কলকাতা: গতকাল শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব শাঁওলি মিত্র (Shaoli Mitra)। তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে বিশেষ উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার। আজ অর্থাৎ সোমবার বেলা ১টা থেকে রবীন্দ্রসদনে (Rabindra Sadan) রাখা থাকবে শিল্পীর ছবি। সেখানে গিয়ে প্রয়াত নাট্য ব্যক্তিত্বকে শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন যদি কেউ চান। সন্ধে ৬টা পর্যন্ত রাখা থাকবে শাঁওলি মিত্রর ছবি। এই সময়ের মধ্যেই শ্রদ্ধা জানানোর জন্য উপস্থিত হতে হবে।


'যেটুকু চিকিৎসা চলছে তাই যথেষ্ট। আমার পুত্র ও কন্যা যেন কিছুতেই আমায় হাসপাতালে ভর্তি না করে আমার কষ্টবৃদ্ধি না করে। কোনওরকম আসুরিক চিকিৎসার পক্ষপাতী আমি নই।' তিনি হয়ত মৃত্যু বুঝতে পেরেছিলেন। না হলে কেনই বা লিখে যাবেন এই কথা! কেনই বা লিখে যাবেন 'ফুলভারের প্রয়োজন নেই। সামান্যভাবে সাধারণের অগোচরে যেন আমার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।' শাঁওলি মিত্রের ইচ্ছাপত্রের শেষ ইচ্ছা মেনেই সম্পন্ন হল তাঁর শেষকৃত্য। সিরিটি শ্মশানে। বাবা শম্ভু মিত্রেরও (Shambhoo Mitra) ইচ্ছা ছিল এভাবেই চলে যাওয়া। তাই হয়েছিল! সিরিটি শ্মশানে সবার অলক্ষ্যে পঞ্চভূতে বিলীন হয়েছিলেন তিনি। শাঁওলি মিত্র লিখেছিলেন, আমার একান্ত ইচ্ছা আমার পিতাকে অনুসরণ করেই, মৃত্যুর পর যত দ্রুত সম্ভব আমার সৎকার সম্পন্ন করা হয়।' রবিবার বিকেলে চলে গিয়েছেন তিনি। অক্ষরে অক্ষরে শেষ ইচ্ছা পালনের পর প্রকাশ কর হয় তাঁর প্রয়াণের খবর।


আরও পড়ুন: Pandit Birju Maharaj's Death : প্রয়াত কত্থক-গুরু পণ্ডিত বিরজু মহারাজ


ফুরলো জীবনের সব ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’। প্রয়াত বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব শাঁওলি মিত্র। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন শম্ভু মিত্র ও তৃপ্তি মিত্রের কন্যা শাঁওলি মিত্র। রবিবার বিকেলে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।


তাঁর শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী, অনাড়ম্বর ভাবে রবিবার বিকেলেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে সিরিটি শ্মশানে। তিনি অভিনয় করেছেন, ঋত্বিক ঘটকের ছবি ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’ ছবিতে। এছাড়াও তাঁর অভিনয় প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন অসংখ্য নাটকে। সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, বিতত বীতংশ, নাথবতী অনাথবত্‍, পুতুলখেলা, একটি রাজনৈতিক হত্যা, হযবরল, পাখি, গ্যালিলিওর জীবন, ডাকঘর, যদি আর এক বার। ২০০৩ সালে সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার পান শাঁওলি মিত্র, ২০০৯ সালে 'পদ্মশ্রী' সম্মানে ভূষিত হন তিনি। ২০১২ সালে অভিনয়ে জীবনব্যাপী অবদানের জন্য পান ‘বঙ্গবিভূষণ’ সম্মান।