কলকাতা: প্রথম প্রেম অভিনয় হলে, দ্বিতীয় প্রেম অবশ্যই রান্না। ক্যামেরার সামনে যতটা সাবলীল, ততটাই অবলীলায় হাতা-খুন্তি হাতে বানিয়ে ফেলেন খিচুড়ি থেকে শুরু করে চিংড়ি মাছের মালাইকারি, মাংসের বিভিন্ন উপাদেয় পদ। ইন্ডাস্ট্রির বন্ধু থেকে আত্মীয়-পরিজন, সবাই নাকি তাঁর রান্নার ভক্ত। প্রথমবার জামাইষষ্ঠীতে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে রান্নাই করতে দেননি শাশুড়িকে। বারমুডা আর স্যান্ডো গেঞ্জি পরে সবার জন্য শাক, মাছের মাথা দিয়ে মুগডাল, ধোঁকার ডালনা আর ইলিশ মাছ বানিয়েছিলেন খরাজ মুখোপাধ্যায়।
প্রথমবার জামাইষষ্ঠীতে শ্বশুড়বাড়িতে গিয়েছিলেন জোড়া ইলিশ নিয়ে। খরাজ বলছেন, 'আমার শ্বাশুড়ি চাকরি করতেন সেইসময়। আর শ্যালকরা তখন অনেক ছোট। জামাইষষ্ঠীর মানেটাই ভালো করে বোঝে না। আমি চিরকালই জমিয়ে রান্না করতে ভালোবাসি। শ্বশুর বাড়িতে গিয়েই সবাইকে বারণ করে দিলাম রান্নার কাজে হাত দিতে। প্রথমবার জামাইষষ্ঠীতে জামাই নিজে রান্না করে খাবে! বড়রা সবাই বাধা দিয়েছিলেন একটু। কিন্তু শেষমেষ হাল ছেড়ে দিলেন। বারমুডা আর স্যান্ডো গেঞ্জি পরে কাজে নেমে পড়লাম। তারপর জমিয়ে রান্না। দুপুরে সবাই একসঙ্গে মাটিতে বসে খাওয়া হল। গানবাজনা হল। তখনকার জমায়েতের একটা অন্যরকম আমেজ ছিল। শেষপাতে শাশুড়ি আম কেটে দিয়েছিলেন কেবল। বলেছিলেন, এইটুকু লোকাচার পালন করতে দাও!'
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার রীতি বদলেছে। কাজের ব্যস্ততায় এখন বসিরহাটের শ্বশুরবাড়ি কমই যাওয়া হয়। অভিনেতা বলছেন, 'এখনও প্রতিবার জামাইষষ্ঠীতে শ্বশুরবাড়ি থেকে মাখা সন্দেশ আর উপহার পাঠিয়ে দেন বাড়ির বড়রা। এখন আমার জামাইষষ্ঠী কাটে শ্যুটিং সেটে। এই সমস্ত রীতিগুলোর কথা মাথায় রেখেই চিত্রনাট্য় লেখা হয় অনেক সময়। বয়স পেরিয়ে গেলেও আমার এই উৎসবটা বেশ লাগে। পাড়ায় দেখি স্বামী-স্ত্রী সুন্দর করে সাজগোজ করে শ্বশুরবাড়ি যায়। আমার সঙ্গে দেখা হলেই প্রশ্ন করি, কেমন খাওয়া দাওয়া হল?'
এখন জামাইষষ্ঠীর দিন বান্ধবীর বাড়িয়ে যান খরাজ-পুত্র বিহু। হাসতে হাসতে অভিনেতা বলছেন, 'আমার ছেলের বিয়ের ঠিক হয়ে গিয়েছে। তবে এখনও বিয়েটা হয়নি। ও ওর বান্ধবীর বাড়িতে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করে প্রত্যেক জামাইষষ্ঠীতে। আমরা বলি নির্লজ্জ। ওর অবশ্য তাতে কিছু যায় আসে না। আগে থেকে বান্ধবীর কাছে পছন্দের খাবারের কথা বলে রাখে।'