কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে রাজ্য-রাজভবন তরজা চরমে (Panchayat Elections 2023 )। তার মধ্যেই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিন্হা (Rajiv Sinha)। কিন্তু তিনি ডেকে পাঠাননি, নিজে থেকেই দেখা করতে চেয়েছেন রাজীব, জানালেন খোদ রাজ্যপাল (CV Ananda Bose)। রাজীবের সঙ্গে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন।


রবিবার এ নিয়ে এবিপি আনন্দে মুখ খোলেন রাজ্যপাল। জানান তিনি ডেকে পাঠাননি, নিজেই দেখা করার সময় চেয়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। রাজ্যপাল বলেন, "রাজভবন রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে তলব করেনি। আমি কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা চেয়েছিলাম। আমি জানি, তিনি ভোটের কাজে ব্যস্ত আছেন। যখন সময় পাবেন, তখনই আসতে পারেন। ভোট সংক্রান্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করার আছে।"


রাজীব সিনহা নিজে সময় চেয়েছেন, তা নিয়ে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের বক্তব্য, "রাজ্যপাল রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। রাজীব সিন্হাও শপথ নিয়েছেন। তিনিও সাংবিধানিক পদে রয়েছেন। আগে ডেকেছিলেন রাজ্যপাল। নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত থাকায় যেতে পারেননি। তার পর প্রশ্ন ঠেলে দিতে রাজ্যপাল তাঁর জয়নিং লেটার ফেরত পাঠান। বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেন। এতদিনে শুভবুদ্ধির পরিচয় দিলেন রাজ্যপাল।"


আরও পড়ুন: Panchayat Election: কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দেখেই ফুল ছুড়লেন গ্রামবাসীরা, বাজল শঙ্খ


যদিও রাজ্যপালের শুভবুদ্ধির উদয় নয়, তৃণমূলের তাঁর কাছ থেকে শেখা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিজেপি নেতা রাহুল সিন্হা। তাঁর কথায়, "রাজ্য জুড়ে যে বোমাবাজি, আতঙ্কের পরিবেশের মধ্যে নির্বাচন চলছে, তা গণতন্ত্রের জন্য লজ্জার। হারানো জমি উদ্ধার করতে তৃণমূলই ভাড়া করা লোক দিয়ে বোমা বাঁধাচ্ছে। আর তাতে পুরোপুরি মদত রয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। রাজ্যপাল ডাকেননি, নিজে সময় চেয়েছেন রাজীব। এতে রাজ্যপালের নয়, তৃণমূলের শিক্ষা হওয়া উচিত। নিয়োগকর্তা ডাকলে যেতে হয়। রাজ্যপাল উদারতা দেখিয়েছেন, তাই যে কোনও সময় আসার জন্য দরজা খোলা রেখেছেন। তাঁর আন্তরিকতা বোঝার মতো বোধশক্তি তৃণমূলের নেই। ওদের উচিত পা ধরে রাজ্যপালের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া।"


পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মনোনয়ন এবং স্ক্রুটিনি পর্বে ভাঙড়, ক্যানিং-সহ রাজ্যের একাধিক জায়গা যখন উত্তপ্ত, বোমাবাজি, গুলি, অশান্তির খবর সামনে আসছে, প্রাণহানি ঘটছে, সেই সময় নিজে পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। তার পর গত শনিবার রাজ্যপাল রাজীবকে ডেকে পাঠান। কিন্তু ব্যস্ততার দরুণ যেতে পারেননি তিনি। তা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন রাজ্যপাল। স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে ভেবেই তিনি কমিশনকে নিয়োগ করেছিলেন, কিন্তু কমিশনের নিষ্ক্রিয়তায় মানুষ হতাশ বলে মন্তব্য করেন। তার ঠিক পরই রাজীবের জয়নিং রিপোর্ট নবান্নে ফেরত পাঠান রাজ্যপাল, যাতে রাজীবের পদে থআক নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। এদিন যদিও সুর নরম ছিল রাজ্যপালের।