উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: এবিপি সি ভোটার সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে এবারের লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে ফের শূন্য হাতে ফিরতে হতে পারে বামেদের। শুধু সি-ভোটারই নয়, আরও একাধিক সমীক্ষায় যা ফল এসেছে তাতে বাংলা থেকে বামেরা আসন পাবে না বলেই দেখানো হয়েছে। যদিও বামদের জন্য আশার আলো দেখাচ্ছে অন্য একটি সমীক্ষা। ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইন্সটিটিউটের কয়েক জন অধ্য়াপকের করা সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে বেশ কয়েকটি আসনে জিততে পারে বামেরা। ভাল লড়াই দিতে পারে বেশ কয়েকটি আসনে (Lok Sabha Election 2024)।
শূন্য় ভাঁড়ারের খরা কাটিয়ে এবারের ভোটে খাতা খুলতে পারবে বামেরা (Lok Sabha Poll 2024)? বঙ্গের রাজনৈতিক মহলে এই চর্চার মধ্য়েই, একটি সমীক্ষায় দাবি করা হল, লোকসভা ভোটে সিপিএমের ঝুলিতে যেতে পারে তিনটি আসন।
কোন কোন আসন:
সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে দমদম, শ্রীরামপুর ও কৃষ্ণনগর লোকসভা আসনে জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে সিপিএমের।
কোথায় ভাল লড়াই:
কলকাতা দক্ষিণ, যাদবপুর ও হাওড়া লোকসভা আসনেও সিপিএম লড়াইয়ে আছে, এমনই দাবি করা হয়েছে সমীক্ষায়।
আইএসআইয়ের কয়েক জন অধ্য়াপক মিলে জনমত সমীক্ষা বলে একটি সমীক্ষা সংস্থা তৈরি করে তাঁরা তিন মাস ধরে সমীক্ষা চালিয়েছেন ছয়টি লোকসভা কেন্দ্রে। সেখানেই এমন তথ্য উঠে এসেছে বলে দাবি। সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, দমদম, শ্রীরামপুর ও কৃষ্ণনগর লোকসভা আসনে জয়ী হতে পারে সিপিএম। প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্রে বিধানসভা ধরে ধরে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে সমীক্ষা রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।
দমদম লোকসভা কেন্দ্রের ৬১৭ জন ভোটারের সঙ্গে কথা বলেছেন সমীক্ষকরা। মোট পুরুষ ভোটারের ৩৩ শতাংশ এই কেন্দ্রে সিপিএমকে চেয়েছেন। ২২ শতাংশ তৃণমূলকে চেয়েছেন। বিজেপিকে চেয়েছেন ১৮ শতাংশ। মহিলা ভোটারের ৪৩ শতাংশ সিপিএমকে চেয়েছেন। তৃণমূলকে চেয়েছেন ২৫ শতাংশ। ১৪ শতাংশ মহিলা ভোটার বিজেপিকে চেয়েছেন।
শ্রীরামপুর কেন্দ্রে ১ হাজার ১৪৯ জন ভোটারকে নিয়ে সমীক্ষা করা হয়েছে। পুরুষ ভোটারের ৩৩ শতাংশ সিপিএমকে চেয়েছেন। ২০ শতাংশ ভোটার বিজেপিকে চেয়েছেন। তৃণমূলকে চেয়েছেন ২০ শতাংশ। মহিলা ভোটারের ৩০ শতাংশ সিপিএমকে চেয়েছেন। ২৪ শতাংশ ভোটার তৃণমূলকে চেয়েছেন। ১৩ শতাংশ বিজেপিকে চেয়েছেন।
কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের ৬২৩ জন ভোটারের মধ্য়ে সমীক্ষা চালানো হয়েছে। পুরুষ ভোটারের ৫০ শতাংশই এখানে সিপিএমকে চেয়েছেন। ১৮ শতাংশ ভোটার বিজেপিকে চেয়েছেন। ১২ শতাংশ ভোটার তৃণমূলকে চেয়েছেন। মহিলা ভোটারদের ৪১ শতাংশ সিপিএমকে চেয়েছেন। ১৫ শতাংশ বিজেপিকে চেয়েছেন। ৬ শতাংশ তৃণমূলকে চেয়েছেন।
সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, বাকি তিন লোকসভা কেন্দ্র কলকাতা দক্ষিণ, যাদবপুর ও হাওড়ায় সিপিএম লড়াইয়ে রয়েছে।
সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শমীক লাহিড়ি বলেন, 'নির্বাচনের মূল ইস্যু তিনটি। সংবিধান গণতন্ত্র থাকবে কিনা, মানুষের রুটি-রুজি, দ্রবমূল্য বৃদ্ধি। এর সঙ্গেই রয়েছে দুর্নীতি। এই ইস্যুতে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে তফাৎ নেই।'
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, 'বামেরা কোনও আসন জেতার জায়গায় নেই। দু-তিনটি আসনে তৃণমূলের থেকে অনেকটা পিছিয়ে দ্বিতীয় হওয়ার লড়াইয়ে তৃণমূলকে টেক্কা দিলেও দিতে পারে।'
কৃষ্ণনগরে গত পঞ্চায়েত ভোটে প্রায় ২৮-৩০ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বামেরা। দমদমে পঞ্চায়েত এলাকা সামান্য় হলেও সেখানে ফল ভাল হয় বামেদের। সিএএ কার্যকর হওয়া ও বামেদের প্রার্থী ঘোষণার আগে চালানো এই সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, দুর্নীতি ও মূল্য়বৃদ্ধি এবারের লোকসভা ভোটে প্রধান দুই ইস্য়ু। রাম মন্দির বা সাম্প্রদায়িকতা ভোটে ইস্য়ু নয়।
আরও পড়ুন: বাড়ি বন্ধক রেখে টাকা এনেছিলেন বাবা! সপ্তসিন্ধু জয়ের পথে আরও একধাপ এগোলেন সায়নী