নয়াদিল্লি: নয়াদিল্লির এইমস-এর ডাক্তাররা দেশে তাঁর কিডনি প্রতিস্থাপন করতে চাইছিলেন না, এজন্য অস্ত্রোপচারে রাজি ছিলেন না তাঁরা। কিন্তু সুষমা স্বরাজ গোঁ ধরে বসেন, বলেন, তিনি বিদেশে যাবেন না, এইমসেই কিডনি বদল করাবেন, কেননা বিদেশে গেলে দেশের মানুষ ‘আমাদের ডাক্তার, হাসপাতালের’ ওপর ভরসা করতে পারবে না। প্রয়াত বিদেশমন্ত্রী সম্পর্কে এমন তথ্য জানিয়েছেন তাঁর স্বামী স্বরাজ কৌশল।
গত ৬ আগস্ট হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ৬৭ বছরের সুষমা। ২০১৬র ডিসেম্বরে তাঁর কিডনি প্রতিস্থাপন হয়।
পেশায় আইনজীবী, মিজোরামের প্রাক্তন গভর্নর কৌশল ট্যুইট করেছেন, ভারতে ওর কিডনি প্রতিস্থাপনে তৈরি ছিলেন না এইমসের ডাক্তাররা। কিন্তু ও (সুষমা স্বরাজ) বলে, এটা দেশের সম্মান, গর্বের প্রশ্ন। বিদেশ যেতে অস্বীকার করে ও। সার্জারির দিনটা নিজেই ঠিক করে ডঃ মুকুট মিনজকে বলে, ডক্টরসাব, আপনি শুধু যন্ত্র হাতে ধরে থাকুন, আমার অস্ত্রোপচার তো করবেন ভগবান কৃষ্ণ।
কৌশল স্মরণ করেছেন, পরদিন সুষমা ইজিচেয়ারে বসে হাসছিলেন। ও বলল, বিদেশে গেলে লোকে আমাদের ডাক্তার, হাসপাতালের ওপর ভরসা হারাবেন। ও নিজের সার্জারিকে সামান্য অস্ত্রোপচার ভেবেছিল। যাবতীয় কৃতিত্ব ও দিয়েছিল এইমসের ডাক্তারদের, যাঁরা দুনিয়ার সেরা, সেবায় নিবেদিত সিস্টার, কর্মীদের।
পাশাপাশি সুষমার চিকিত্সায় সাহায্য করায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ দেওয়ার মতো যথেষ্ট ভাষা তাঁদের পরিবারের জানা নেই বলেও উল্লেখ করেছেন কৌশল। লেখেন, উনি লাগাতার ডাক্তারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। ওর সুস্থ থাকাটা জরুরি, তাই
সবসময় তিনি ওকে বেশি পরিশ্রম না করার পরামর্শ দিতেন। বাঁশরী (তাঁদের মেয়ে), আমি ওনার (মোদি) কাছে চিরকৃতজ্ঞ।


প্রধানমন্ত্রীর জন্য বরাদ্দ এইমসের নির্দিষ্ট শাখায় যাতে সুষমার চিকিত্সা হয়, সেটা মোদি সুনিশ্চিত করেছিলেন বলে জানান কৌশল। সেইসঙ্গে উল্লেখ করেন, নিয়মিত সুষমার সঙ্গে কথা বলতেন মোদি। বলেন, এমন কিছুই ছিল না, যেটা উচিত ছিল, কিন্তু করা হয়নি। যার ফলে ও পুরোপুরি সেরে উঠে ফের কাজে যোগদান করে।
ট্যুইটারে কৌশল লিখেছেন, ধন্যবাদ, ধন্যবাদ, ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী আপনাকে। আমাদের অবশ্যই নিজেদের ডাক্তারদের ওপর আস্থা থাকা উচিত। এইসব তদন্ত কমিশন একটিও থাকা উচিত নয়। এতে ভিআইপিদের চিকি্তসা করাতে বাধা পান আমাদের দারুণ ডাক্তাররা। এইমসের ডাক্তারদের স্যালুট। ওঁদের যোগ্যতা, দায়বদ্ধতার কোনও তুলনা হয় না।
সুষমা অস্ত্রোপচারের পর কিছুদিন জনজীবন থেকে নিজেকে একেবারে অন্তরালে রাখেন। গত বছর মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা ভোটের সময় ঘোষণা করেন, তিনি স্বাস্থ্যের কারণে ২০১৯ এর লোকসভা ভোটে লড়বেন না।