আশাবুল হোসেন, রুমা পাল ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়: পঞ্চায়েত নির্বাচনকে (Panchayat Elections 2023) ঘিরে বাংলায় রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত চরমে পৌঁছেছে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে পটনায় অনুষ্ঠিত হওয়া বিজেপি বিরোধী শিবিরের বৈঠকেও (Oppositions Meet) সেই সংঘাত নিয়ে গেলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পাটলিপুত্রে বিরোধী ঐক্যের মঞ্চ থেকেও রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে (CV Ananda Bose) নিশানা করতে ছাড়লেন না তিনি। বললেন, "আমাদের ওদিকে পুরো রাজভবনকে বিকল্প সরকার বানিয়ে দিয়েছে। আমাদের রক্ষাকারী সরকার দরকার।" এ নিয়ে পাল্টা সুর চড়িয়েছেন রাজ্যপাল।
শুক্রবার পটনায় বিরোধীদের বৈঠকের দিকেই গোটা দেশের নজর ছিল দিনভর। সেই আবহেই বাংলায় রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে সরব হন মমতা। বলেন, "বিজেপি-র স্বৈরাচারী সরকার যা ইচ্ছে তাই করছে। আমাদের ওদিকে রাজভবনকে বিকল্প সরকার করে দিয়েছে।" এর পাল্টা জবাব ছুড়ে দেন রাজ্যপাল বোসও। তাঁর কথায়, "যেটা আমাদের দরকার...সেটা সমান্তরাল সরকার নয়, রক্ষাকারী সরকার।"
পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চরমে উঠেছে রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাত। পটনাতেও রাজ্য়পালকে নিশানা করতে ছাড়লেন না মমতা। বাংলার একাধিক ঘটনাকে তুলে ধরে আক্রমণ করলেন কেন্দ্রের মোদি সরকারকে। পাশাপাশি নিয়োগ দুর্নীতি থেকে গরুপাচার, কয়লাপাচার কাণ্ড, একের পর এক হেভিওয়েট নেতার গ্রেফতারি থেকে লাগাতার তলবে কেন্দ্রীয় এজেন্সির ভূমিকা নিয়ে সরব হন তৃণমূলনেত্রী।
আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: 'পাটনায় চোরেদের সিন্ডিকেটের বৈঠক', মন্তব্য শুভেন্দুর
শুক্রবার পটনায় মমতা বলেন, "কেউ কিছু বললেই ইডি-সিবিআই লাগিয়ে দেয়। চালাকি করে আইনজীবীদের কোর্টে পাঠিয়ে কেস করে সিবিআই-ইডি দেয়। পঞ্চায়েতেও সিবিআই। আমাদের ওদিকে রাজভবনকে সমান্তরাল সরকার করে দিয়েছে।" যদিও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বিরোধীদের ওই বৈঠক নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দেন। তাঁর বক্তব্য, "পাটনায় চোরেদের সিন্ডিকেটের বৈঠক। দুর্নীতি থেকে বাঁচতে বিরোধী দলগুলির বৈঠক।"
বঙ্গ রাজনীতির স্বার্থে বিজেপি-কে মমতা আক্রমণ করলেন ঠিকই, কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের সময় মোদি বিরোধিতার প্রশ্নে কি তাঁকে বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও সমঝোতা করতে দেখা যাবে, না কি বিরোধী জোট দানাই বাধবে না? বাম-কংগ্রেস যেভাবে লাগাতার মোদি-মমতা সেটিংয়ের অভিযোগ তোলে, তা কি তারা বন্ধ করবে? আর শেষ অবধি লোকসভায় মোদি বিরোধী জোট তৈরি না হলে তার জন্য় দায়ী কে থাকবে? তা নিয়ে তখন রাজনৈতিক মহলে কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে।