মুম্বই: বলিউডে ফের নক্ষত্রপতন, বৃহস্পতিবার সকালে চলে গেলেন ঋষি কপূর। ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে  শ্বাসকষ্ট নিয়ে মুম্বইয়ের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই ক্যানসারে ভুগছিলেন ঋষি। বিদেশে এক টানা চিকিৎসার পর গত বছর দেশে ফেরেন তিনি।  কিন্তু মাঝেমধ্যেই সংক্রমণ বা শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি।



তবে ঋষিই প্রথম নয়, বলিউডের বেশ কিছু তারকাকেই ছুঁয়েছিল এই মারণব্যাধি। দেখে নিন টিনসেল টাউনের কোন কোন অভিনেতা, অভিনেত্রী, পরিচালকের জীবনে থাবা বসিয়েছিল এই মারণব্যাধি।



গতকাল অর্থাৎ বুধবারই মুম্বইয়ের কোকিলাবেন হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন জনপ্রিয় বলি অভিনেতা ইরফান খান। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৫৪। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে তাঁকে মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  কোলোনে সংক্রমণের কারণে তাঁকে আইসিইউ-তে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। এর আগে ২০১৯-এ ইরফান জানিয়েছিলেন যে, তিনি নিউরোএনডোকট্রিন টিউমারের সমস্যায় ভুগছেন তিনি।



ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন হৃতিক রোশনের পিতা রাকেশ রোশন। অন্যদিকে থাইল্যান্ডের ফুকেটে ‘ব্যাং ব্যাং’ ছবির শুটিং করতে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন হৃতিক রোশন। ওই আঘাতের কারণেই তাঁর ব্রেন ও খুলির মাঝখানে রক্ত জমাট বেঁধেছিল। আর তার জেরেই ২০১৩ সালে মুম্বাইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালে হৃতিক রোশনের অস্ত্রোপচার হয়েছে। অ্যানেসথেসিয়া ব্যবহার করে অজ্ঞান করার পর হৃতিকের মাথার খুলি ছিদ্র করে জমাট বাঁধা রক্ত বের করে আনা হয়। বর্তমানে চিকিৎসাধীন থাকলেও ভালো আছেন রাকেশ। কঠিন সময় জয় করে সুস্থ হৃতিকও।



সোনালী বেন্দ্রে। ক্যানসারের সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াই করছেন যাঁরা, সোনালী হতেই পারেন তাদের আইকন। চতুর্থ ধাপে ক্যানসার ধরা পড়ে তাঁর। তাঁর হাই গ্রেড মেটাস্টেটিক ক্যান্সার হয়েছিল অভিনেত্রীর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা চলেছিল অভিনেত্রীর। সোনালী জানিয়েছেন যে তাঁর সারা পেটে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়লেও, তিনি কখনও ভাবেননি যে তিনি মৃত্যমুখী৷ অনেকের মতো তাঁরও মনে প্রশ্ন জেগেছিল যে কীভাবে তাঁর ক্যান্সার হল? কিন্তু পরে তিনি বুঝেছেন যে এই রোগ যে কারও হতে পারে৷ তাই সকলকে সতর্ক থাকার উপদেশ দিয়েছেন সোনালী৷ নিজের অসুখ নিয়ে বেশ খোলামেলা ছিলেন সোনালী। ধাপে ধাপে ভাগ করে নিয়েছেন তার সেরে ওঠার পর্যায়ও। আপাতত সুস্থ তিনি।



মাত্র ৪২ বছর বয়সেই মারণব্যাধি ক্যান্সারের কবলে পড়েছিলেন জনপ্রিয় বলি অভিনেত্রী মনীষা কৈরালা৷ জরায়ুর ক্যান্সার হয়েছিল তাঁর।  দীর্ঘদিন কেমোথেরাপিসহ জটিল চিকিৎসা পদ্ধতির পর অস্ত্রোপচার হয়। সুস্থ হয়ে নিজের আত্মজীবনী 'হিলড' লেখেন মনীষা। তাঁর লড়াইয়ের কাহিনী তিনি খোলামেলাভাবে পৌঁছে দিয়েছেন অনুরাগীদের কাছে। বর্তমানে স্বাভাবিক জীবনই কাটাচ্ছেন তিনি।



বলিউডের জনপ্রিয় পরিচালকও মুক্তি পাননি ক্যানসারের হাত থেকে। মারণব্যাধি ছন্দপতন ঘটিয়েছিল অনুরাগ বসুর জীবনেও। ২০০৪ সালে ক্যানসার ধরা পড়ে তাঁর। তবে শরীর নিয়ে বেশ আশাবাদী ছিলেন পরিচালক। হাসপাতালে যাওয়ার আগে নাকি বলে গিয়েছিলেন, একটা গোটা চিত্রনাট্য লিখে নিয়ে ফিরবেন তিনি। ক্যানসার তাঁকে আরও দায়িত্বশীল পরিচালক করে তুলেছে, হাসিমুখে জানান 'বরফি'- র শ্রষ্টা অনুরাগ। বর্তমানে সম্পূর্ণ সুস্থ তিনি।