কলকাতা: কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন আনার পরই মতুয়াদের নিয়ে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে শুরু হয়েছে টানাপোড়েন। এই প্রেক্ষাপটে এবার টাকার বিনিময়ে মতুয়া সম্প্রদায়ের লোকজনকে নাগরিকত্বের আশ্বাস ও শংসাপত্র দেওয়ার অভিযোগ উঠল বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা ঠাকুর বাড়িরই সদস্য শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগণার হাবড়ায় এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তোলেন খাদ্যমন্ত্রী ও তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
একটি শংসাপত্রও প্রকাশ্যে দেখিয়ে মন্ত্রীর দাবি, ২০০ টাকার বিনিময়ে মতুয়াদের এটা দেওয়া হচ্ছে। নীচে স্বাক্ষর আছে খোদ সঙ্ঘাধিপতি ও বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের।
জ্যোতিপ্রিয় এভাবে গত কয়েক মাসে কয়েক কোটি টাকা তোলা হয়েছে বলে দাবি করে বলেন, মতুয়াদের আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে, জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (এনআরসি)হলে এই শংসাপত্র দেখালে কারও নাগরিকত্ব যাবে না! পুলিশকে বিষয়টি দেখতে বলেছি। মতুয়াদের বলছি, পরবর্তীকালে টাকা চাইলে থানায় ডায়রি করুন।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে বিজেপির বিরুদ্ধে কার্ড দেওয়ার নামে টাকা তোলার অভিযোগে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বলেন, কার্ডের নামে অনেক জায়গায় টাকাও কালেকশন করছে। মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের ভুল বোঝাচ্ছে ওরা।
মতুয়াদের এমন সচিত্র পরিচয়পত্র দেওয়ার কারণ কী? তার সদুত্তর না দিলেও মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কুৎসার অভিযোগ তুলে শান্তনু ঠাকুর বলেন, মতুয়ারাই ওনাকে খাদ্যমন্ত্রী করেছেন, ওঁরাই ওঁকে হারাবেন, উনি মতুয়াদের সম্পর্কে কিছুই জানেন না, মতুয়াদের ভালমন্দ দেখার দায়িত্ব আমার, আমরা দেখব কী হবে না হবে।
সর্বশেষ লোকসভা ভোটে মতুয়া ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসিয়েছে বিজেপি। বনগাঁ, রানাঘাটের মতো যেসব আসনে মতুয়ারা বড় ফ্যাক্টর, সেগুলি তৃণমূলের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। সম্প্রতি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে বিজেপির কার্যকরী সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডার মিছিলেও পা মেলাতে দেখা যায় মতুয়া সম্প্রদায়ের বহু মানুষকে। পাল্টা তৃণমূলও অবশ্য মতুয়াদের বড় অংশ তাদের সঙ্গে রয়েছে বলে জোরদার প্রচার চালাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ঘিরে আরও সরগরম মতুয়া-রাজনীতি।