বিজেপির সাফল্যের নেপথ্যে অমিত শাহর ‘নবরত্ন’
অমিত শাহর নবরত্নের একজন লখনউয়ের মেয়র দীনেশ শর্মা। দলে তাঁর গুরুত্ব এতটাই যে, নির্বাচনী কমিটির সদস্য না হয়েও তিনি টিকিট বন্টন সমিতির বৈঠকগুলিতে হাজির থাকতেন।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appঅমিত শাহর অষ্টম নবরন্ত অনিল জৈন। পেশায় চিকিত্সক জৈন নিজেকে আড়ালে রেখে কাজ করেন তিনি। বিজেপির সভাগুলিতে এলাকা ও জাতপাতের সমীকরণ অনুসারে নেতা পাঠানো ও সভার দায়িত্ব নিজের হাতে পালন করেছেন তিনি।
অমিত শাহর সপ্তম নবরত্ন শিবপ্রকাশ। আরএসএস থেকে উত্তরপ্রদেশের বিজেপির সহ সংগঠকের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কিছুটা লোকচক্ষুর আড়ালেই থাকেন। উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে মাটি কামড়ে থেকে প্রার্থী বাছাই ও রণনাতি তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পদের অন্যতম দাবিদার তিনি।
যোগী আদিত্যনাথও ছিলেন বিজেপি সভাপতির নবরত্নদের মধ্যে অন্যতম। যোগী বিজেপির হিন্দুত্বের পোস্টার বয়। তিনি তাঁর সভা-মিছিলের মাধ্যমে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় হিন্দুদের মধ্যে সফলভাবে মেরুকরণ ঘটাতে পেরেছেন। এই প্রথম সমগ্র উত্তরপ্রদেশে সভা করলেন তিনি।
অমিত শাহর পঞ্চম রত্ন ভূপেন্দ্র যাদব। সংবাদমাধ্যম সামলানোর দায়িত্ব তাঁর ওপরই ন্যস্ত ছিল। তিনি আক্রমণাত্মক রণনীতির বদলে অপেক্ষা ও প্রয়োজন অনুসারে রণনীতি স্থির করার ওপর ভরসা করেন তিনি। তাঁর দক্ষ ম্যানেজমেন্টের কারণেই কোনও নেতার কোনও অবাঞ্ছিত মন্তব্যের কারণে দলকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পিযুষ গোয়েল অমিতের শাহর চতুর্থ নবরত্ন। তাঁর ভূমিকা এবারের ভোটে পাঁচটি রাজ্যেই ছিল। দলের কোষাধ্যক্ষ তিনি। দলের প্রচারের যাবতীয় দায়িত্ব তাঁর ওপরেই ছিল। টিভি-রেডিও থেকে সংবাদপত্র, সমস্ত প্রচারমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেওয়া এবং তাঁর রিপোর্ট গ্রহণ ও প্রয়োজন অনুসারে রণকৌশল বদল-এ সবই গোয়েলই নির্ধারন করতেন।
বিজেপি সভাপতির নবরত্নের তালিকায় তৃতীয় নাম উত্তরপ্রদেশ বিজেপির সভাপতি কেশব প্রসাদ মৌর্য। অনগ্রসর শ্রেণীর মৌর্যকে বেছে নিয়েছিলেন অমিত শাহই। দলের প্রচারে মোদীর পরে তিনিই দলের অনগ্রসর শ্রেণীর মুখ হিসেবে উঠে এসেছিলেন। হাসিখুশি মৌর্য খুব সহজেই দলের নেতাদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
উত্তরপ্রদেশের বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ওম মাথুর অমিত শাহর দ্বিতীয় নবরত্ন। অমিত শাহই মাথুরকে গোবলয়ের এই গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। প্রার্থী বাছাই ও আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে জোট বাঁধার ক্ষেত্রে মাথুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মাথুর সম্পর্কে বলা হয় যে, তিনি যেখানেই যান, সেখানেই দলের মুখ্যমন্ত্রী তৈরি করেই আসেন।
অমিত শাহর নবরত্নের তালিকায় প্রথমেই রয়েছেন সুনীল বনশল। উত্তরপ্রদেশে দলীয় সংগঠনের প্রধান তিনিই। এবিভিপি থেকে বিজেপি-তে আসা সুনীল মাইক্রো ম্যানেজমেন্টে রীতিমতো দক্ষ। ভোটের ছয়মাস আগে দলের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা তৈরি করেছিলেন। বিভিন্ন শ্রেণীর মধ্যে সমন্বয় বজায় রেখেই এই তালিকা তৈরি হয়েছিল। সর্বস্তরে আলোচনার ভিত্তিতে তৈরি এই তালিকা দলের টিকিট বন্টনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক হয়েছিল। এতে টিকিট বন্টনের সময় বড় ধরনের কোনও অসন্তোষ দেখা যায়নি। ওই তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে জাতিগত সমীকরণের বিষয়টিও মাথায় রাখা হয়েছিল।
উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে ১৪ বছরের ‘বনবাসে’র অবসান ঘটিয়ে ক্ষমতায় ফিরে এসেছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সামনে রেখেই এবারের ভোটে লড়েছিল বিজেপি। কিন্তু রাজ্যের ভোটের পরিচালনার ভার নিজের হাতেই রেখেছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। দলের জয় নিশ্চিত করতে অমিত শাহ নবরত্নের সাহায্যে রণকৌশল চূড়ান্ত করেছিলেন। উত্তরপ্রদেশে দলের সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে অমিত শাহ ও তাঁর নবরত্নের কৌশলের রসায়ণ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -