এক ঝলকে ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় শীর্ষস্থানাধিকারীদের কাহিনী
চাকরি ছেড়ে আইএএসের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন। প্রথম প্রচেষ্টায় ২৪৪ তম র্যাঙ্ক পান তিনি। এরপর রাজস্থান ক্যাডারের আইপিএস অফিসার হিসেবে নিযুক্ত হন। কিন্তু এখানেই থেমে থাকেননি গৌরব। পরের প্রচেষ্টায় সারা দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন। তাঁর মতে, কোনও ব্যক্তির নিজের খামতি ঢাকার চেষ্টার পরিবর্তে তা মেনে নেওয়া উচিত এবং সংশোধন ঘটানো উচিত।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In App২০১৩-র ইউপিএসসি পরীক্ষায় প্রথম স্থানাধিকারী ছিলেন গৌরব অগ্রবাল। জয়পুরের এডমন্ডস স্কুলে পড়াশোনা। এরপর কানপুর আইআইটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে বিটেক করেন। আইআইটি জয়েন্ট এন্ট্রাস পরীক্ষায় সারা দেশের মধ্যে ৪৫ তম স্থান অধিকার করেছিলেন তিনি। বিটেক করার পর তিনি আইআইএম লখনউ থেকে এমবিএ করেন। গোল্ড মেডেলও পান তিনি।
এর আগে ২০১০-এ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দিয়েছিলেন ইরা। তখন তাঁর র্যাঙ্ক হয়েছিল ৮১৫ তম। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার জন্য তাঁকে পোস্টিং দেওয়া হয়নি। তখন তিনি সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। ২০১৪-য় মামলায় জিতে হায়দরাবাদে পোস্টিং পান তিনি। এরই মধ্যে নিজের র্যাঙ্ক সংশোধনের প্রয়াস চালিয়ে যান। শেষপর্যন্ত চারবারের চেষ্টায় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় জেনারেল ক্যাটাগরিতে শীর্ষস্থান দখল করেন।
টিনার আগে ২০১৪-র পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিল দিল্লির ইরা সিঙ্ঘল। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে ইউপিএসসি পরীক্ষায় জেনারেল ক্যাটাগরিতে সাফল্য পান তিনি। ইরা আরও একবার প্রমাণ করে দিয়েছিলেন, আগ্রহ ও ইচ্ছা যদি থাকে তাহলে দুনিয়ার কোনও শক্তিই কাউকে লক্ষ্যে পৌঁছনো থেকে বিরত করতে পারে না।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে কলেজে শীর্ষস্থান দখল করেন টিনা। দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ১০০-র মধ্যে ১০০ নম্বর পেয়েছিলেন তিনি। ভারতীয় রাজনীতি সম্পর্কে খুবই আগ্রহী টিনা।
২০১৫-র ইউপিএসসি পরীক্ষায় শীর্ষ স্থান দখল করেন টিনা ডাবি। ২২ বছর বয়সে আইএএস পরীক্ষায় শীর্ষস্থান অধিকার করে তিনি সমগ্র দেশের তরুণীদের কাছেই রোল মডেল। স্কুলে পড়াশোনা করার সময় থেকেই মেধাবী টিনা দিল্লির শ্রীরাম কলেজ থেকে অর্থনীতিতে অনার্স করেন। জীবনে নিজের মাকেই আদর্শ হিসেবে মনে করেন টিনা। তাঁর বাবা জশবন্ত ডাবিও ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল হয়েছিলেন।
নন্দিনী এমএস রামাইয়া ইন্সস্টিটিউট থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ার পর কর্নাটকের পূর্ত্ত বিভাগে চাকরি করেন। চাকরি করতে করতেই স্থির করেন যে, আইএএস অফিসার হয়ে সমাজের জন্য ভালো কিছু করতে পারেন তিনি। নন্দিনীর মতে, একজন আদর্শ প্রশাসকের যদি সদিচ্ছা থাকে, নিজের কাজের প্রতি দায়বদ্ধ হন এবং চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে ইচ্ছুক থাকেন, তাহলে তিনি সমাজের জন্য অনেক কিছুই করতে পারেন।
২০১৬-র পরীক্ষায় কর্নাটকের নন্দিনী কে আর ইউপিএসসি-তে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। নন্দিনীকে এরআগেই আইএএসের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল। অনুদীপের মতোই ভারতীয় রাজস্ব পরিষেবায় আধিকারিক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন। এরপর তিনিও সিদ্ধান্ত নেন যে, আগামী দিনে আরও উদ্যোগ নেবেন এবং ভারতীয় প্রশাসনিক পর্যায়ে কাজ করবেন।
অনুদীপ রাজস্থান থেকে বিই (ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড ইন্সট্রুমেন্টেশন) করেছেন। উল্লেখ্য, অনুদীপ পরীক্ষায় বিকল্প বিষয় হিসেবে অ্যানথ্রপোলজি বেছে নেন। ২০১৩-তেই অনুদীপ সিভিল সার্ভিসে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁকে ভারতীয় রাজস্ব পরিষেবায় কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু এতে সন্তুষ্ট হননি তিনি। ভারতীয় প্রশাসক হওয়ার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন।
গতকাল ২০১৭-র ইউপিএসসি পরীক্ষার ফল ঘোষিত হয়েছে। পরীক্ষায় হায়দরাবাদের অনুদীপ দূরিশেট্টি প্রথম স্থান দখল করেছেন। শীর্ষস্থান পাওয়ার পর অনুদীপ বলেছেন, তাঁর এই সাফল্য পাওয়ার পথ একেবারেই মসৃণ ছিল না। যাঁরা তাঁকে সাহায্য করেছেন, এই সাফল্যের জন্য অনুদীপ তাঁদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, আব্রাহাম লিঙ্কন তাঁর অনুপ্রেরণার উত্স।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -