কলকাতা: বিধানসভা নির্বাচনে তৃতীয় বার প্রত্যাবর্তনের পর তৃণমূলের সবচেয়ে বড় শহিদ-স্মরণ সভা। আর তার পরই নিয়োগ দুর্নীতির খাঁড়া নেমে এল দলের তৎকালীন দু'নম্বর মাথা, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপর। তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া টাকার পাহাড়, গয়নার বহর আজও চোখের সামনে ভেসে ওঠে সকলের। কার পর থেকে যত সময় গিয়েছে দলের বড়, মেজো, সেজো, ছোট, একের পর নেতা-নেত্রীর নাম উঠে এসেছে। কালীঘাট পর্যন্ত তদন্ত পৌঁছবে বলে ইতিমধ্যেই দাবি তুলতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। 


কিন্তু নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা, জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট এবং কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নও উঠছে সমান ভাবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে যে প্রশ্ন সবচেয়ে বেশি করে উঠে আসছে, তা হল, ED ও CBI-এর তদন্ত কি মাথা অবধি পৌঁছবে, না কি রাজনীতির খেলায় চিটফান্ড কেলেঙ্কারির মতোই ধামাচাপা পড়বে? সি-ভোটারের সমীক্ষায় তা নিয়ে মানুষের মতামত উঠে  এল। 


সি-ভোটারের সমীক্ষায় যে পরিসংখ্যান মিলেছে, তা হল, ভোটারদের ৫৩ শতাংশের ধারণা, চিটফান্ড কেলেঙ্কারির মতো ED এবং CBI-এর এই তদন্তও ধামাচাপা পড়ে যাবে। তবে এখনও পর্যন্ত তদন্তের গতিপ্রকৃতি দেখে ৩৪ শতাংশ ভোটারের মত, মাথারা ধরা পড়বে তদন্তে। ১৩ শতাংশ মানুষ এ নিয়ে কোনও মতামত জানাননি। 


নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ হোক বা কয়লা এবং গরুপাচার মামলায় লাগাতার ED-CBI তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এমনকি পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন সংক্রান্ত একটি মামলাতেও  ইডি-সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। পরে যদিও তা স্থগিত হয়ে যায়। ভূরি ভূরি মামলার তদন্ত কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে দিলেও, তাতে সুরাহা কতটাা হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে মানুষের মনে। 


শুধু সাধারণ মানুষই নন, তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে প্রশ্ন তোলে আদালতও। প্রাথমিক দুর্নীতির তদন্তে CBI-এর ভূমিকায় সম্প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে আলিপুর আদালত। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা অত্যন্ত 'ক্যজুয়াল' ভাব দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করে আদালত। CBI আদৌ তদন্ত করতে জানে কিনা, সেই প্রশ্নও তোলে আদালত। পার্থর বিরুদ্ধে তদন্তে আর কত সময় লাগবে, তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টেও প্রশ্নের মুখে পড়েন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। স্বাভাবিক ভাবেই তদন্তে আদৌ দুর্নীতির কিনারা হবে কিনা, মাথাদের নাম সামনে আসবে কিনা, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।