নয়াদিল্লি: বাবা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত, এটা গোপন রাখার অভিযোগে ওভারসিজ সিটিজেন অব ইন্ডিয়া (ওসিআই) অর্থাত ‘বিদেশের বাসিন্দা ভারতীয় নাগরিক’ মর্যাদা হারাচ্ছেন ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত লেখক আতিশ আলি তাসির। আগামী দিনে তাঁর ভারত সফরও নিষিদ্ধ হতে পারে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের জনৈক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন অনুসারে এমন কাউকে ওসিআই কার্ড দেওয়া হয় না, যাঁর বাবা বা দাদু-ঠাকুমা পাকিস্তানি। তাসির এই তথ্য চেপে গিয়েছেন। মৌলিক শর্তই তিনি পূরণ করেননি, তথ্য গোপন করে গিয়েছেন। নাগরিকত্ব আইনে জালিয়াতি, মিথ্যা পরিচয় বা কোনও তথ্য গোপন রেখে ওসিআই কার্ডধারী হিসাবে কেউ যদি নথিভুক্ত হয়ে থাকেন, তবে সেই রেজিস্ট্রেশন বাতিল হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কালো তালিকাভুক্ত হবেন এবং তাঁর আগামী দিনে ভারতে ঢোকার দরজা বন্ধ হয়ে যাবে।




প্রসঙ্গত, ৩৮ বছর বয়সি তাহিরের বাবা প্রয়াত পাকিস্তানি রাজনীতিক সলমন তাসির, মা সুপরিচিত ভারতীয় সাংবাদিক তভলিন সিংহ।
তাহিরকে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তি বা ওসিআই কার্ডের ব্যাপারে সরকারি সিদ্ধান্তের জবাব বা আপত্তি পেশ করার সুযোগ দেওয়া হলেও তিনি কিছু জানাননি বলে দাবি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের মুখপাত্রের।
যদিও একটি সূ্ত্রে বলা হচ্ছে, ‘টাইম’ ম্যাগাজিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করে নিবন্ধ লেখার পরই ভারত সরকার তাসিরের ওসিআই কার্ড প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও এটা ‘পুরোপুরি ভুল ব্যাখ্যা, এর কোনও সারবত্তা নেই’ বলে জানান মুখপাত্রটি।


স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তাসির ট্যুইট করেছেন, একেবারেই মিথ্যা কথা। কনসাল জেনারেলের আমার বক্তব্যের প্রাপ্তি স্বীকার রয়েছে। তারপর থেকে তিনি আর কোনও বার্তা পাননি। তাঁকে নোটিসের জবাব দেওয়ার জন্য ২১ দিন নয়, মাত্র ২৪ ঘন্টা সময় দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন তাসির। দিল্লিতে বেড়ে ওঠা, নিউইয়র্কের এই সাংবাদিক-লেখক টাইম-এর ওয়েবসাইটে ‘আমি ভারতীয়, কেন সরকার আমায় নির্বাসনে পাঠাচ্ছে?’ শিরোনামে লেখা নিবন্ধে জন্মসূত্রে ব্রিটিশ নাগরিক হলেও তিনি ভারতীয় বলে দাবি করেছেন। লিখেছেন, ভারত আমার দেশ। সম্পর্কটা এতটাই প্রাণের, আবেগের যে, অলিখিত সংবিধানের মতো কোনওসময় এটা ঢাক পিটিয়ে বলার প্রয়োজন বোধ করিনি।