কলকাতা; ২০২১ শে দাঁড়িয়ে মা হতে না পারার যন্ত্রণা কিভাবে একজন নারীকে প্রতিনিয়ত কুঁড়ে কুঁড়ে খায়, সেই গল্পই উঠে এসেছে রাম কমল মুখোপাধ্য়ায় পরিচালিত শর্টফিল্ম 'ব্রোকেন ফ্রেম'-এর পরতে পরতে। ইতিমধ্য়েই বেশকিছু চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসা কুড়িয়েছে ছবিটি। ছবিতে মৌসুমীর চরিত্রে অভিনেত্রী ঋতাভারী চক্রবর্তীর জার্নিটা ঠিক কেমন ছিল? এবিপি লাইভের এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে উঠে এল সেই কথাই।


প্রশ্ন: কার্যত লকডাউনের মধ্য়েই ছবি রিলিজ... কী বলবেন?


ঋতাভরী চক্রবর্তী: হ্য়াঁ, আস্তে আস্তে সবকিছুই নর্মাল হচ্ছে। সেটাই যা আশার আলো। থার্ড ওয়েভটা যদি সেইভাবে প্রভাব ফেলতে না পারে তাহলেই ভালো। কারণ আগের বছরও ভেবেছিলাম যে হয়তো করোনা চলে যাচ্ছে, কিন্তু এই বছরটা তো আরও খারাপ। এবছর এত মানুষ মারা গেল, এত প্রিয়জনকে হারালাম। ভাবতেই পারিনি এমনটা হবে।


প্রশ্ন: 'ব্রোকেন ফ্রেম'- এ আপনি মৌসুমীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন...ঋতাভরীর চোখে মৌসুমী ঠিক কেমন?


ঋতাভরী : মৌসুমী আসলে এই প্রজন্মেরই মেয়ে কিন্তু সন্তানধারণ করতে না পারার কারণে সে ভীষণ ভাবে অসুখী। আসলে আমরা যতই নিজেদের আধুনিক বলে দাবি করি না কেন! কোনও মহিলার সন্তান না হলে এখনও সমাজ তাকে বাঁকা চোখেই দেখে। পাশাপাশি সারোগেসির কনসেপ্টও আমাদের সমাজে এখনও সেইভাবে পৌঁছায়নি। সংসারের জন্য় সর্বস্ব করেও মা হতে না পারার যন্ত্রণাই উঠে এসেছে মৌসুমীর চরিত্রে।


প্রশ্ন: ছবিতে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?


ঋতাভরী: ছবিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা খুবই ভালো। আমার এক পরিচিত যিনি ফার্টিলিটি ক্লিনিক চালান, আমি দেখেছি সন্তান পাওয়ার জন্য় মা-বাবা'রা কতকিছু করার জন্য় তৈরি থাকেন। এই ছবিতে অভিনয় করতে গিয়ে আমি যেন মৌসুমী চরিত্রটাকে অনুভব করতে পেরেছি। আমার মনে হয়, অনেক মহিলাই তাঁদের সঙ্গে মৌসুমীকে রিলেট করতে পারবেন।


প্রশ্ন: সহ অভিনেতা হিসেবে রোহিত রায় কেমন?


ঋতাভরী: সহ অভিনেতা হিসেবে রোহিত ভীষণই ভালো। আমরা খুব মজা করে কাজ করেছি। আলাদা করে কোনও ওয়ার্কশপও করতে হয়নি। আমার ধারণা, আমাদের রসায়নটা খুব স্বাভাবিক ভাবেই তৈরি হয়েছে ছবিতে।


প্রশ্ন: সেটে পরিচালক রাম কমল মুখোপাধ্য়ায় কি খুব কড়া?


ঋতাভরী: যেহেতু ছবিটা রাম কমলেরই ছোটগল্প 'লং আইল্যান্ড আইসড টি'র ওপর নির্ভর করে বানানো, সেহেতু ও ঠিক কী চায় সেই ব্য়পারে প্রথম থেকেই পরিষ্কার ছিল। প্রত্য়েকটা ফ্রেম পেন্টিং-এর মত করে ভেবেছিল ও। আমরা খুব মজা করে শুটিং করেছি।


প্রশ্ন: এই ছবির শুটিং চলাকালীন এমন কোনও বিশেষ স্মৃতি?


ঋতাভরী: (একটু ভেবে) আমার মনে আছে, সেটে একটা বিড়াল ছিল, আর সেটা এত মিষ্টি ছিল যে কে ওকে কোলে নেবে সেটা নিয়ে ঝগড়া লেগে যেত। একদিন বিড়ালটা আমার ও রোহিতের ছবির ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় ছবিটা পড়ে ভেঙে যায়। আর সেই ঘটনা থেকেই এই ছবির নাম 'ব্রোকেন ফ্রেম' হয়।


প্রশ্ন: করোনা আবহে শুটিং করতে কতটা অসুবিধে হয়েছিল?


ঋতাভরী: আমাদের শুটিং একদম কোভিড গাইডলাইন মেনে হয়েছে। কম লোকজন নিয়ে আমরা শুট করেছি। সেট নিয়ম করে স্য়ানিটাইজ করা হয়েছে। তবে একটা কথা না বললেই নয় যে, সমস্ত কোভিড বিধি মেনে শুটিং করা সত্য়িই খুব খরচসাপেক্ষ ব্য়াপার।