বড়ঞা: মুর্শিদাবাদে (Murshidabad) নবজোয়ার যাত্রায় পুরভোটে জয়ী নির্দলদের দলে ফেরানো হয়নি বলে একাধিকবার দাবি করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। কিন্তু বড়ঞায় তাঁর সভাতেই দেখা গেল উল্টো ছবি। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের ওই সভায় হাজির ছিলেন কান্দি পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল কাউন্সিলর গুরুপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। গত পুরভোটে টিকিট না পেয়ে, নির্দল হিসেবে লড়ে তৃণমূল প্রার্থীকে হারানোর পর, দল তাঁকে বহিষ্কার করে।
ভোটের ফল ঘোষণার পর, কান্দির তৃণমূল (TMC) বিধায়কের হাত ধরে পুরনো দলে ফেরেন গুরুপ্রসাদ। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি তৃণমূলের (TMC) জেলা কমিটির সম্পাদক হয়েছেন নির্দল কাউন্সিলরকে। এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপি (bjp) ও কংগ্রেসের কটাক্ষ, অভিষেকের কাজে-কথায় মিল নেই, এটাই তার প্রমাণ। অস্বস্তি ঢাকতে খতিয়ে দেখার আশ্বাস তৃণমূলের।
কথায় বলে, রাজনীতিতে শেষ বলতে কিছু নেই। দলবদল এখন যেন কার্যত বঙ্গ রাজনীতির অঙ্গে পরিণত হয়েছে। কে কখন কোন দলে রয়েছেন? এখন সেটাই যেন ধোঁয়াশা। গত পুরভোটে টিকিট না পেয়ে তৃণমূলের বিক্ষুব্ধদের একাংশ নির্দল হয়ে ভোটে লড়াই করেছিল।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে, তৃণমূলে নবজোয়ার কর্মসূচিতে রবিবার মুর্শিদাবাদের বড়ঞায় দলীয় নেতা কর্মীদের এই প্রসঙ্গে কড়া বার্তা দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, কাকদ্বীপ থেকে কোচবিহার বা দার্জিলিং থেকে দেগঙ্গা, আপনি আমাকে একটাও উদাহরণ দেখাতে পারবেন না যে, কেউ নির্দল হয়ে জিতে পুরসভা ভোটে এই ১৪ মাসে তৃণমূলে আবার ঢুকতে পেরেছে।
যে বড়ঞার মঞ্চে দাঁড়িয়ে এই কথা বলেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন কান্দি পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল কাউন্সিলর গুরুপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রে দাবি,গত পুরভোটে টিকিট না পেয়ে, নির্দল হিসেবে লড়ে তৃণমূল প্রার্থীকে হারান গুরুপ্রসাদ। নির্দল হিসাবে দাঁড়ানোর পরই তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু, ভোটে জেতার পর, কান্দির তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব সরকারের হাত ধরে গুরুপ্রসাদ দলে ফেরেন। সম্প্রতি তৃণমূলের জেলা কমিটির সম্পাদক হয়েছেন কান্দির এই নির্দল কাউন্সিলর।
রবিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মসূচিতে দেখা যায় গুরুপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে। গলায়, তৃণমূলে নবজোয়ারের ব্যাজ...তাতে লেখা 'অফিশিয়াল'। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মসূচিতে এভাবেই অংশ নিয়েছিলেন কান্দির এই নির্দল কাউন্সিলর। শুধু তাই নয়, অফিশিয়াল হিসাবে সেখানে দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। এর আগেও তৃণমূলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে দেখা গেছে গুরুপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে।
অধীর চৌধুরীর কথায়, না আছে নীতি, না আছে আদর্শ। এগুলো চোর-চোট্টার দল। আর সেই চোর-চোট্টার একটা নেতা হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, যে নিজে কয়লা চুরিতে অভিযুক্ত বলে যার বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে। যাকে দিল্লির ED দফতরে সাড়ে ৯ ঘণ্টা জেরা করা হয়েছে, আর জেরা করার পর দিন থেকেই সে কংগ্রেসের বিরোধিতা করতে আরম্ভ করে দিয়েছে। চুক্তি মোদির সঙ্গে এটাই যে কংগ্রেসের বিরোধিতা করলে বাঁচতে পারো।
অভিষেকের কর্মসূচিতে নির্দল কাউন্সিলর। কান্দির নির্দল কাউন্সিলর গুরুপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের কথায়, আমি কান্দি পুরসভার কাউন্সিলর। যা বলার দলীয় নেতৃত্ব বলবে। তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ শান্তনু সেনের কথায়, উনি যেটা বলেছিলেন পঞ্চায়েত ভোটের জন্য, পঞ্চায়েত ভোটর ফল বেরনোর পর দেখবেন মিলল কি না। এর পর তৃণমূল নেতৃত্ব কী ব্যবস্থা নেয়, সেদিকেই সবার নজর।