জানিয়েছেন, আড়াই-তিন বছর পরে ভিতরে আলো জ্বলছে। পাশের বাড়ির পাঁচিল থেকে উঠে আমরা দেখলাম ভিতরে বিছানা করা। বোতলটোতল সব পড়ে আছে। তার মানে ওখানে কেউ থাকছে। এই বাড়ির ভদ্রলোক, ভদ্র মহিলা মারা যাওয়ার পর তিন মেয়ে। একজন থাকে বোম্বে, একজন থাকে আসানসোল। ছোট মেয়ে থাকত এখানে। সে একটু অ্যাবনর্মাল। বছর দুয়েক আগে ভর্তি হছে বিধাননগর হাসপাতালে। এই বাড়ির মালিকানা কী হবে বোঝা যাচ্ছে না।


স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রায় ১০ থেকে ১২টি ফাঁকা বাড়ি রয়েছে সিটি সেন্টার (City Center) চত্বরে। আরেক বাসিন্দা সাথী লোধ জানিয়েছেন, অনেকেই বিদেশে চলে গিয়েছেন। এখানে থাকেন না। ছেলেমেয়ে এখানে নেই। বয়স্ক বাবা-মা হয়তো অন্য জায়গায় গিয়ে রয়েছে। তার জন্য ঘরগুলো ফাঁকা রয়েছে। আমরা খুবই ভয়ে আছি। খুবই ভয় পাচ্ছি। বাচ্চার খেলে। কিডন্যাপ হলে তার দায় কে নেবে। খুনোখুনি যদি একটা হয়ে যায়।


অভিযোগ সামনে আসতেই আইন-শৃঙ্খলা ইস্যুতে প্রশাসনের কড়া সমালোচনা করেছেন এলাকার বিধায়ক। দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি (BJP) বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘড়ুই-এর অভিযোগ, দুর্গাপুর ঐতিহ্যশালী শহর। এখন সেখানে দুষ্কৃতীরাজ চলছে। আবাসন দখল হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন নির্বিকার।


অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মেয়র। তৃণমূল (tmc) নেতা ও দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র দিলীপ অগস্তি জানিয়েছেন, এরকম ঘটছে সিটি সেন্টারে। আমি বলেছি, হয় আমাকে জানান, নইলে পুলিশকে জানান। ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি জানিয়েছেন, সিটি সেন্টার এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে ফাঁকা পড়ে থাকা বাড়িগুলিকে চিহ্নিত করে সেখানে রাতের টহলদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।