ভাঙড়: ভাঙড়ে (Bhangar) বেলাগাম সন্ত্রাস। ভাঙড়ের  কাশীপুর এলাকায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করল পুলিশ (West Bengal Police)। ভয়ের ভাঙড়ে গণনা পর্বের শেষেও ভোট-হিংসার বলি আরও তিন। গভীর রাতে পঞ্চায়েত ভোট গণনার শেষ পর্বে কাঁঠালিয়া স্কুলে গণনা কেন্দ্রের সামনেই বোমাবাজি, চলল গুলি। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল দুই আইএসএফ কর্মী হাসান মোল্লা, রেজাউল গাজি এবং গ্রামবাসী রাজু মোল্লার। এই নিয়ে পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর, বাংলায় ৩৫ দিনে ৪৪ জনের মৃত্য়ু হল।


একদিনে ৩ জনের মৃত্যু, পুলিশ কর্তা গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ভাঙড় ও কাশীপুর থানা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। গতকাল গভীর রাতে জেলা পরিষদের ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে কাঁঠালিয়ায় গন্ডগোল শুরু হয়। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায় আইএসএফ কর্মীদের। পড়তে শুরু করে একের পর এক বোমা । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। গুলিবিদ্ধ হন বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেড কোয়ার্টার মাকসুদ হাসান। তাঁর দেহরক্ষীর পা ছুঁয়ে বেরিয়ে যায় আরেকটি গুলি। নিহত আইএসএফ কর্মীদের পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের উর্দি পরে এসে গুলি চালিয়েছে সওকত মোল্লা ও আরাবুল ইসলামের লোকজন। সওকতের পাল্টা দাবি, গুলি চালায় আইএসএফ-ই।


ভোগালি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোগালি গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল গাজি আইএসএফের সক্রিয় কর্মী। ব্যাগ তৈরির কাজ করতেন বছর ২৬-এর রেজাউল। পাশের গ্রাম কাটাডাঙার বাসিন্দা আইএসএফ কর্মী হাসান মোল্লাও ব্যাগ তৈরি করতেন। তাঁর বাড়িতে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও দুই নাবালক সন্তান। নিহতদের পরিবারের অভিযোগ, গতকাল গন্ডগোলের সময় সওকত মোল্লা ও আরাবুল ইসলামের লোকজন পুলিশের উর্দি পরে এসে গুলি চালায়। অন্যদিকে, নিহত রাজু মোল্লার বাড়ি শানপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চিনেপুকুর এলাকায়। পরিবারের দাবি, মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে ঘটকপুকুরে দিদির বাড়ি যাচ্ছিলেন রাজু। গোলাগুলির মাঝে পড়ে মৃত্যু হয় বছর আঠাশের যুবকের। 


অন্যদিকে জেলা পরিষদের আসনে গণনাকে কেন্দ্র করেই ভাঙড়ে গুলি, বোমাবাজি। ৩টি প্রাণহানি। এর মধ্যেই নিখোঁজ আইএসএফের জেলা পরিষদ প্রার্থী জাহানারা খাতুন, তাঁর স্বামী ও কাউন্টিং এজেন্ট। পরিবারের দাবি, গণনা কেন্দ্র থেকেই নিখোঁজ হয়ে যান তিনজন। ওই ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যুর পর, আশঙ্কায় রয়েছে আইএসএফ প্রার্থী ও তাঁর এজেন্টের পরিবার।