বিশ্বজিৎ দাস , পশ্চিম মেদিনীপুর: পশ্চিম মেদিনীপুরে এবার সমবায় সমিতিতেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠল। আমানতকারীদের একাংশের অভিযোগ, পাটনা কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতিতে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের উপপ্রধান। পাল্টা দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল নেতা।


স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে কোটি কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য সামনে এসেছে, যা নিয়ে রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়ে গেছে, তার মধ্যেই এবার পশ্চিম মেদিনীপুরে সমবায় সমিতিতে কোটি কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে! এই অভিযোগ ঘিরে সরগরম ডেবরার ভবানীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পাটনা কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতি।


প্রায় সাড়ে চার বছর এই সমবায় সমিতিতে সম্পাদক পদে ছিলেন তৃণমূল পরিচালিত ভবানীপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জগন্নাথ মুলা। আমানতকারীদের একাংশের অভিযোগ, তাঁদের জমানো টাকার ১ কোটিরও বেশি আত্মসাৎ করেছেন তৃণমূল নেতা। অভিযুক্তকে গ্রেফতার ও টাকা ফেরানোর দাবিতে বুধবার ডেবরা থানা ও বিডিও অফিসে স্মারকলিপি জমা দেন আমানতকারীরা। আর এই ঘটনা ঘিরে ডেবরায় সামনে এসে পড়েছে তৃণমূলের অন্দরের বিবাদ। দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল নেতা।


ডেবরা ভবানীপুরের তৃণমূল নেতা ও উপপ্রধান জগন্নাথ মুলার দাবি, আমার আগের আমলে যারা ছিলেন তারা প্রায় পাঁচ কোটি টাকা অবৈধ লোন দিয়েছে। সেই টাকার দায় দিয়ে সমবায় সমিতিকে ধ্বংস করার চক্রান্ত করা হচ্ছে। এই চক্রান্তের পেছনে আমাদের ব্লকের কিছু তৃণমূলের নেতৃত্ব জড়িত আছে।


ডেবরা ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস সহ-সভাপতি অনুপম দাসের কথায়, তৃণমূল সবাইকে নিয়েই দল করে। আর আমরা মাইনাস রাজনীতি করি না। আমার মনে হয় উনি এ কথা সঠিক বলেননি।


তৃণমূলের কোন্দল প্রকাশ্যে আসতেই কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি। ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার বিজেপির বুদ্ধিজীবী সেলের  আহ্বায়ক কাশীনাথ বসুর কথায়, উপরের নেতারা চাকরি বিক্রি করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করেছে। আর তৃণমূলের নীচে তলার নেতারা তাদের হাতের সামনে গরিব মানুষের সমবায় সমিতিকে পেয়ে কোটি কোটি টাকা লুট করেছে। দলটাই লুটেরাদের। তৃণমূল কংগ্রেস ডেবরায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জীর্ণ।


পাটনা কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতিতে দুর্নীতি যে হয়েছে, তা স্বীকার করেছেন সমবায় পরিদর্শকও। সমবায় পরিদর্শক শুভেন্দু প্রামাণিকের কথায়, আমরা ডিপার্টমেন্টাল ভাবে একটা তদন্ত করেছি। ওই কমিটির কিছু গাফিলতি পাওয়া গেছে। সেই কারণে ৫ বছর হওয়ার আগেই ওই কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। টাকা ফেরতের প্রক্রিয়া চলছে। একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ। তার ওপর ঘরোয়া কোন্দল, পঞ্চায়েত ভোটের আগে অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসক দল।