করুণাময় সিংহ, মালদা: ভোটের পর তৃণমূলকে সমর্থন বিতর্কে পিছু হটলেন মালদার কংগ্রেস নেতা আবু হাসেম খান চৌধুরী। জোট ইস্যুতে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে বদলে গেল তাঁর অবস্থান। কংগ্রেস পার্টি অফিসে সিপিএম নেতৃত্বকে পাশে বসিয়ে মালদা দক্ষিণের কংগ্রেস সাংসদের দাবি, তৃণমূলকে সমর্থনের কথা বলেননি তিনি। কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট একসঙ্গে লড়ছে এবং লড়বে।


গতকাল মঙ্গলবার আবু হাসেম খান চৌধুরী জানিয়েছিলেন, ‘‘কংগ্রেস আব্বাস সিদ্দিকির হাত ধরেনি। বামেদের খারাপ ফল হবে, এই ভয়ে ওরা আব্বাসের হাত ধরেছে। ধর্মের নামে কর্মের নামে যদি ৮-১০টা সিট পাওয়া যায়। আব্বাসের হাত ধরা আমরা পছন্দ করিনি। তেমন পরিস্থিতি হলে ভোট-পরবর্তী সময়ে আমরা তৃণমূলকে সমর্থন করব। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত ৷’’


মঙ্গলবারই এ কথা বলেছিলেন, মালদা দক্ষিণের কংগ্রেস সাংসদ। বিতর্কের মুখে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বদলে গেল বয়ান! তিনি বলেন, ‘‘আমরা এবং বামফ্রন্ট একসঙ্গে কাজ শুরু করে দিয়েছি। এবং আরো জোরে আমরা কাজ করব। সনিয়া গাঁধী ঠিক করেছেন আমরা একসঙ্গে চলব। তাই এখানে তৃণমূল বিজেপির প্রশ্ন ওঠে না ৷’’


মঙ্গলবার ‘ব্যক্তিগত মতামত’ বলে দাবি করলেও সেই মন্তব্য থেকে বুধবার পিছু হটলেন তিনি। এদিন আর তাঁর মুখে শোনা গেল না, আইএসএফের নাম। আবু হাসেম খান চৌধুরী বলেন, ‘‘আমি কিছু কথা বলেছিলাম যেটা বলা উচিত হয়নি। আমি তৃণমূলকে বা বিজেপিকে কোথাও সাপোর্ট করিনি। তৃণমূল-বিজেপির সাথে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই ৷’’ তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, এখানে প্রচারে আব্বাসকে ডাকবেন? উত্তরে বলেন, ‘‘আমি এআইসিসির কথা বলতে পারি, প্রদেশ কংগ্রেসের কথা বলতে পারি। আব্বাসের কথা বলতে পারি না।’’


মালদার বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা মঙ্গলবার তৃণমূলকে সমর্থনের কথা বলেন কোতোয়ালি ভবনে বসে। সেই মত খণ্ডন করে দেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। বুধবার দলের জেলা কার্যালয়ে সিপিএম নেতৃত্বকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে কংগ্রেস। সবার বক্তব্যেই ছিল ঐক্যের সুর। মালদা জেলার সিপিএম সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, ‘‘বিজেপি এবং তৃণমূল একই দল, একই মুখ। দুটো দলের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই। কংগ্রেস, বামফ্রন্ট, আইএসএফ সহ সব ধর্মনিরপেক্ষ দল মিলে সংযুক্ত মোর্চা তৈরি হয়েছে। সংযুক্ত মোর্চার সরকার তৈরির দিকে আমরা এগোচ্ছি ৷’’


গোটা ঘটনায় কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে তৃণমূল-বিজেপি। মালদা জেলার বিজেপি সহ সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় জানান, ‘‘বাম কংগ্রেস সিদ্দিকি জোটের আসল উদ্দেশ্য তৃণমূলকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখা। ডালুবাবু রাজ্য নেতৃত্বের চাপে কথা উল্টাচ্ছেন ৷’’


২৬ এপ্রিল সপ্তম দফা এবং ২৯ এপ্রিল অষ্টম দফায় মালদা জেলার ১২টি বিধানসভা আসনে ভোটগ্রহণ।