সন্দীপ সমাদ্দার, পুরুলিয়া: পুরুলিয়ার তৃণমূল পরিচালিত বরাবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান যোগ দিলেন বিজেপিতে। যদিও সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাল না তৃণমূল। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বোর্ড গঠনের আড়াই বছর পূর্ণ না হওয়ায় আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারির আগে তৃণমূল অনাস্থা আনতে পারবে না প্রধানের বিরুদ্ধে।
দলবদলের ধাক্কায় টলমল গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতার ভারসাম্য। রাজ্যে বিধানসভা ভোটের মুখে তৃণমূল পরিচালিত পুরুলিয়ার বরাবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান যোগ দিলেন বিজেপিতে।
এর ফলে ১১ সদস্যের গ্রাম পঞ্চায়েতে ৬ জন সদস্য রইলেন তৃণমূলে। আর বিজেপির সদস্যসংখ্যা বেড়ে হল ৫।
শাসক দলে বিজেপি ভাঙন ধরালেও পঞ্চায়েতের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রইল তৃণমূলের হাতে।
বরাবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আনন্দ সিংহ সর্দার এবং উপপ্রধান তুষারকান্তি জেঠি বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া জেলা বিজেপি কার্যালয়ে এসে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন। প্রধান তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেও উপপ্রধানকে আগেই বহিষ্কার করেছিল রাজ্যের শাসক দল।
দলত্যাগের কারণ হিসেবে দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন প্রধান। আনন্দ সিংহ সর্দার, বিজেপিতে যোগদানকারী বরাবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতে দুর্নীতি হচ্ছিল। আমাদের ঠিকমতো কাজ করতে দেওয়া হচ্ছিল না। আমাদের দমবন্ধ হয়ে আসছিল তাই আমরা বিজেপিতে যোগদান করলাম।’’
কিন্তু গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের আড়াই বছর পূর্ণ না হওয়ায় এখনই প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে পারবে না তৃণমূল। ২০১৮-র ২৩ অগাস্ট বরাবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করে তৃণমূল। সেই হিসেবে বোর্ডের আড়াই বছর পূর্ণ হচ্ছে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি। অনাস্থা আনতে হলে তৃণমূলকে তারপর আনতে হবে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন ওই সময় নাগাদ রাজ্যে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করতে পারে। তার ফলে ভোট পর্ব না মেটা পর্যন্ত আর অনাস্থা আনা যাবে না।
সংখ্যালঘিষ্ঠ হলেও প্রধান ও উপপ্রধান দলে টেনে বিজেপির দাবি, পঞ্চায়েতের নিয়ন্ত্রণ ও কাজ করার ক্ষমতা অনেকটাই চলে এল তাদের হাতে।
পুরুলিয়া বিজেপির সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, অনেকদিন ওঁরা যোগাযোগ রাখছিলেন। মোদিজির হয়ে কাজ করার জন্য বিজেপিতে যোগদান করলেন।
তৃণমূল কংগ্রেস জেলা মুখপাত্র নবেন্দু মাহালি বলেছেন, পুরুলিয়া ,বরাবাজার পঞ্চায়েতে একটা গোলমাল হয়েছিল। স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে দেখা হবে, কেন তাঁরা বিজেপিতে গেলেন।
আর ২ জন সদস্য দলবদল করলেই পঞ্চায়েতের সংখ্যাগরিষ্ঠতা চলে যাবে বিজেপির দখলে। তা ঠেকানোই এখন বরাবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের সামনে চ্যালেঞ্জ।