পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: চৈত্রর শেষেই দাবদাহ পরিস্থিতি। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ায় তাপমাত্রা ছুঁয়েছে প্রায় ৪০ ডিগ্রি। কাঠফাঁটা রোদ, হাঁসফাঁস গরমে নাজেহাল পরিস্থিতি। এদিকে ভোটের উত্তাপও তো কম নয়। বৃহস্পতিবার সে উত্তাপ টের পাওয়া গেল সুজাতা মণ্ডল এবং সৌমিত্র রায়ের প্রচার ও বাগযুদ্ধে।
এদিন, ঢাক বাজিয়ে শিবের মন্দিরে পুজো দিয়ে হাতে ত্রিশূল ধরে বিষ্ণুপুরে অসুর বধের শপথ নিলেন বিষ্ণুপুর লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল। পরে আবার নকুল দানা গুড় বাতাসা বিলি করে বীরভূমের অনুব্রতর পথ ধরেই প্রচার করেন সুজাতা৷ বৃহঃস্পতিবার সকালে বিষ্ণুপুর লোকসভার এক্তেশ্বর শিবের মন্দিরে পুজো দিতে আসেন তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল। দলের নেতা কর্মীদের নিয়ে এক্তেশ্বর মন্দিরে প্রাঙ্গনে কাঁধে ঢাক ঝুলিয়ে ঢাকও বাজালেন। তারপরে বাবা এক্তেশ্বর শিবের মন্দিরে পুজো দিতে দিতে হাতে ত্রিশূল নিয়ে বিষ্ণুপুরে অসুর বধের শপথ নিলেন তিনি। পরে মন্দির থেকে বেরিয়ে নকুল দানা গুড় বাতাসা নিজে হাতে বিলি করেন স্থানীয় মানুষ থেকে এলাকার মানুষকে। নাম না নিয়ে বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ-কে 'অসুর', 'নরাধম'ও বলেন তিনি।
এদিন সুজাতা মণ্ডল বলেন, 'বিষ্ণুপুরের সুপ্রাচীন মন্দির বাবা এক্তেশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে পুজো দিয়ে প্রচার শুরু করলাম। গতবারও এসেছিলাম বাবার কাছে, আশীর্বাদও পেয়েছিলাম। কিন্তু সেটা অপাত্রে দান হয়েছিল। এবার বাবার কাছে এটাই প্রার্থনা বাবা বিষ্ণুপুর লোকসভাকে একটা নরাধমের হাত থেকে বাঁচাও। আমার নেত্রী মহিষাসুরমর্দিনী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে লড়াই তাকে জিতিয়ে দিও। এবার এই লোকসভা কেন্দ্রে জেতাও তৃণমূলকে। বিজেপি নামক অসুরকে বধ করো।'
তিনি এও বলেন, 'মহিষাসুরমর্দিনী হয়ে অসুরকে বধ করেছিলেন। বিষ্ণুপুর লোকসভার বিজেপি প্রার্থী তিনি এই কেন্দ্রের অসুর ছাড়া আর কিছুই নন। গত দশ বছর বঞ্চনা করেছেন কোনও উন্নয়ন করেননি। তাই প্রভুর কাছে প্রার্থনা তৃণমূল জয়ী হোক, অসুর বধ হোক।'
আরও পড়ুন, 'যার বিয়ে সে নিজেই পুরোহিত', বিজেপি-নির্বাচন কমিশন নিয়ে চরম অভিযোগ মমতার
এদিন নকুলদানাও বিলি করেন সুজাতা। প্রসঙ্গত, বঙ্গ রাজনীতিতে নকুলদানা বিলির চল প্রথম শুরু করেছিলেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। সেই পথেই কি হাঁটলেন সুজাতা মণ্ডল? সে প্রসঙ্গে তৃণমূল প্রার্থী বলেন, 'নকুলদানা তো ঠাকুরের প্রসাদ। সকলেই পছন্দ করেন। আর প্রসাদ বিলি করলে তার আনন্দ অনেকটাই বেড়ে যায়। এই গরমে নকুলদানা খাওয়া তো ভাল। শরীর ঠান্ডা থাকে।'
এদিকে, সুজাতার এই মন্তব্য নিয়ে বিষ্ণুপুরের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ বলেন, 'আমাকে তো আগেই বধ করে দিয়েছেন। দয়া করে বিষ্ণুপুর লোকসভার মানুষকে বধ করবেন না আর। উনি ভাল থাকুন, সুস্থ মতো এগিয়ে চলুন। জনগনকে নিয়ে ছিনিমিনি না করাই ভাল। মানুষ সে জায়গা নাও দিতে পারে'।
এদিন, সকাল থেকেই কোতুলপুর ব্লকের বিভিন্ন প্রান্তে ভোট প্রচার করেন সৌমিত্র খাঁ। রোদের হাত থেকে একটু স্বস্তি পেতে কখনও তাঁকে দেখা যায় ডাবের জল খেতে। কখনও কর্মীর সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে আইসক্রিমও খান। আবার কখনো স্থানীয় অনুষ্ঠানে খিচুড়ি রান্না করতেও দেখা যায়।