নয়াদিল্লি: নয়াদিল্লি-এনসিআর অঞ্চলে বায়ু দূষণের ব্যাপারে ক্ষুব্ধ সুপ্রিম কোর্ট কড়া প্রশ্ন করল দিল্লি সরকারকে। বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ বলেছে, ভয়াবহ বায়ু দূষণের পরিণামে দিল্লি-এনসিআরে বসবাসকারী কয়েক কোটি মানুষের জীবন, মৃত্যুর প্রশ্ন উঠছে। বায়ু দূষণ রোধে ব্যর্থতার দায় নিতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই। বেঞ্চ বলেছে, দূষণের জন্য এভাবে মানুষকে মরতে দেওয়া যায়? দেশকে ১০০ বছর পিছনে ঠেলে দিতে পারেন কি? সরকারকেই এজন্য দোষ দিতে হবে আমাদের। কেন সরকার ফসল পোড়ানো বন্ধ করতে পারছে না?
দিল্লির মুখ্যসচিবকে আজ তলব করেছিল বেঞ্চ। তাঁকে বিচারপতি মিশ্র বলেন, রাস্তার ধুলো, নির্মাণকাজের জন্য বাড়ি ভাঙা, ময়লার স্তূপ, আবর্জনা জমার সমস্যার মোকাবিলা করতে না পারলে কেন ক্ষমতায় আছেন? গজদন্ত মিনারে বসে সরকার চালান আপনারা, আর মরতে হয় মানুষকে। নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পরও দিল্লিতে অবাধে নির্মাণকাজ চলছে বলে জানিয়ে বেঞ্চ তাঁকে বলে, দূষণের মাত্রাটা দেখুন। দয়া করে নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।
এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারগুলির তীব্র সমালোচনা করে সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, মানুষের সমস্যা, কষ্ট নিয়ে চিন্তা না থাকলে ক্ষমতায় থাকার কোনও অধিকার নেই ওদের। বেঞ্চে আছেন বিচারপতি দীপক গুপ্তাও। বেঞ্চ এও বলেছে, আপনারা (রাজ্য সরকার) জনকল্যাণমুখী সরকারের ধারণাই ভুলে গিয়েছেন। ওরা গরিব মানুষকে চিন্তিত নয়, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।
পঞ্জাব, হরিয়ানা সরকারকেও বেঞ্চ সুনিশ্চিত করতে বলেছে যে, আগামী দিনে সেখানে ফসল পোড়ানো হবে না, এটা সুনিশ্চিত করতে হবে।
কেন রাজ্য সরকারগুলি চাষিদের কাছ ফসল কিনতে, সংগ্রহ করতে পারে না, সেই প্রশ্নও তুলেছে বেঞ্চ। বিচারপতি মিশ্র বলেন, উন্নত পরিকাঠামো, উন্নয়নের পিছনে ব্যবহারের জন্য বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে আসা অর্থের কী হল? এত তহবিল এসেছে, কোথায় গেল স্মার্ট সিটির ভাবনা? কেন রাস্তাঘাটের হাল উন্নত হয়নি।
বেঞ্চ আরও বলেছে, দেশের গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে ফসল পোড়ানো, দূষণ রোধ নিয়ে আরও প্রত্যাশা আমাদের। কোটি কোটি মানুষের জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন এটা। এজন্য সরকারকে দায়ী করতে হবে।