শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা: 'যদি কথায় আর কাজে মিল না থাকে, তাহলে আর আপনাদের সামনে ২৪-এ আসব না', পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Elections 2023) আগে কল্যাণীর সংখ্য়ালঘু অধ্যুষিত ঘোড়াগাছায় গিয়ে এমনই বার্তা দিলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। বললেন, "আমাদের একবার সুযোগ দিন।" বিরোধী দলনেতাকে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছে তৃণমূল (TMC)। 


সংখ্যালঘু ভোট বঙ্গ রাজনীতিতে অন্যতম বড় ফ্যাক্টর। ২০১১ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে কার্যত একচেটিয়া আধিপত্য তৃণমূলের। পঞ্চায়েত ভোটের আগে সেই ভোট নিজেদের দিকে টানতে এবার তৎপর হল বিজেপি (BJP)। শনিবার নদিয়ার কল্যাণীর ঘোড়াগাছায় ভোট প্রচারে যান শুভেন্দু অধিকারী।


এই অঞ্চলের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। সেখানে গিয়ে তৃণমূলকে নিশানা করে সংখ্যালঘুদের মন জয়ে ঢালাও প্রতিশ্রুতি দেন শুভেন্দু অধিকারী। বলেন, "এখন সংখ্যালঘুরা বুঝছে, চোর তৃণমূল তাদের এগিয়ে যাবার বিষয় নিয়ে ভাবে না। আমাদের একবার সুযোগ দিন। আমরা মানুষের পঞ্চায়েত করব। ধর্ম-বর্ণ দেখে নয়। গ্রামসভা ডেকে আবাস দেব। সভায় বিজেপির পতাকাও রাখব না। যদি না কথায় কাজে মিল থাকে, তাহলে আর আপনাদের সামনে ২৪-এ আসব না।"


আরও পড়ুন: Panchayat Election 2023: কোচবিহারে ভোট প্রচারে গিয়ে ক্ষোভের মুখে বাবুল সুপ্রিয়


বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মুখে 'জয় শ্রীরাম' স্লোগান নিয়ে বার বার বিতর্ক বেধেছে। তার ব্য়াখ্য়াও দেন শুভেন্দু। বলেন, "জয় শ্রীরাম কেন বলেন? অনেকেই আপনারা প্রশ্ন করেন. জয় শ্রীরাম নিশ্চয়ই আমার আরাধ্য দেবতা রাম. কিন্তু রাম রাজ্য মানে কি? মাথায় ছাদ, পেটে ভাত। এটা সুশাসন।"

শনিবার মঞ্চে, বিজেপি-তে যোগ দেয় বেশকিছু সংখ্য়া লঘু পরিবার। পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু ভোট প্রায় ৩০ শতাংশ। পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, পশ্চিমবঙ্গের ২৯৪টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৬০ থেকে ৬৮টিতে ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে বাংলাভাষী মুসলিম সম্প্রদায়। আরও প্রায় ৩০টি আসনে আংশিকভাবে তাঁদের প্রভাব রয়েছে।


২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে এরাজ্যের ১৮টি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত আসনের ৪টি তৃণমূলের থেকে বিজেপি-র হাতে গিয়েছে।
এগুলি হল বালুরঘাট, কোচবিহার, বনগাঁ এবং রানাঘাট। রাজনৈতিক মহলের একাংশের প্রশ্ন, শুভেন্দু অধিকারীরাও কি বুঝতে পারছেন, সংখ্যালঘু ভোটে থাবা বসাতে না পারলে বাংলা দখলের স্বপ্ন অধরাই থাকবে?

এতদিন, নমাজ পাঠের সময় সিপিএম ও কংগ্রেসকে মাইক বন্ধ রাখতে দেখা যেত। এদিন ইঙ্গিতপূর্ণভাবে শুভেন্দু অধিকারীও নমাজ শুরু আগে সভা শেষ করে দেন।