রক্তপাত শুরু হয়েছিল প্রথম দফাতেই। প্রাণ গেল চতুর্থ দফায়। মুর্শিদাবাদের ডোমকলে বুথের সামনে, নৃশংসভাবে খুন করা হল সিপিএম কর্মী তহিদুল ইসলামকে। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে।
ঘটনাস্থল ডোমকল বিধানসভা কেন্দ্রের জিতপুরের নতুনপাড়া প্রাইমারি স্কুলের বুথ। কিছু একটা যে ঘটতে চলেছে, চারপাশে বারুদের গন্ধে, আগে থেকেই বোধহয় তা আঁচ করতে পেরেছিল এলাকাবাসী। হঠাৎই হইচই! ছুটতে শুরু করেন মহিলা-বৃদ্ধরা। আতঙ্কের জেরে গলা দিয়ে আওয়াজ বেরোচ্ছে না। কে যেন বললেন, ওদিকে কে যেন খুন হয়ে গিয়েছে।
সিপিএমের দাবি, তাঁদের কর্মী তহিদুল ইসলামকে টেনে-হিঁচড়ে তুলে নিয়ে যায় তৃণমূলের লোকেরা। তারপর তাঁকে খুন করা হয়। যেখানে পড়েছিল তহিদুলে দেহ, তার কাছেই উদ্ধার হয় শিশি বোমা। পাতায় রক্তের দাগ লেগেছিল।
একদিকে যখন মাটিতে পড়ে সিপিএম কর্মী তহিদুল ইসলামের রক্তাক্ত নিথর দেহ, অন্যদিকে তখন ঘটনাস্থল থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা দাপাচ্ছে দুষ্কৃতীরা! মুড়ি মুড়কির মতো পড়ছে বোমা! কেঁপে উঠছে এলাকা! একজনের প্রাণ কেড়েও, তখনও বেপরোয়া বন্দুকের নল।
এজন্যই কি ঢাকঢোল পিটিয়ে গণতন্ত্রের উৎসব? কোথায় কেন্দ্রীয় বাহিনী? কোথায় পুলিশ?
দিনভর ডোমকলে দুষ্কৃতী তাণ্ডব। রক্ত। নিথর প্রাণ! বোমা-গুলিতে জখম হন বেশ কয়েকজন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবার দাবি, খুনের সঙ্গে ভোটেরই না কি কোনও সম্পর্ক নেই! মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সভাপতি মান্নান হোসেনের ছেলে, ডোমকলের তৃণমূল প্রার্থী সৌমিক হোসেনের অবশ্য দাবি, সিপিএম-কংগ্রেস অন্তর্কলহের জেরে এই ঘটনা।
বিরোধীদের পাল্টা দাবি, ডোমকলের এই তাণ্ডব তৃণমূলের পরিকল্পিত। কারণ, এখান থেকে ৫ বার জিতেছেন বাম প্রার্থী আনিসুর রহমান। গত লোকসভা ভোটের নিরিখে ডোমকল কেন্দ্রে কংগ্রেস পেয়েছিল ৪৯ শতাংশ ভোট, বামেদের ঝুলিতে পড়েছিল ৩১ শতাংশ ভোট এবং তৃণমূল পেয়েছিল মাত্র ১৫ শতাংশ। বিরোধীদের দাবি, মুর্শিদাবাদে দাঁত ফোটাতে না পেরেই, শাসকের দাঁত নখ বেরিয়ে পড়ল।