নয়াদিল্লি: বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রের (EVM) পরিবর্তে আবারও ব্যালট পদ্ধতি (VVPAT) ফিরিয়ে আনার দাবি উঠছে। বিষয়টি নিয়ে মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। সম্পূর্ণ ভাবে EVM বাতিল করায় সায় না দিলেও, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার পবিত্রতা রক্ষা করতে হবে বলে নির্বাচন কমিশনকে জানাল দেশের শীর্ষ আদালত (Election Commission)। মুক্ত এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য কমিশন কী পদক্ষেপ করছে, তা জানতে চাওয়া হল। (EVM vs VVPAT)


EVM এবং VVPAT- বিতর্ক নিয়ে কমিশনের উদ্দেশে বৃহস্পতিবার আদালত বলে, "ভোটপ্রক্রিয়া নিয়ে কথা হচ্ছে এখানে। ভোটপ্রক্রিয়ার পবিত্রতা রক্ষা করা উচিত।- যেমনটা হওয়া উচিত ছিল, তেমনটা হচ্ছে না বলে ভোটপ্রক্রিয়া নিয়ে কারও মনে এমন কোনও আশঙ্কা থাকা উচিত নয়।" ভোটপ্রক্রিয়াকে মুক্ত এবং নিরপেক্ষ রাখতে কী পদক্ষেপ করছে কমিশন, তা-ও জানতে চাওয়া হয়। (Supreme Court)


EVM-এ পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার পর, সঠিক জায়গায় ভোট পড়ল কি না, ভিভিপ্যাট স্লিপের মাধ্যমে তা পর্যবেক্ষণ করা নিয়ে আদালতে শুনানি চলছে। অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (ADR)-এর তরফেও মামলা করা হয়েছে। তাদের দাবি, প্রতি বিধানসভায় ২০০টি করে VVPAT থাকলেও, পাঁচটির বেশি গণনার কাজে ব্যবহৃত হয় না। VVPAT থেকে স্লিপ সংগ্রহ করে ভোটারদের ব্যালট বক্সে তা ফেলতে দেওয়ার সুযোগ থাকা উচিত এবং কারচুপি আটকাতে প্রত্যেকটি VVPAT স্লিপ গণনা করা উচিত বলে দাবি তাদের।


আরও পড়ুন: Loksabha Election 2024: মোতায়েন ১১২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী, কোচবিহারে চলছে শেষ মুহূর্তে ভোটের প্রস্তুতি


কমিশনের তরফে এই মামলায় আদালতে সওয়াল-জবাব করছেন অভিজ্ঞ আইনজীবী মণিন্দর সিংহ। আবেদনকারীদের হয়ে আদালতে সওয়াল-জবাব করছেন আইনজীবী নিজাম পাশা। আদালতে নিজাম জানান, EVM-এ ভোটদানের পর ভিভিপ্যাট স্লিপের সঙ্গে তা মিলিয়ে দেখে নেওয়ার সুযোগ পাওয়া উচিত ভোটারদের। কিন্তু তাতে ভোটারদের গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার খর্ব হবে না কি, জানতে চান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না। জবাবে নিজাম জানান, গোপনীয়তা রক্ষার অধিকারের দোহাই দিয়ে ভোটারের অধিকার খর্ব করা অনুচিত। 


অন্য আর এক আবেদনকারীর হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ জানান, সর্ব ক্ষণ বুথে ভিভিপ্যাটের আলো জ্বালিয়ে রাখা থাকা উচিত।  বর্তমানে মাত্র সাত সেকেন্ডই সক্রিয় থাকে ভিভিপ্যাটের আলো।  স্লিপ যে বেরোচ্ছে, তা অবশ্যই দেখাতে হবে, তাতে অন্তত গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হবে না।


আইনজীবী সঞ্জয় হেগড়েও শুধুমাত্র EVM-এর উপর ভরসা করা অনুচিত বলে মন্তব্য করেন আদালতে। তিনি জানান, ভোটগণনা প্রক্রিয়াকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে হলে পৃথক গণনা প্রক্রিয়া চালু করা উচিত। এই প্রসঙ্গে কেরলের মক পোলের ফলাফলের প্রসঙ্গ আদালতে তোলেন প্রশান্ত। তিনি জানান, মক পোলে দেখা গিয়েছে, বিজেপি-র সপক্ষে বাড়তি ভোট পড়েছে। সেই নিয়ে সরকারি আইনজীবী মণিন্দরের কাছে জবাবও চায় আদালত।