নয়াদিল্লি: নোট বাতিলের তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে ট্যুইট করে রাহুল গাঁধী নরেন্দ্র মোদি সরকারের ওই পদক্ষেপকে ‘সন্ত্রাসবাদী হামলা’র সঙ্গে তুলনা করে দাবি করলেন, যারা ওই ‘জঘন্য’ আক্রমণের পিছনে ছিল, তাদের এখনও বিচার হয়নি। ২০১৬-র এই দিনেই দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাজার থেকে তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মোদি। বলেছিলেন, ওই নোট বৈধ নয়, আর চলবে না। প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি বলেন, নোট বাতিলের সন্ত্রাসবাদী আক্রমণের পর এই তিন বছরে ভারতীয় অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, বহু প্রাণ বলি হয়েছে, লাখ লাখ ছোট ব্যবসায়ী নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছেন, অসংখ্য মানুষ বেকার হয়েছেন। 'DeMonetisation Disaster' হ্যাশট্যাগ দিয়ে ট্যুইটে তিনি বলেছেন, ওই জঘন্য হামলার পিছনের লোকগুলোর এখনও শাস্তি হয়নি।

কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালাও নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তীব্র সমালোচনা করে তাঁকে ‘আজকের তুঘলক’ বলে কটাক্ষ করেন। তিনি ট্যুইট করেছেন, সুলতান মহম্মদ বিন তুঘলক ১৩৩০ সালে দেশের তখনকার মুদ্রা বাতিল করেছিলেন। আজকের তুঘলকও ২০১৬-র ৮ নভেম্বর একই কাজ করেছেন। তিনটে বছর কেটে গিয়েছে। দেশকে ভুগতে হচ্ছে কেননা অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে, কর্মসংস্থান নষ্ট হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ বা জাল নোটের কারবার-কিছুই কমেনি। কে দায়ী এজন্য? গ্লোবাল রেটিং এজেন্সি মুডিজের ভারত সরকারকে রেটিং কমিয়ে নেগেটিভ করার উল্লেখ করেও তিনি দাবি করেন, বিমুদ্রাকরণ ‘মানবসৃষ্ট বিপর্যয়’। নোট বাতিলের তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে ক্ষমতাসীন লোকজনের ‘নীরবতা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সুরজেওয়ালা।


মোদি সরকারকে বিঁধে নোট বাতিলের পদক্ষেপ এমন এক ‘বিপর্যয়’ প্রমাণিত হয়েছে যা অর্থনীতিতে ধস নামিয়েছে বলে ট্যুইট করেছেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। তিনি বলেছেন, নোট বাতিলের তিন বছর পর তা নিয়ে সরকারের প্রতিটি দাবি এবং যারা সেগুলিকে বাহবা দিচ্ছে যাবতীয় রোগ সারানোর ওষুধ বলে, সেগুলি তাদের দিকেই ফিরে আসছে।


কংগ্রেস এমপি শশী তারুর নোট বাতিলের ঘোষণার পর করা প্রধানমন্ত্রীর একটি মন্তব্যের সূ্ত্র ধরে ট্যুইটে তাঁকে কটাক্ষ করেন। মোদি বিমুদ্রাকরণের সিদ্ধান্ত জানিয়ে বলেছিলেন, আমি ভুল হলে জীবন্ত পুড়িয়ে দিন আমায়। পাল্টা তারুর লেখেন, গণতন্ত্রে কাউকে জীবন্ত পোড়ানো হয় না, সেটা উচিতও নয়। কিন্তু স্রেফ একবার ক্ষমা চেয়ে নেওয়াই অনেক। ব্রিটিশদের কাছেও আমি বহুদিন ধরেই এমন দাবিই করছি। এত মানুষের যে ক্ষতি হল, তার নিরাময়ের জন্য একটা সামান্য ‘ক্ষমা’ চান।