কলকাতা: এখনও তাঁর হাত থেকে মেহেন্দির ওঠেনি। দেড় বছরের সফরের পর এখনও যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না, মঞ্চে গওহর জানের ভূমিকায় দুটি অভিনয় ইতিমধ্যেই করে ফেলেছেন তিনি। নাচ, অভিনয় এবং গান, সব মিলিয়ে প্রায় ২ ঘণ্টার অনুষ্ঠানে দর্শককে মঞ্চ থেকে চোখ সরাতে দেননি একাই। তিনি অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়।


'শিল্পী হয়ে এই প্রথম একটা সুযোগ পেলাম যেখানে আমি আমার বহু বছরের শিক্ষা, নাচ, গান ও অভিনয়, তিনটেই একসঙ্গে দর্শকদের সামনে তুলে ধরতে পারলাম। এইরকম সুযোগ আসতেই আমি সম্মতি দিতে ২ বার ভাবিনি। তবে তখনও বুঝতে পারিনি আমায় একা সব কিছু করে হবে। খুব কঠিন ছিল গোটা সফরটা। তবে গওহর খান আমার কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ' উচ্ছসিত হয়েই কথা বলছিলেন অর্পিতা। এখনও যেন চরিত্রের মোহ কাটিয়ে উঠতেই পারেননি তিনি। এবিপি লাইভের সঙ্গে কথোপকথনে মঞ্চে অভিনয়ের খুঁটিনাটি অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন তিনি।


প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে একা অভিনয় কতটা কঠিন ছিল? অর্পিতা বলছেন, 'গওহর জানের মত একজন মানুষের জীবনকে মঞ্চে তুলে ধরা সহজ নয়। তবে ২ ঘণ্টা ধরে নাচ করতে হবে, গান করতে হবে, অভিনয়ও করতে হবে এটা প্রথমদিকে বুঝিনি। মাঠে দৌড়লে বা কার্ডিও এক্সারসাইড করলে যতটা শক্তিক্ষয় নয়, তার থেকে এই অভিনয়ের পরিশ্রমটা কম ছিল না। যাঁরা দেখবেন তাঁরাই সেটা বুঝবেন।'


এর আগে প্লেব্যাকে গান গেয়েছেন অর্পিতা। তবে এই প্রথমবার মঞ্চে গান গাইলেন তিনি। কেমন ছিল গওহর জানের গান মঞ্চস্থ করার সেই অভিজ্ঞতা? অভিনেত্রী বলছেন, 'আমি যা যা গান মঞ্চে গেয়েছি সবই ভারতীয় ক্লাসিকাল। তবে গওহর জান এতটাই বহুমুখী প্রতিভা ছিলেন, তাঁর কথা মাথায় রেখে আমার সব ধরণের গানই চিত্রনাট্যে রাখার চেষ্টা করেছি। সেখানে ঠুংরী আছে, দাদরা আছে, কীর্তন আছে, রবীন্দ্রনাথের গান রয়েছে... সবকিছুই আমায় মঞ্চে গাইতে হয়েছে। 'মাই নেম ইজ জান'-এর অবিচ্ছেদ্য অংশ এই গানগুলিই। তবে আমি ৫ বছর বয়স থেকেই আমি গান শিখছি। আমি অরুণ ভাদুড়ি, শিপ্রা বসুর মত গুরু পেয়েছি। তাই এই গানের ধারাগুলোর সঙ্গে আমি পরিচিত ছিলাম। তবে অভিনয়ে সময় দিতে গিয়ে গানের চর্চা ছেড়ে দিতে হয়েছিল দীর্ঘদিন। 'মাই নেম ইজ জান'-এর জন্য আবার প্রায় এক বছর ধরে আমি চর্চায় ফিরেছি, আর রাজ্যশ্রী ঘোষের সাহায্য তো ছিলই। আমার জীবন থেকে গানের চর্চা চলে গিয়েছিল, সেটা আবার ফিরে এসেছে। আমি আর সেটা যেতে দেব না।'


লোটাস মেকআপ-এর প্রযোজনায় মঞ্চস্থ হয়েছে 'মাই নেম ইজ জান'। অর্পিতা বলছেন, শিল্প ও ব্যবসার মেলবন্ধন হলে তবেই একটা ভালো শিল্প তৈরি হয়। গওহর জানের জীবনের গল্প ভালো লেগেছিল বলেই এই কাজটি প্রযোজনা করতে রাজি হয়েছিল লোটাস। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে এই শো-টা কে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে নিয়ে যাওয়ার। এমনকি আন্তর্জাতিক স্তরেও মাই নেম ইজ জান মঞ্চস্থ করার ইচ্ছা রয়েছে। আমি পরবর্তী শো-এর সম্পর্কে আমার সোশ্যাল মিডিয়া পেজে জানিয়ে দেব।'