ভাস্কর মুখোপাধ্যায় ও এরশাদ আলম, বীরভূম: কেষ্টহীন বীরভূমের (Birbhum News) বাবুইজোড় পঞ্চায়েতে তৃণমূলের (TMC) প্রতীকে লড়ে জিতেছেন (Panchayat Elections Result 2023) লিপিকা মণ্ডল (Lipika Mondal)। কিন্তু তাঁর স্বামী, শিবঠাকুর মণ্ডলই (Shivthakur Mondal) যে একসময়ে বীরভূমে তৃণমূলের অবিসংবাদী নেতা অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করেছিলেন, সে কথা জয়ের মুহূর্তেও কি ভুলতে পারছেন লিপিকা? স্পষ্ট বলে দিলেন, 'দলটা অনুব্রত তৈরি করেছিলেন। তাঁর প্রতি ভালোবাসা তো থাকবেই। আমি, আমার স্বামীকে বলেছিলাম, দলবিরোধী কাজ করো না। উনি শোনেননি।'


কী বলছেন মণ্ডল দম্পতি?
পঞ্চায়েত নির্বাচনে স্ত্রীর জয়ের খবর পাওয়ার পরও শিবঠাকুর মণ্ডল নিজের পুরনো অবস্থান থেকে একচুলও সরছেন না। শিবঠাকুরের দাবি, বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের দু'বারে প্রধান ছিলেন তিনি। প্রথম থেকেই তৃণমূল করেন। কিন্তু কেষ্ট মণ্ডলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় দল তাঁকে টিকিট দেয়নি। টিকিট পেয়েছেন তাঁর স্ত্রী লিপিকা। তবে স্ত্রী যে তাঁকে অনুব্রতর বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে বারণ করেছিলেন সে কথা মেনে নেন শিবঠাকুর। বলেন, 'কেষ্টদাকে স্ত্রী ভালোবাসেন। আমাকে বলেছিল, তুমি কেন কেস করতে গেলে? জানলে কেস করতে দিতাম না।' প্রসঙ্গত, শিবঠাকুর সে সময় যে অভিযোগ করেছিলেন তা যে আসলে অনুব্রত মণ্ডলের দিল্লি যাত্রা আটকাতেই করা হয়েছিল সে ব্যাপারে রীতিমতো নিশ্চিত ছিল বিরোধী শিবির। যেদিন অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ায় জন্য ইডির আবেদনে ছাড়পত্র দেয় দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত, সেদিন দুপুরেই, অনুব্রতর বিরুদ্ধে একবছর আগে, তাঁকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তৃণমূল কর্মী শিবঠাকুর মণ্ডল। সঙ্গে সঙ্গে মামলা রুজু করে পরের দিন সেই মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। তবে তিহাড়যাত্রা শেষ পর্যন্ত এড়াতে পারেননি বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি।  


কী ছবি বীরভূমের?
ঘটনা হল, জেলা তৃণমূল সভাপতির পদে থাকলেও এখনও জেলবন্দি রয়েছেন অনুব্রত। এমন পরিস্থিতি পঞ্চায়েত ভোটে বীরভূমে জোড়াফুল শিবির আদৌ তাদের দাপট ধরে রাখতে পারবে কিনা, সে দিকে নজর ছিল রাজনৈতিক মহলের। আপাতত যা খবর, তাতে দেখা যায় নলহাটিতে জয়ী হয়েছেন এনআইএ-র হাতে গ্রেফতার তৃণমূল প্রার্থী। বিস্ফোরক রাখার অভিযোগে এনআইএ-র হাতে গ্রেফতার হন বীরভূমের নলহাটির তৃণমূল প্রার্থী মনোজ ঘোষ। তিনবার নোটিসে হাজিরা না দেওয়ার বিষয়টি আগেই আদালতে জানিয়েছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। গতকাল নলহাটি থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয় তৃণমূল নেতাকে। সোমবার নলহাটি থানায় পৌঁছয় এনআইএ-র সাতজনের একটি তদন্তকারী দল। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সেখানে ডেকে পাঠানো হয় তৃণমূল নেতাকে। সূত্রের খবর, প্রায় চার ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর বক্তব্যে অসঙ্গতি মেলায় তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থীকে গ্রেফতার করে এনআইএ। তবে সার্বিক ছবিটা গণনা পুরো শেষ হলেই স্পষ্ট হবে।


আরও পড়ুন:অশোকনগরে গণনাকেন্দ্রের মধ্যেই ISF প্রার্থী ও এজেন্টকে 'বেধড়ক মার