কলকাতা: ছোটপর্দা থেকে শুরু করে ওয়েব সিরিজ.. তিনি কাজ করেছেন নিজের গতিতে, নিজের ছন্দে। তবে পিরিয়ড ড্রামা তাঁর পছন্দ তাঁর। সেই কারণেই বেছে নেওয়া 'পরিণীতা' (Parineeta)। দেবচন্দ্রিমা সিংহ রায় (Debchandrima Singha Roy) ও গৌরব চক্রবর্তী (Gaurav Chakrabarty) অভিনীত যে 'পরিণীতা' ওয়েব সিরিজ মুক্তির অপেক্ষায়, তার পরিচালক তিনিই। অদিতি রায় (Aditi Roy)। সিরিজ মুক্তির আগে, নতুন কাজ নিয়ে এবিপি লাইভের (ABP Live) সঙ্গে গল্প করলেন পরিচালক। 


এর আগে বিভিন্ন ধারায় একাধিক কাজ করেছেন পরিচালক। কেন তিনি এবার বেছে নিয়েছিলেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'পরিণীতা'-কে? অদিতি বলছেন, 'যে কোনও কাজই আমি ভীষণ আনন্দ পাই। তবে পিরিয়ড ড্রামা আমার ভীষণ প্রিয়। টেলিভিশনের জন্য ব্যোমকেশ, আমি সিরাজের বেগম, মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যের মতো কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম একসময়ে। ইতিহাস আমার খুব পছন্দের বিষয়। সেই জায়গা থেকে আমি ভীষণ ভালবাসি একটা অন্য সময়ের গল্প বলতে। তার জন্য যে রিসার্চের প্রয়োজন হয়, সেটা ভীষণ উপভোগ্য।'


কীভাবে শুরু হয়েছিল 'পরিণীতা'-র কাজ? অদিতি বলছেন, 'আমার সঙ্গে শ্রীকান্তদার সঙ্গে কথা হচ্ছিল যে বাংলার পুরনো গল্প নিয়ে কাজ করা হবে 'হইচই'-তে (Hoichoi)। ক্লাস নবম-দশম-এ প্রথম 'পরিণীতা' পড়েছিলাম আমি। তারপরে ছবিও দেখেছি। গল্পটা একটা চিরন্তন প্রেমের গল্প যেটা আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। সেই কারণেই এই সিনেমা নিয়ে সিরিজ তৈরির পরিকল্পনা। আমরা গল্পের সময়কালটাকে একটু পিছিয়ে নিয়ে গিয়েছি। আসলে আমরা শুধু প্রেমের গল্প বলতে চাইনি, তুলে ধরতে চেয়েছি একটা সময়ের দলিল। শর্বরীদির লেখাটা আমায় ভীষণ সাহায্য করেছে। তবে হ্যাঁ, ২০২৪-এ দাঁড়িয়ে ১৯০৪-কে তুলে ধরা সোজা নয়। আমি যেদিকেই ক্যামেরা খুলব, সেদিকেই অন্য সমস্ত জিনিস। সেট তৈরি করতে হয়েছে। সবাই মিলে একটা সময়কে কীভাবে তৈরি করা যায় সেই চেষ্টাই করে গিয়েছেন। গানের ক্ষেত্রেও সেই ছোঁয়াই রাখা হয়েছে। ইন্দ্রনীলদা, তন্ময়দা, ঋতু.. সবার চেষ্টার ফল এটা। এছাড়া অবশ্যই বলতে হয় চরিত্রগুলোর কথা, গৌরব, দেবচন্দ্রিমা আর অর্পণ ছাড়াও, মিমি, পুষ্পিতাদি, লোকনাথদা রয়েছেন। প্রত্যেককেই দর্শক আলাদাভাবে দেখতে পারেন। রম্যদীপ দারুণ কাজ করেছে। প্রত্যেকের সমান তালমিলের মধ্যে দিয়েই গোটা সিরিজটা মনের মতো করে তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। একটা আধুনিক গল্প করতে গেলে আমরা যত সহজে ব্যাপারটা সাজিয়ে ফেলতে পারি, পিরিয়ড ড্রামার একটা আলাদা স্ট্রাগল রয়েছে। ভুল হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে।'


কাস্টিংয়ের ক্ষেত্রে কী কী বিষয় মাথায় রাখতে হয়েছে? অদিতি বলছেন, 'আমি গৌরবের সঙ্গে আগে কাজ করেছি। ওর কথা বলা, হাঁটাচলা সবকিছুর মধ্যে একটা ভীষণ সাবেকি ব্যাপার রয়েছে। মনে হয়েছিল শেখরের চরিত্রে ও খুব বিশ্বাসযোগ্য। ওকে ছাড়া আর কারও কথা মনে হয়নি। দেবচন্দ্রিমাকে টেলিভিশনে দেখেছি। ওর মুখের মধ্যে একটা অদ্ভুত সারল্য রয়েছে, মায়া রয়েছে। ওকে দেখেই মনে হয়েছিল যে খুব ভাল ললিতা হতে পারে। আমার প্রযোজনা সংস্থার কাছে আমি কৃতজ্ঞ যে তাঁরা এটা আমায় করার সুযোগ দিয়েছেন।'


যে বই নিয়ে আগেও একাধিক কাজ হয়েছে, সেখানে কি প্রত্যাশার চাপ থাকে? পরিচালক বলছেন, 'আমরা নিজেরা যেটা আশা করেছিলাম, সেটাই পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি। সেটা দর্শকের প্রত্যাশার সঙ্গে মিলবে কি না জানি না। তবে এটুকু বলতে পারি, একটা মৌলিক কাজ হিসেবে সিরিজটা দেখলে মানুষের ভালই লাগবে। তবে একটাই অনুরোধ, মানুষ যেন দেখে বিচার করেন।'


শ্যুটিংয়ের কোনও উল্লেখযোগ্য অভিজ্ঞতা? অদিতি বলছেন, 'মেদিনীপুরের প্রয়াগ ফিল্মসিটিতে শ্যুটিং করেছিলাম। সেখানে একটি রেলওয়ে স্টেশনের দৃশ্য ছিল। আমি এর আগে একজনকে নিয়ে এভাবে আউটডোরে শ্যুটিং করিনি। সেটা একটা মনে রাখার মতো অভিজ্ঞতা। দ্বিতীয় যে চ্যালেঞ্জটা ফেস করেছি সেটা আলো নিয়ে। সেই সময়ে তো সবটাই মোমবাতি বা লন্ঠনের আলো। শ্যুটিংয়ের সময়ে একটা জ্বালাচ্ছি তো অন্যটা নিভে যাচ্ছে। সেটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। দর্শকদের ভাল লাগলেই আমাদের ভাল লাগবে।'


 






আরও পড়ুন: Laapata Ladies: লাপতা লেজিজ়-এর মুকুটে নতুন পালক, দেশের বিশেষ এই নাগরিকদের জন্য হবে স্পেশাল স্ক্রিনিং


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।