কলকাতা: আগে প্রার্থী ঘোষণা করলে, আরও অনেকে নির্দল হয়ে দাঁড়াত। পঞ্চায়েত ভোট যত এগিয়ে আসবে, ততই বাড়বে দল ছাড়ার হিড়িক। প্রার্থী তালিকা নিয়ে অসন্তোষের জেরে তৃণমূল নেতা (TMC Leader), কর্মীদের দলত্যাগ নিয়ে কটাক্ষ দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh)। বুধবারও সকালে নিউটাউন ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমনে আসেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। সেখানে নিয়ে একাধিক ইস্যুতে মন্তব্য করেন।
ভাঙ্গড়ে তৃণমূল নেতার গাড়ির ড্যাশবোর্ডে বোমা প্রসঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি বলেন, 'গ্রামে গ্রামে কারা বোমা ফাটাচ্ছে , কারা সাপ্লাই করছে বোঝাই যাচ্ছে। আমরা যখন অভিযোগ করি তৃণমূলের লোকেরাই বোমার কারখানা করছে; বোমা বিক্রি করছে; বোমা ফাটাচ্ছে। তখন তৃণমূল কংগ্রেসের লোকেরা আমাদের দিকে আঙ্গুল তোলে! এখন তো পরিষ্কার হয়ে গেল। নেতার গাড়ির মধ্যে বোমা নিয়ে ঘুরছে। কিরকম আহাম্মক দেখুন! এটা যদি কোন কারনে ফাটে গাড়িও তো উড়ে যাবে; মারা যাবে। এত বেপরোয়া হয়ে গেছে, যে জানে নেতার গাড়িতে পুলিশ হাত দেবে না। ভাই চান্স খুলেছে, বেরিয়েছে। *নেতার ট্যাকে পিস্তল; নেতার গাড়িতে বোম; তারপরেও হচ্ছে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন'।
প্রার্থী মনোনয়ন দিতে ভিনজেলার নেতাদের সামনে রাখছে তৃণমূল কংগ্রেস। এ প্রসঙ্গে গতকাল দিলীপ ঘোষ বলেন, 'এখন দেখুন তৃণমূল কংগ্রেসের এখনো প্রার্থী তালিকাই তৈরি হলো না। তাদেরই আদালতে যাওয়া উচিত দুদিন মনোনয়ন বাড়ানোর জন্য। আমরা তো অর্ধেকের বেশি করে ফেলেছি। আজকালের মধ্যে বাকি শেষ হয়ে যাবে। সেজন্য তৃণমূলের ভেতরে নাম এলেই মারামারি। যারা ইতিমধ্যেই মনোনয়ন করেছে পার্টির লোকেরা বলছে ওরা তৃণমূলের লোক নয়। কারা করছে? কি করছে! বোঝাই যাচ্ছে না। আদৌ মনোনয়ন করবে কিনা পার্টি দেখা যাক! নমিনেশন না হলে যুদ্ধ কি করে হবে'।
উল্লেখ্য, মনোনয়ন জমা ঘিরে জেলায় জেলায় অশান্তি আরও বাড়বে। তা শুরুতেই বলেন দিলীপ ঘোষ। কিছুদিন আগে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, 'তৃণমূল কংগ্রেসের দ্বন্দ্বের জেরে অশান্তি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। শাসক দলের মনোনয়ন জমার সময় পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।'
দলবদলের হিড়িক: মনোনয়ন শুরু থেকে পর্বের শেষবেলাতেও জেলায় জেলায় দলবদলের হিড়িক চোখে পড়ল।কোচবিহারে পঞ্চায়েত ভোটের আগে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্রে ভাঙন ধরাচ্ছেন নিশীথ প্রামাণিক। টিকিট-বিক্ষোভে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিলেন দিনহাটা ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মফিজুল হক, কোচবিহার ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মহেশ্বর বর্মন, দিনহাটার বুড়িরহাট ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ ৫ জন পঞ্চায়েত সদস্য। নাম না করে উদয়নের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েছেন দিনহাটা ২ নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য । তরণীকান্ত বর্মনও। তৃণমূলে পুরনোদের গুরুত্ব নেই, কটাক্ষ নিশীথ প্রামাণিকের। দলবদলকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। পাতা ঝরে গিয়ে নতুন পাতা গজানোই প্রাকৃতিক নিয়ম, প্রতিক্রিয়া শাসকদলের।
একই ছবি, পশ্চিম মেদিনীপুর, মালদাতেও। পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ে মনোনয়ন পর্বের শেষদিনে দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন তৃণমূলের কর্মাধ্যক্ষ, পঞ্চায়েত সদস্যা-সহ প্রায় ৩০০ জন কর্মী। কংগ্রেস যোগ দিলেন কালিয়াচক ১ নম্বর ব্লকের সুজাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৩ জন সদস্যের মধ্যে প্রধান-সহ ১৮ জনই।