কানপুর: ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ কর্মসূচি ঘিরে সাফল্যের দাবির মধ্যেই শিশুকন্যাদের ওপর যৌন অত্য়াচার অব্যাহত উত্তরপ্রদেশে। কানপুরের এক জঙ্গলে গত রবিবার যে ৬ বছর বয়সি মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধার হয়, তাকে গণধর্ষণ করে হৃত্পিণ্ড, ফুসফুস দেহ থেকে আলাদা করে নেওয়া হয়েছে বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এল।
রবিবারই অঙ্কুল কুরিল (২০) ও বীরান (৩১) নামে দুই অভিযুক্ত হত্যাকারী গ্রেফতার হয়েছে। তারাই, এক মহিলাকে মা হতে সাহায্য করবে, এই বিশ্বাসে কালাজাদু করার জন্য বাচ্চাটির শরীর থেকে হৃত্পিণ্ড, ফুসফুস বের করে মূল চক্রী পরশুরাম কুরিলকে সরবরাহ করেছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ব্রজেশ শ্রীবাস্তব। তিনি জানান, পরশুরামকে সোমবার গ্রেফতার করা হয়, পুরো বিষয়টি জানত, কিন্তু কাউকে কিছুই জানায়নি, এই সন্দেহে আটক করা হয় তার স্ত্রীকে। পরশুরাম শুরুতে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করলেও পরে জেরায় ভেঙে পড়ে অপরাধ কবুল করে। পুলিশকর্তাটি জানান, সে বলেছে, ১৯৯৯ সালে বিয়ে হলেও আজ পর্যন্ত সন্তান হয়নি তার। সে ভাগ্নে অঙ্কুল, তার বন্ধু বীরানকে রাজি করায় মেয়েটিকে অপহরণ করে তার হৃত্পিণ্ড, ফুসফুস আলাদা করে নিয়ে আসতে। শনিবার রাতে শব্দবাজি কিনতে ভদ্রস গ্রামের বাড়ির বাইরে বেরতেই মেয়েটিকে অপহরণ করে তারা। দুজনেই মদের নেশায় বেসামাল ছিল। মেয়েটিকে কাছের এক জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে, খুন করে তারা। দুজনকেই ভারতীয় দণ্ডবিধি ও শিশু যৌন নির্যাতন রোধ আইনের (পকসো) ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।
কালা জাদু করতেই যে মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য় বৈজ্ঞানিক তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করতে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও গন্ধশোঁকা কুকুরদের লাগানো হয় বলে জানিয়েছেন কানপুরের ডিজিপি প্রীতিন্দর সিংহ।
মেয়েটির পরিবার দেওয়ালি উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল যখন সে বাড়ি থেকে বেরয়। অনেকক্ষণ হয়ে যাওয়ায় জঙ্গল সহ আশপাশে আলো নিয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে তারা। রবিবার সকালে গ্রামবাসীরাই দেহটি দেখতে পান। মেয়েটির চপ্পল, পোশাক মেলে একটি গাছের কাছে।
মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এই জঘন্য দুষ্কর্মে যুক্ত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। মেয়েটির পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি তিনি এই মামলার ফাস্ট ট্রাক আদালতে বিচারের নির্দেশ দিয়েছেন যাতে অভিযুক্তদের দোষী ঘোষণা করে দ্রুত সাজা দেওয়া যায়।