মুম্বই: অবশেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন বলিউড অভিনেতা সেফ আলি খান। পাঁচদিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর, মঙ্গলবার দুপুরে ছাড়া পেলেন তিনি। তবে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও, এখনই ফের শ্যুটিংয়ে ফিরতে পারবেন না অভিনেতা। বরং আগামী কিছু দিন সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে তাঁকে। এই সময় লোকজনের সমাগম যতটা সম্ভব বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। বেশি লোকজন যাতে বাড়িতে ভিড় না করেন, জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। অন্যথায় ক্ষতে সংক্রমণ হতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের। (Saif Ali Khan Discharged)
জানা গিয়েছে, সোমবার রাতেই সেফ-এর কাগজপত্র জমা করা হয় লীলাবতী হাসপাতালে। আজ সকাল১০-১২টার মধ্যেই ছাড়া পাবেন বলে ঠিক হয়ে যায়। দুপুরেই এদিন ছাড়া পেয়ে যান সেফ। কাগজপত্র সংক্রান্ত কিছু কাজ বাকি ছিল বলে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিতে দেরি হয়। তবে যে 'সদগুরু শরণ' আবাসনে হামলা হয়, সেখানে যাবেন না সেফ, কিছুটা দূরে 'ফরচুন হাউইটসে' উঠবেন। (Saif Ali Khan News)
মঙ্গলবার মুম্বইয়ের লীলাবতী হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান সেফ। সেখানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন মা শর্মিলা ঠাকুর, স্ত্রী করিনা কপূর খান। পৌঁছন অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত। হাসপাতাল থেকে মাঝে একবার বাড়িও যান করিনা। ফের হাসপাতালে আসেন অভিনেত্রী। কিছু কাগজপত্র আনতেই মাঝে তাঁকে বাড়ি যেতে হয় বলে শোনা যাচ্ছে। হাসপাতালরে বাইরে সেফকে দেখতে ভিড় জমে যায় এদিন। তবে নিরাপত্তার জন্য সেখানে কড়া প্রহরার ব্যবস্থা ছিল। হাসপাতালের পাশাপাশি, তাঁদের বান্দ্রার বাড়িও নিরাপত্তার ঘেরোটোপে মুড়ে ফেলা হয়। বাড়ির ব্যালকনিতে সিসিটিভি বসানোর ভিডিও সামনে এসেছে।
গত বৃহস্পতিবার বান্দ্রায় নিজের বাড়িতেই আক্রান্ত হন সেফ। ধারাল অস্ত্র দিয়ে তাঁকে এলোপাথাড়ি কোপায় এক দুষ্কতী। ঘাড়ে, পিঠে, হাতে গুরুতর আঘাত পান সেফ। যে ছুরি দিয়ে তাঁকে কোপানো হয়, তার প্রায় ২.৫ ইঞ্চি পিঠের ভিতরেই রয়ে যায়, শিরদাঁড়ার একেবারে কাছে। রক্তাক্ত অবস্থায়, অটোয় চেপে হাসপাতালে যখন পৌঁছন সেফ, তাঁর শিরদাঁড়া থেকেও তরল বেরোচ্ছিল। সেই অবস্থায় অস্ত্রোপচার হয়। ছোট ছেলে জেহ্-কে বাঁচাতেই সেফ ওই দুষ্কৃতীর ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং আঘাত পান বলে জানা যায়।
বাড়িতে ঢুকে সেফের উপর হামলা চালানোর ঘটনায় মহম্মদ শরিফুল নামের এক যুবককে গ্রেফতার করে মুম্বই পুলিশ। জানা যায়, শরিফুল আসলে বাংলাদেশের বাসিন্দা। সীমান্ত টপকে ভারতে ঢোকে সে। এর পর ভুয়ো পরিচয়ে ভারতে থাকছিল শরিফুল। শুধু তাই নয়, খুন করেই শরিফুল বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে আসে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। ঢাকা ও নলছিটি থানায় তার বিরুদ্ধে খুন-ছিনতাইয়ের একাধিক মামলাও রয়েছে। মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৭ সালে সে এক মোটর সাইকেল আরোহীকে খুন করে। গ্রেফতারি এড়াতেই সে ভারতে পালিয়ে আসে।
শুধু তাই নয়, জানা গিয়েছে, ২০২৪ সালের অগাস্ট মাসে মেঘালয়ের ডাউকি নদী পেরিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ ঘটায় শরিফুল। সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে শরিফুল প্রথম কয়েক সপ্তাহ পশ্চিমবঙ্গেই ছিল। পশ্চিমবঙ্গেই মোবাইল ফোনের সিমকার্ড কেনে সে। স্থানীয় এক বাসিন্দা তাকে সাহায্য করে। খুকুমণি জাহাঙ্গির শেখের নামে নথিভুক্ত সিম নিয়েছিল শরিফুল। এর পর মুম্বই রওনা দেয়। মুম্বইয়ে গিয়ে আধার কার্ড বানানোর চেষ্টা করলেও পারেনি।