মুম্বই: যে সময় বাবার কাছে আবদার করে কাটায় আর পাঁচজন কিশোর-কিশোরী, সেই ১৫ বছর বয়সে পিতৃবিয়োগ হয়েছিল শাহরুখ খানের। তারপর শুরু হয়েছিল নতুন এক সংগ্রাম। সাফল্যের শৃঙ্গে থেকেও অন্ধকার যে অধ্যায় ভোলেননি শাহরুখ।
দিল্লি থেকে মুম্বইয়ে এসে লড়াই করতে হয়েছিল শাহরুখকে। হতাশা বাড়িয়েছিল সংকল্প। মুম্বইয়ে আরব সাগরের তীরে মেরিন ড্রাইভে বসে এক অনামী তরুণ প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, একদিন এই শহর আমার হবে। একটি বিলাসবহুল বাড়ি দেখে ঠিক করেছিলেন, সফল হলে এই বাড়িও তিনি কিনবেন। ছোট পর্দায় পেশাদারি অভিনয়ে যাত্রা শুরু। তারপর বড় পর্দায় প্রবেশ। শাহরুখ খান হয়ে উঠলেন বলিউডের বাদশা। গোটা ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রিতে তাঁর শাসন। আর সেই বাংলোয় কিনে নেন শাহরুখ। নাম দেন 'মন্নত'।
তবে সব পেয়েছির মধ্যেও বাবাকে হারানোর যন্ত্রণা এখনও কুড়ে কুড়ে খায় শাহরুখকে। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে সেই অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন কিং খান। সঞ্চালক তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, বাবার শেষ স্মৃতি বলতে কী মনে পড়ে তাঁর? শাহরুখ বলেন, 'বাবার গলায় ক্যান্সার ছিল। হাসপাতালে দীর্ঘদিন ভর্তি ছিলেন। একদিন বলা হল, উনি সুস্থ। হাসপাতাল থেকে যেন বাড়ি নিয়ে আসি। সেদিনই বাবাকে বাড়ি নিয়ে এসেছিলাম। সাত-আট মাস পর বাবা কিছুটা সুস্থ। দিনটা এখনও মনে আছে। ১৯৮১ সালের ১৮ অক্টোবরের রাত। বাবা আব্দার করেছিলেন, ভ্যানিলা আইসক্রিম খাবেন। সেই মতো আইসক্রিম এল। রাত ১১টা-১২টা নাগাদ ভ্যানিলা আইসক্রিম খেলেন। সবাই খুব খুশি।'
শাহরুখ যোগ করেছেন, 'আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ মা ঘুম থেকে তুলে বললেন, হাসপাতালে যেতে হবে। বাবাকে ফের ভর্তি করা হয়েছে সেই রাতেই। অবস্থার আচমকা অবনতি হয়েছে। হাসপাতালে যখন পৌঁছই, রাত ৩টে-৪টে হবে। হাসপাতালে পৌঁছে বেডে গিয়ে ওঁর পা দেখেছিলাম। হাত দিয়ে দেখেছিলাম সেগুলো খুব ঠাণ্ডা। উনি মারা গিয়েছিলেন। আমি আর মুখ দেখিনি। বাবার ওই আইসক্রিম খাওয়া চেহারাটাই শেষ স্মৃতি হিসাবে রেখে দিতে চেয়েছিলাম।'
তার দশ বছর পর, ১৯৯১ সালে প্রয়াত হন শাহরুখের মা-ও। শাহরুখ বলেছেন, সেই সময় ভীষণ কঠিন এক সময় গিয়েছিল তাঁর ও তাঁর পরিবারের। অনেক ঝড় ঝাপ্টা সামলে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছিলেন তাঁরা।