কলকাতা: পুরস্কার পেতে কার না ভাল লাগে? কিন্তু পরিবেশ, পরিস্থিতি.. এইসব যেন কেমন নিভিয়ে দেয় আনন্দকে। আর তাই, যে ছবির জন্য এত লড়াই, সেই ছবির পুরস্কার পাওয়ার খুশিরও যেন ঠিক করে স্বাদ নিতে পারছেন না অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় (Srabanti Chatterjee)। ৭০তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (70th National Film Awards) -এ সেরা বাংলা ছবির শিরোপা পেয়েছে 'কাবেরী অন্তর্ধান'। আর সেই ছবিতেই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন শ্রাবন্তী। পুরস্কার পেয়ে খুশি, কিন্তু মন খুলে তা উদযাপন করতে পারছেন না শ্রাবন্তী.. বারে বারে তাঁর মনে ফিরে আসছে আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনা।


৭০তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের মঞ্চে সেরা বাংলা ছবির শিরোপা পেয়ে কেমন লাগছে, জানতে এবিপি লাইভ যোগাযোগ করেছিল শ্রাবন্তীর সঙ্গে। ভারি গলায় অভিনেত্রী বললেন, 'ভাল লাগছে, কিন্তু বর্তমানে কোনও উদযাপনের পরিস্থিতিতে নেই। এই ছবিটা নিয়ে অনেক লড়াই গিয়েছে। কোভিডের সময় শ্যুটিং কাবেরী অন্তর্ধান-এর। তারপরে প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে ছবিটা মুক্তি পায়নি। কোভিডের পরে ছবিটা মুক্তি পেয়েছিল। যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা প্রত্যেকে প্রশংসা করেছিলেন ছবিটার। সেই ছবিটা যে পুরস্কার পেয়েছে, তাতে আমি কৃতজ্ঞ। আমার পুরো টিম ভীষণ খুশি। কৌশিকদার (Kaushik Ganguly)-র সঙ্গেও কথা হয়েছে। ওঁকে শুভেচ্ছা জানাতে উনিও আমায় বললেন, অসাধারণ অভিনয়ের জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু এখন সেই আনন্দ উপভোগ করার পরিস্থিতি নেই।'


এক মুহূর্ত বিরতি নিয়ে শ্রাবন্তী ফের বলতে শুরু করলেন, 'আমিও একজন মহিলা। যতদিন না আরজি কর চিকিৎসক হত্যার যথাযথ বিচার হচ্ছে, মনের মধ্যে কী একটা কষ্ট যেন গুমরে গুমরে মরছে। আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করি, উনি নিশ্চয়ই ঠিক পথটা দেখাবেন। এমন পরিস্থিতি এসেছে যে মন থেকে পুরস্কারটা নিয়ে খুশি হলেও সেটা উদযাপন করতে ইচ্ছে করছে না। আসলে পজ়িটিভিটি কে না চায়.. কিন্তু আমাকেও তো কম কথা শুনতে হয়নি। আমাকেও সোশ্যাল মিডিয়ায় যা ইচ্ছে তাই বলা হয়। এগুলো ও তো এক ধরণের নির্যাতনই। যখন একজন মেয়ে আরেকজনকে নিয়ে ট্রোলিং করে, তখন সবচেয়ে কষ্ট হয়। মনে হয়, মেয়েরা যদি মেয়েদের পাশে না দাঁড়ায়, তাহলে কে দাঁড়াবে আর! আমরা ভালভাবে বাঁচব কি করে? আমরা পাবলিক ফিগার, আমাদের জীবন নিয়ে কৌতুহল থাকবে জানি। কিন্তু আমরা সামান্য কিছু করলেও সেটা নিয়ে বড় করে দেখানো হয়।'


১৪ অগাস্ট 'রাত দখল' কর্মসূচীতে যেতে পারেননি শ্রাবন্তী। আফশোসের সুরে বললেন, 'আমি খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। ভীষণ জ্বর। যাব ঠিক করেও যেতে পারলাম না। কিন্তু বাড়িতে থেকেই মানসিকভাবে ওদের সঙ্গে থেকেছি। শঙ্খ বাজিয়েছি। আমার বাড়িতে সারাক্ষণ আরজি কর সংক্রান্ত খবরই চলছে। আলোচনা চলছে.. গলার মধ্যে যেন একটা কষ্ট দলা পাকিয়ে রয়েছে। সেটা পুরস্কার পাওয়ার আনন্দের চেয়ে অনেক অনেক বেশি।'


আরও পড়ুন: National Film Awards 2024: শ্রেষ্ঠ অভিনেতা 'কান্তারা' খ্যাত ঋষভ শেট্টি, সেরা বাংলা ছবি 'কাবেরী অন্তর্ধান', ৭০তম জাতীয় পুরস্কারের তালিকায় কে কে?


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।