কলকাতা: মারণ ভাইরাসের আক্রমণ মানেই মৃত্যু নয়। অদম্য প্রাণশক্তিকে হাতিয়ার করে সে কথাই প্রমাণ করলেন বাগনানের শতায়ু মহিলা। দু’সপ্তাহের মধ্যেই করোনাজয় করে বাড়ি ফিরলেন। নাছোড় লড়াইয়ের পর তাঁর এই জয় নতুন শক্তি জোগাচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মী থেকে চিকিৎসকদের।


হার না মানার আগে তুমি কখনওই ব্যর্থ হবে না, সেই কবে বলে গিয়েছেন আলবার্ট আইনস্টাইন। করোনার কালবেলায় সেই কথাকেই সত্যি প্রমাণ করলেন হাওড়ার বাগনানের শতায়ু ভবতারিণী সামন্ত। করোনাকে হেলায় হারিয়ে যমের দুয়ারে কাঁটা বিছিয়ে দিয়েছেন বৃদ্ধা। যেখানে অতিমারির তাণ্ডব চলছে দুনিয়াজুড়ে, যেখানে সারা বিশ্বে করোনায় মৃতদের মধ্যে বয়স্কদের সংখ্যাই বেশি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারতে করোনায় মৃতদের ৪০ শতাংশেরই বয়স ৬০-এর ওপর। সেখানে ১০০ বছরের ভবতারিণী তৈরি করেছেন ইতিহাস।

করোনাজয়ী ভবতারিণী বলছেন, ‘এখানকার চিকিৎসকরা খুব ভাল। আমায় সারিয়ে তুলেছে। এবার বাড়ি যেতে চাইছি।’

সপ্তাহ দুয়েক আগে ভবতারিণীর জীবনের আকাশে আচমকা মেঘ জমে। জ্বর, সর্দি, কাশিতে ভুগতে থাকেন শতায়ু। ২২ নভেম্বর তাঁকে ভর্তি করা হয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে। পরের দিন নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ২৪ নভেম্বর আনা হয় সঞ্জীবন হাসপাতালে। শুরু হয় লড়াই। শুক্রবার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। ভবতারিণীর নাতি অরূপকুমার ঘড়াই বলছেন, ‘খেতে পারছিল না দিদা। প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যাই, জানতে পারি পজিটিভ। সুস্থ দিদাকে বাড়ি নিয়ে যেতে পারছি বলে ভাল লাগছে।’ ফুলেশ্বরের সঞ্জীবন হাসপাতালের ডিরেক্টর শুভাশিস মিত্র বলছেন, ‘শতায়ু মানুষকে সুস্থ করতে পেরে ভাল লাগছে। গত সাড়ে সাত মাসে ৭০ জন নব্বই উর্ধ্বকে সুস্থ করে তুলি। সমাজকে বলতে চাই, করোনা হারবে, মানুষ জিতবে।’

মাস তিনেক আগে আলিপুরদুয়ারের জয়গাঁর ১০১ বছরের বাসমতী কুসুয়া করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হন। বাগনানের ভবতারিণীও দেখিয়ে দিলেন মনের জোর থাকলে সব হয়। সম্প্রতি ইতালির ১০১ বছরের এক মহিলা দু’বার করোনা আক্রান্ত হয়েও সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন স্বাভাবিক জীবনে। অতিমারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এসব শতায়ুরাই নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছেন দুনিয়াকে।