শ্রীদেবীর মৃত্যুর পর শোকস্তব্ধ বলিউডে ফের এক ঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছিলেন অভিনেতা ইরফান খান। দিন কয়েক আগে টুইট করে সকলকে জানান, তিনি এক বিরলতম রোগে আক্রান্ত। কিন্তু কী সেই রোগ, সেই নিয়ে সকলে নানা আশঙ্কা প্রকাশ করলেও, সেমসয় মুখ খোলেননি ইরফান। বলেছিলেন আরও একটু অপেক্ষা করতে। যদিও থামেনি গুজব ছড়ানো।





বলিউডে তাঁর সহকর্মীরা তাঁকে টুইট করে দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। ইরফান-পত্নী সুতপা শিকদারও ফেসবুকে গুজব বন্ধ করে তাঁদের এই লড়াই জিতে আসার জন্যে শুভেচ্ছা জানাতে বলেন সকলকে। অবশেষে সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ইরফান নিজেই টুইটে এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিলেন তিনি নিউরো এন্ডোক্রাইন টিউমারে আক্রান্ত।

রইল তাঁর সেই টুইটটি.....




সেই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দিলেন, এইমুহূর্তে তিনি কঠিনতম সময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছেন। বিদেশে গিয়েছেন এই জীবনযুদ্ধ জিততে। তবে তিনি তাঁর টুইট এভাবেই শুরু করেছেন, জীবনের কোনও দায়বদ্ধতা নেই কেউ জীবনকে যেমন ভাবে চাইবেন, যা আশা করবেন, সেটাই পাবেন। কিন্তু আচমকা ঘটে যাওয়া বিভিন্ন নেতিবাচক অধ্যায়ই আমাদের মানুষ হিসেবে আরও পরিণত করে। তবে কঠিন সময় কাছের মানুষের ভালবাসা, সমর্থন যেকোনও বড় বাধাকে অতিক্রমের শক্তি যোগায়।

তবে এরসঙ্গে তিনি একথাও বলতে ভোলেননি, নিউরো মানেই সবসময় মস্তিষ্ক সম্পর্কিত নয়, এবং গুগল করে সবসময় সববিষয়টা জানাও যায় না। তাই তাঁর জন্যেই যেন অপেক্ষা করেন সবাই ফের সঠিক তথ্য জানার জন্যে। তাঁর আশা তিনি ফের জীবনের ছন্দে ফিরবেন, এবং ফিরে এসে আরও অনেক গল্প বলবেন তাঁর ভক্তদের।

তবে নিউরো এন্ডোক্রাইন টিউমারটা ঠিক কী?

 

চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে এটা ক্যান্সারের প্রথম স্টেজ। প্রসঙ্গত, শরীরের এন্ডোক্রাইন সিস্টেম তৈরি হয় সেই সমস্ত কোষ দিয়ে যা থেকে হরমোন তৈরি হয়। হরমোন হল সেই রাসায়নিক পদার্থ যা রক্তের মধ্যে দিয়ে বয়ে আসে। হরমোনের এর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের কার্যকারিতার ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব আছে। এছাড়া শরীরের কোষের ওপরও এর বিশেষ প্রভাব আছে।

 

 টিউমার তখনই তৈরি হয়, যখন একটি সুস্থ কোষ পরিবর্তিত হয়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেড়ে ওঠে। এরফলে তৈরি হয় একটি মাংস পিণ্ড। সেই মাংস পিণ্ডটি ক্যান্সারাস হতে পারে, আবার বিপজ্জনক নয় এমনও হতে পারে। ক্যান্সারাস হলে, সঠিক সময় ধরা না পড়লে টিউমারটি দ্রুত বেড়ে ওঠে এবং শরীরের অনেকটা অংশে ছড়িয়ে পড়ে। তবে বিপজ্জনক না হলে, টিউমার বাড়লেও শরীরে ছড়িয়ে পড়ে না। এছাড়া এধরনের টিউমার অস্ত্রোপচার করেও সরিয়ে দেওয়া যায়।

এন্ডোক্রাইন টিউমার সাধারণত শরীরের সেই অংশ থেকে বাড়তে থাকে, যেখানে হরমোন তৈরি এবং নিঃসারিত হয়। যেহেতু এই বিশেষ ধরনের টিউমারটি কোষ থেকে তৈরি হয়, তাই এই টিউমার থেকেও হরমোন তৈরি হয়। যার ফলে শরীর মারাত্মক খারাপ হয়।



নিউরো এন্ডোক্রাইন কোষ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া যায়। যেমন ফুসফুসে, গ্যাস্ট্রোইন্টেসটিনাল ট্র্যাকে, তারমধ্যে রয়েছে পাকস্থলী এবং অন্ত্র। নিউরো এন্ডোক্রাইন কোষ ফুসফুসে  রক্ত এবং হাওয়ার সঞ্চালন নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া গ্যাস্ট্রোইন্টেসটিনাল ট্র্যাকে কত তাড়াতাড়ি খাদ্যের মুভমেন্ট হবে সেটাও নিয়ন্ত্রণ করে এই কোষ।

 

মূলত তিন ধরনের এন্ডোক্রাইন টিউমার রয়েছে। সেগুলো হল pheochromocytoma, Merkel cell cancer, and neuroendocrine carcinoma। তবে এরমধ্যে কোন ধরনের টিউমারে আক্রান্ত ইরফান সেব্যাপারে  বিস্তারিত কোনও তথ্য নেই।