সমীরণ পাল: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর অবশেষে মানভঞ্জন হল মিনাখাঁর বিধায়ক ঊষারানি মণ্ডলের। অভিষেক ব্যানার্জি ডেকে পাঠিয়েছিলেন তাঁকে ও তাঁর স্বামীকে। আলোচনার পর তাঁর মানভঞ্জন হয়েছে বলে জানান ঊষারানি। মনোমালিন্য দূর করে প্রচারও শুরু করে দিয়েছেন বিধায়ক ও তাঁর স্বামী। মঙ্গলবার হাড়োয়ার ব্রাহ্মণচক সহ বিভিন্ন এলাকায় কয়েকশো কর্মীকে নিয়ে প্রচার করেন।


প্রেক্ষাপট-


শনিবার ষষ্ঠ দফার ভোট চলাকালীন সপ্তম তথা শেষ দফার ভোটের প্রচারে বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থীর প্রচারে হাড়োয়ায় গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলামের নির্বাচনী প্রচার সভায় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব উপস্থিত থাকলেও, গরহাজির ছিলেন মিনাখাঁর তৃণমূল বিধায়ক ঊষারানি মণ্ডল। দলীয় প্রার্থীর প্রচারসভায় দলেরই বিধায়কের অনুপস্থিতিতে রুষ্ট হন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তৃণমূল বিধায়ক ঊষারানি মণ্ডল এবং তাঁর স্বামী মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে বিজেপি-যোগের অভিযোগ তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'হাড়োয়া এবং এই মিনাখাঁয় মনে রাখবেন দল আসল, ব্যক্তি আসল নয়। তৃণমূল কংগ্রেসের MLA থাকবেন আর মিটিংয়ে আসবেন না, মনে রাখবেন তাঁর সাথে দলের কোনও সম্পর্ক থাকবে না। আমি আজই বলে গেলাম, আপনাকে নিয়ে দল চলবে না।'


বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মিনাখাঁ বিধানসভা কেন্দ্র। ২০১১ সাল থেকে পরপর তিনবার উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁ কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হয়ে বিধায়ক নির্বাচিত হন ঊষারানি মণ্ডল। জয়ের হ্যাটট্রিক করা সেই বিধায়কই পড়েন তৃণমূলনেত্রীর রোষে। এনিয়ে পরে প্রতিক্রিয়া দেন তাঁর স্বামী মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল। তিনি বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রীকে ভুল বোঝানো হয়েছে। এই ভুল বুঝিয়েছেন জেলা নেতৃত্ব থেকে শুরু করে প্রার্থী হাজী নুরুল ইসলাম। পাশাপাশি হাড়োয়া পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি ও তৃণমূলের যুব সভাপতি আবদুল খালেক মোল্লা।'


আবদুল খালেক মোল্লাকে এলাকার 'ডন, তোলাবাজ' বলে তিনি কটাক্ষ করেন। বলেন, 'আবদুল খালেক মোল্লা ও ব্লক সভাপতি ফরিদ জমাদার দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে হেনস্থা করে আসছেন। বসিরহাটের সংগ্রামপুরে হাজী নুরুলের কর্মিসভায় আবদুল খালেক মোল্লা বিধায়ক ঊষারানি মণ্ডলকে গালাগালি করেন। তখনও মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চে সুজিত বসু থেকে শুরু করে জেলা নেতৃত্বরা কোনও প্রতিবাদ করেনি। আমার আত্মসম্মান রয়েছে। সেই কারণে মুখ্যমন্ত্রী জনসভায় উপস্থিত হতে পারিনি। একাধিকবার জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছি, কর্ণপাত করেননি। তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে চাই না। তৃণমূল কংগ্রেসকে ভালবাসি, ১৯৯৮ সাল থেকে দল করি। তাই দল যদি আমাকে মেনে না নেয় একজন পার্টির কর্মী হিসেবে কাজ করব এবং নিজের কর্মজীবন নিয়ে থাকব।' এরপর অভিষেকের সঙ্গে বৈঠক এবং সমস্যার সমাধান।