ঊজ্জ্বল মুখোপাধ্য়ায় ও সুকান্ত দাস, কলকাতা : 'একটা দল বলুক, যে দলে একটাও মস্তান নেই। যে দল বলতে পারবে, তাদের অফিসে গিয়ে দারোয়ানি করব।' শাসক দলের বিরুদ্ধে বেনজির সন্ত্রাসের অভিযোগের মধ্য়েই এমন সাফাই দিলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। গুন্ডা-সংস্কৃতি তো তৃণমূলেরই আমদানি বলে কটাক্ষ করেছেন সুজন চক্রবর্তী। 'আগে নিজের পার্টিটা দেখুন। অন্য় পার্টির কথা পরে ভাববেন', শোভনদেবকে নিশানা করে মন্তব্য দিলীপ ঘোষের। কৃষিমন্ত্রীকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি ISF বিধায়কও।


আত্মসমালোচনা ! দলের খুঁত ঢাকার চেষ্টা। সেই সঙ্গে বিরোধীদের দোষ খুঁজে বের করা। পঞ্চায়েত ভোটের আবহে লাগাতার সন্ত্রাস দেখছে বাংলা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কাঠগড়ায় শাসকদল। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের মন্ত্রী তথা খড়দার তৃণমূল বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্য়ায়ের গলায় সাফাইয়ের সুর। তিনি বলছেন, 'সব দলের মধ্যেই এই ধরনের মানুষ আছে। সব দলের এই অবস্থা। তবে শাসন ক্ষমতায় যারা থাকবে, তাদের দলে এই ধরনের মানুষ বেশি হবে। একটা দল বলুক, আমার দলে একটাও মস্তান নেই। সবাই ভাল। মাইকে বলুন সেটা। যে দল বলতে পারবে আমি তাদের দলের অফিস এ গিয়ে দারোয়ানি করবো।'

এবারই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়রে গলায় শোনা গেছে আত্মসমালোচনা ও হুঁশিয়ারির সুর !কখনও নিয়োগ দুর্নীতি থেকে গরু পাচার মামলা প্রসঙ্গে। গত বছর ডিসেম্বর নাগাদ বক্তব্য রাখার সময় তিনি মন্তব্য করেছিলেন,
'লোকে বলছে, আপনাদের দলে চোর আছে। আছে তো ! কিন্তু, আমি তো সেই দল খুঁজছি, যে দলে একটাও চোর নেই। আমি কিন্তু তাদের পার্টি অফিস ঝাঁট দেব, যদি একটা দল এখানে দাঁড়িয়ে বলে দিতে পারে।' তিনি আরও মন্তব্য করেছিলেন, 'যদি একটা রাজনৈতিক দল মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলে দিতে পারে, আমার দলে খারাপ লোক নেই, আমার দলে চোর-জোচ্চোর নেই, তাহলে যে দল বলবে, সেই দলের আমি চাকরবৃত্তি করবার জন্য তৈরি আছি।'

এ প্রসঙ্গে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলছেন, 'এই কালচার আমদানি করেছে তৃণমূল।গুন্ডাবাহিনী তৃণমূলই তৈরি করেছে।' অন্যদিকে, ভাঙড়ের ISF বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকির মন্তব্য, 'আমাদের দারোয়ানের দরকার নেই। আমরা আমাদের দল সামলাতে পারব। আপনি নিজেদেরটা দেখুন।' কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, 'উনি যে পার্টিতে সেটা পুরো গুন্ডাদের পার্টি। অন্য় পার্টির কথা ছেড়ে দিন। আগে নিজের পার্টি দেখুন। ওঁরা বলুক, আমাদের পার্টিতে গুন্ডা নেব না। নিজের ঘর ঠিক করুন আগে।'

কিন্তু প্রশ্ন হল, শাসক দলের নেতারা সচেতন হলেও, তারপরও কেন এত সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটছে ?