নয়াদিল্লি: জোট নিয়ে জট কাটছে না কিছুতেই। তার মধ্যেই অস্বস্তি আরও বাড়ল কংগ্রেসের। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারেন দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। যাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করে নির্বাচনে ডঙ্কা বাজানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিজেপি-বিরোধী শিবিরের নেতৃত্ব, সেই খড়্গে এবছর প্রতিদ্বন্দ্বিতা না-ও করতে পারেন বলে খবর, যা নিয়ে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে কংগ্রেসের অন্দরে। (Mallikarjun Kharge)


লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি-বিরোধী I.N.D.I.A শিবির যখন কার্যতই ছত্রখান, সেই সময় সেতুবন্ধনকারী হিসেবে উঠে এসেছিলেন খড়্গে। কংগ্রেসের আধিপত্য মানতে নারাজ অন্য বিরোধী দলগুলি খড়্গের প্রতি নরম অবস্থান নেয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, এমকে স্ট্যালিনরা তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার পক্ষেও সওয়াল করেন। (Lok Sabha Elections 2024)


কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের কাছাকাছি পৌঁছে, সেই খড়্গের প্রার্থী হওয়া নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে। খড়্গে নিজেই বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছেন বলে খবর। সেনাপতি নিজেই যদি ময়দানে না নামেন, সেক্ষেত্রে যুদ্ধজয়ের আগেই মনোবল ভেঙে যেতে পারে বলে মত কংগ্রে কর্মী-সমর্থকদের একাংশের। কিন্তু খড়্গে-ঘনিষ্ঠদের দাবি, যথেষ্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। নিজের প্রচারে জোর দিতে গেলে, দলের সংগঠনের প্রতি অবহেলা করা হবে, বৃহত্তর লক্ষ্য থেকে পদস্খলন হবে। তাই প্রার্থী হতে তেমন আগ্রহ পাচ্ছেন না খড়্গে।


আরও পড়ুন: Electoral Bond:নির্বাচনী বন্ড নিয়ে কড়া অবস্থান নিল সুপ্রিম কোর্ট।ABP Ananda LIVE


কর্নাটকের গুলবার্গ আসনে খড়্গে প্রার্থী করা হতে পারে বলে এতদিন খবর ছিল। গত সপ্তাহে দলের বৈঠকেও খড়্গের নামে সর্বসম্মতিতে সিলমোহর পড়ে বলে জানা যায়। কিন্তু এখন জানা যাচ্ছে, ভোটে দাঁড়ানোর ইচ্ছে নেই খড়্গের। পরিবর্তে ওই আসনে জামাতা রাধাকৃষ্ণণ দোদ্দামণিকে প্রার্থী হিসেবে সুপারিশ করতে পারেন। 


গুলবার্গ থেকে আগে দু'বার জয়ী হয়েছেন খড়্গে। কিন্তু ২০১৯ সালে ওই আসনে পরাজিত হন তিনি, যার পর রাজ্য়সভায় যান। রাজ্যসভায় এখনও চার বছর কার্যকালের মেয়াদ রয়েছে। পাশাপাশি, কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্বও সামলে চলেছেন, বিরোধী জোটের কৌশল রচনাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় তিনি। কিন্তু একসঙ্গে এতকিছুতে মাথা ঘামাতে খড়্গে নারাজ বলে খবর। কংগ্রেস সূত্রে খবর, নিজেকে একটি মাত্র কেন্দ্রে বেঁধে রাখতে চান না খড়্গে। বরং গোটা দেশে দলের সংগঠন এবং বিরোধী জোটের হয়ে কাজ করতে চান।  


সাম্প্রতিক কালে কংগ্রেস সভাপতির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার নজির তেমন নেই। সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধীও সভাপতি থাকাকালীন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। রাহুল ২০১৯ সালে অমেঠীতে হেরে গেলেও, জয়ী হন ওয়েনাডে। তাই খড়্গের সিদ্ধান্ত ব্যতিক্রমী। তবে খড়্গে একাই নন, বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডাও এবছর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। তবে খড়্গে যদি এমন সিদ্ধান্ত নেন, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই বলে মনে করছেন তাঁর অনুগামীরা। তাঁদের যুক্তি, নিজের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার লক্ষ্য নেই খড়্গের। যে কারণে বিরোধীরা তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার সময়ও হামলে পড়েননি তিনি। ফলাফলের জন্য পরিশ্রম করা উচিত বলে পাল্টা পরামর্শন দিয়েছিলেন। নিজের প্রচারে ব্যস্ত থাকলে অনেক কিছুতে নজর দেওয়া সম্ভব নয়। তাই বিষয়টি নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছেন তিনি।