আমদাবাদ: উত্তরপ্রদেশের হিন্দু সমাজ পার্টির প্রধান কমলেশ তিওয়ারি হত্যাকাণ্ডের মূল দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল গুজরাত পুলিশের সন্ত্রাসদমন শাখা(এটিএস)। খবরে প্রকাশ, উভয় অভিযুক্ত আশফাক হুসেন ও মঈনউদ্দিন খুরশিদ পাঠানকে গুজরাত-রাজস্থান সীমান্তের কাছে শামলাজি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গুজরাত এটিএস-এর ডিআইজি হিমাংশু শুক্ল জানান, গোয়েন্দা মারফৎ খবর ছিল যে, দুই অভিযুক্ত শামলাজি দিয়ে গুজরাতে প্রবেশ করছে। সেই মতো প্রস্তুত ছিল পুলিশ। সীমান্তে পৌঁছতেই দুজনকে পাকড়াও করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, আশফাক ও মঈনউদ্দিন -- দুজনই সুরাতের বাসিন্দা। কমলেশের হত্যাকাণ্ডের পর থেকে দুজনই ফেরার ছিল। এর আগে, গত ১৯ তারিখ আশফাকের ছোট ভাই রশিদ, ফৈজান শেখ ও মৌলানা মোহসিনকে গ্রেফতার করেছিল গুজরাত পুলিশ।
গুজরাত পুলিশের দাবি, কমলেশ হত্যার কথা স্বীকার করেছে ধৃত আশফাক ও মঈনউদ্দিন। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতেরা জেরায় জানায়, হজরত মহম্মদ সম্পর্কে মন্তব্য করার জন্যই কমলেশকে হত্যা করে তারা। ধৃতেরা পুলিশকে জানায়, হত্যার পর তারা নেপালে পালিয়ে যায়। কিন্তু, টাকা ফুরিয়ে যাওয়ায় তারা ফিরে আসে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, নেপাল থেকে তারা নিজেদের আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল। পুলিশ ক্রমাগত ওই আত্মীয়দের ওপর নজর রাখছিল। সেই সূত্র ধরেই দুজনের সম্পর্কে তথ্য মেলে। জানা গিয়েছে, ধৃতদের উত্তরপ্রদেশ পুলিশের হাতে তুলে দেবে গুজরাত এটিএস। এর আগে, উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জানিয়েছিল যে, রোহিত সোলাঙ্কি নামে এক সহকর্মীর আধার কার্ড জাল করেছিল আশফাক। জন্মতারিখ পাল্টে নতুন নামে একটি ভুয়ো আধার কার্ড তৈরি করে সে।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ অক্টোবর, লখনউতে নাকা হিন্দোলায় নিজ বাসভবনে খুন হন বছর ৪৫-এর কমলেশ তিওয়ারি। প্রথমে উঠে আসে সোলাঙ্কির নাম। পুলিশকে তিনি জানান, কেন তাঁর নাম উঠে এল, তিনি জানেন না। তিনি এ-ও জানান, আশফাক তাঁর আধার কার্ড জালিয়াতি করেছে বলেও তিনি জানতেন না। এরপরই, পুলিশের বদ্ধমূল ধারনা হয় যে, এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছে আশফাক ও মঈনউদ্দিন। কিন্তু, ততক্ষণে দুজনই ফেরার হয়ে যায়।
এই হত্যাকাণ্ডে মহারাষ্ট্র থেকে ষষ্ঠ ব্যক্তিকেও গ্রেফতার করেছে সেখানকার এটিএস। ২৯ বছর বয়সী সঈদ আসিম আলি এর আগে ইউটিউবে কমলেশকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। গত রবিবার, লখনউতে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে দেখা করেন নিহত নেতার পরিবার। হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি তোলেন তাঁরা। এই হত্যাকে ‘সন্ত্রাস সৃষ্টি’-র সঙ্গে তুলনা করে তিওয়ারির পরিবারকে যথাযথ বিচারের আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী।