বীরভূম: অনুব্রত মণ্ডলের এক কোটি টাকার লটারি আসলে কে পেয়েছিলেন? সেই ব্যক্তির খোঁজে এবার বোলপুরের বড় শিমুলিয়া গ্রামে তল্লাশি অভিযান সিবিআইয়ের। গরুপাচার মামলায় লটারির মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার অভিযোগ উঠেছে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে। সিবিআই সূত্রে দাবি, অনুব্রত ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা একের পর এক লটারি জিতেছেন। আর সেই লটারির হাত ধরেই লেনদেন হয়েছে কোটি কোটি টাকা। দাবি সিবিআই সূত্রে। এবার অনুব্রতর এক কোটি টাকার লটারির রহস্যভেদে ফের বোলপুরে হানা দিয়েছে সিবিআই।
এর আগে অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) পরিবারের আরও একটি লটারি পুরস্কারের (Lottery Scam) হদিশ পায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (CBI)। সিবিআই সূত্রে দাবি, অনুব্রতর কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের (Sukanya Mondal) আরও একটি লটারি প্রাপ্তির হদিশ মেলে। জানা যায় সুকন্যা ৫০ লক্ষ টাকার ওই লটারি পুরস্কার জেতেন ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকেই এই তথ্য মিলেছে বলে সিবিআই সূত্রে দাবি করা হয়। এই নিয়ে অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর পরিবারের পাঁচটি লটারি জেতার হদিশ পেয়ে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যায় সিবিআই।
অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর পরিবারের পাঁচটি লটারি জেতার হদিশ
এর আগেই, সিবিআই জানায়, শুধুমাত্র ১ কোটি টাকা নয়। আরও একাধিক লটারির সন্ধান মিলেছে অনুব্রত এবং তাঁর পরিবারের নামে। এ বার বিস্ফোরক তথ্য জানা যাচ্ছে সিবিআই সূত্রে। বলা হয়েছে, সুকন্যার নামে ২০২০-র জানুয়ারির মাসে ৫০ লক্ষ টাকার একটি লটারি বেরিয়েছিল। তিনি ক্লেম করে সেই টাকাও তোলেন। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখে লটারিবাবদ ওই ৫০ লক্ষ টাকা জমা পড়ার প্রমাণ মিলেছে।
যত দিন গিয়েছে, অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) লটারি-রহস্য আরও ঘনীভূত (Lottery Scam)। বীরভূমের (Birbhum News) তৃণমূল (TMC) সভাপতিকে লটারির টিকিটই বিক্রি করেননি বলে এ বার দাবি করেন বোলপুরের লটারি বিক্রেতা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (CBI) জিজ্ঞাসাবাদে লটারি টিকিট বিক্রেতার এমন 'স্বীকারোক্তি' পাওয়া গিয়ছে বলে গোয়েন্রদা সূত্রে জানা গিয়েছিল। তাহলে লটারি আসলে কিনেছিলেন কে, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে শুরু করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
সিবিআই-এর কাছে অনুব্রতকে টিকিট বিক্রির কথা অস্বীকার বিক্রেতার
অনুব্রতর লটারি জেতা নিয়ে কয়েক দিন আগেই তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। সেই মতো তদন্তে নেমে শুক্রবার ওই লটারি বিক্রেতার দোকানে হানা দেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। এর পর লটারি বিক্রির নথি নিয়ে বোলপুরে সিবিআই-এর অস্থায়ী শিবিরে যান লটারির টিকিট বিক্রেতা এবং তাঁর দোকানের কর্মীরা। সেখানেই লটারি বিক্রেতা অনুব্রতকে টিকিট বিক্রির করেননি বলে জানান, এমনই জানা গিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে।
লটারির টিকিট কেটে রাতারাতি ভাগ্যবদলের কাহিনিতে এ যাবৎ খেটে খাওয়া, দুঃস্থ মানুষেরই আধিপত্য ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে লটারি টিকিট বিজয়ে নাম জুড়ে যাচ্ছে হেভিওয়েটদের। কোটি কোটি টাকা জেতার খবর সামনে আসছে। তাতেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি কালো টাকা সাদা করতে লটারির রাস্তা বেছে নিচ্ছেন হেভিওয়েটরা! টাকার বিনিময়ে আসল লটারি জয়ীর কাছ থেকে টিকিট নিয়ে আয়োজকদের কাছ থেকে অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকানো হচ্ছে!