নিশ্চিন্দা, ভাস্কর ঘোষ : 'দীপ্সিতা ধরই (Dipsita Dhar) এবার জিতবেন।' ঘর থেকে জোর গলায় বলে ফেলেছিলেন। পাশাপাশি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Kalyan Banerjee) মন্তব্যের প্রতিবাদ জানানোয় আক্রান্ত হলেন প্রৌঢ় ও তাঁর স্ত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে নিশ্চিন্দা থানার দুর্গাপুর সমবায়পল্লী এলাকায়। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠেছে। ১০-১২ জন মিলে হামলা চালায়। পাশাপাশি দম্পতির অস্থায়ী দোকান ভেঙে তছনছ করে দেওয়া হয়। অভিযোগ, প্রৌঢ়কে ফেলে মারা হয়। তাঁর চোখের নীচে রক্ত জমাট বেঁধে গেছে। তাঁকে বাঁচাতে গেলে স্ত্রীর বুকেও ঘুষি মারা হয়। আক্রান্তদের নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসার জন্য। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁদের ফের পুলিশই পৌঁছে দেয়। বিষয়টি নিয়ে রাতেই সরব হয়েছেন বাম প্রার্থী দীপ্সিতা ধর। ভিডিও বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে হবে। না হলে তাঁরা বড়সড় আন্দোলনে নামবেন।


কী ঘটনা ?


স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল সন্ধেয় দুর্গাপুর অভয়নগর ১ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের উল্টোদিকে একটি খালি জমিতে জনসভা ছিল শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। জনসভায় বক্তব্য রাখার সময় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কিছু মন্তব্য করেন। সেই সময় পাশের বাড়ির এক বাসিন্দা প্রতিবাদ জানান। এরপর কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় চলে গেলে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা ওই বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। বাড়ির মালিক বাবুল ওরফে কৌশিক দত্তকে চড়, লাথি ও ঘুষি মারার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তা-ই নয়, শাসক দলের দুষ্কৃতীরা বাড়ি লাগোয়া টিনের ছাউনির নীচে কৌশিকবাবুর একটি অস্থায়ী দোকানেও ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। পরিবারটির একমাত্র সম্বল ওই দোকান। টেবিলে চা, বিস্কুট, সিগারেট, ডিম সাজিয়ে বিক্রি করে যা সামান্য আয় হয় তা থেকেই সংসার চালান দম্পতি। সেই দোকানটি ভেঙে তছনছ করা হয়েছে। মালপত্র ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে।


পরে ওই পঞ্চায়েতের প্রধান সোনালি সমাদ্দার এসে হামলাকারীদের সরিয়ে দেন। পরিবারটিকে আশ্বস্ত করেছেন বলে তিনি দাবি করেন। হামলার ঘটনা পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন প্রধান। বরং তাঁর পাল্টা দাবি, মদ্যপ অবস্থায় কৌশিকবাবু অশ্লীল ভাষায় যেভাবে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলকে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ করেছেন তাতে আরও বড় ঘটনা ঘটে যেতে পারত। তাঁরা ছিলেন বলেই তেমন কিছু ঘটেনি। 


খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে নিশ্চিন্দা থানার পুলিশ। আক্রান্তদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসার জন্য। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁদের ফের পুলিশই পৌঁছে দেয়। 


এই এলাকায় গত পঞ্চায়েত ভোটের দিন ও গণনার দিন ব্যাপক সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছিল শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে। নির্বাচনের দিন ছাপ্পার পরেও গণনাকেন্দ্র থেকে পুলিশের উপস্থিতিতে বিরোধী দলের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর ব্যাপক সন্ত্রাস চালিয়ে সব আসনের ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসার অভিযোগে সরব হয়েছিল বিরোধীরা। ফের লোকসভা ভোটেও সন্ত্রাসের পরিকল্পনা করছে শাসক দল, তেমনই অভিযোগ উঠেছে৷