নয়াদিল্লি: করোনা অতিমারী প্রতিরোধে অবরুদ্ধ কার্যত গোটা বিশ্ব। ভারতও তার ব্যতিক্রম নয়। প্রথম দফায় ২১ দিনের পর দ্বিতীয় পর্বে আরও ১৯ দিনের জন্য লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়েছে কেন্দ্র। সব মিলিয়ে এই অবরূদ্ধ অবস্থা শুষে নিচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতির প্রাণ। পৃথিবীকে ঠেলে দিচ্ছে আরেকটি অতিমন্দার দিকে। করোনা ভাইরাস সংকট চলতি বছরে বিশ্বের অর্থনীতিকে ৩ শতাংশ সঙ্কুচিত করে দেবে বলে সতর্কবার্তা দিল ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড (আইএমএফ)। সংস্থাটি বলছে, ১৯৩০-এর দশকের অতিমন্দার পর এমন অর্থনৈতিক সংকট বিশ্ব আর দেখেনি।
আর এই সংকট যত দীর্ঘায়িত হবে, বিভিন্ন দেশের সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলোকে তত কঠিন পরীক্ষার মধ্যে পড়তে হবে বলে পূর্বাভাস আইএমএফ-এর। ইতিমধ্যে গোটা বিশ্বে এক লক্ষেরও বেশি প্রাণহানি ঘটিয়েছে নোভেল করোনা ভাইরাস। আক্রান্ত প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, চিন ও জাপানের মতো বিশ্ব অর্থনীতির নিয়ন্ত্রক দেশগুলো। লকডাউনের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা, কল-কারখানা বন্ধ। অর্থনীতি প্রবল এক বিপদের সামনে দাঁড়িয়ে। আর এটাই বিশ্বকে আরেকটি অতিমন্দার দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা।
আইএমএফের সাম্প্রতিকতম ওয়ার্ল্ড ইকনমিক আউটলুকে বলা হয়েছে, ‘এটা এখন স্পষ্ট যে ১৯৩০ এর দশকের অতিমন্দার পর সবচেয়ে ভয়াবহ মন্দার সামনে দাঁড়িয়ে পৃথিবী। এটা এক দশক আগের অর্থনৈতিক সংকটকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে। এই লকডাউন বিশ্বের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির রাশ নাটকীয়ভাবে টেনে ধরবে।’ আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ বলছেন, ‘এই সঙ্কটে বিশ্ব আগামী দুই বছরে ৯ ট্রিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি হারাবে। এই অঙ্ক জার্মানি ও জাপানের মতো দুই শিল্পোন্নত দেশের মোট জিডিপির পরিমাণের চেয়েও বেশি।’
অতিমারী ঠেকাতে আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানি ও জাপানের দ্রুত পদক্ষেপের প্রশংসা করেও আইএমএফ বলছে, তারপরও অর্থনীতির ভঙ্গুর দশা কোনও দেশই এড়াতে পারবে না। আইএমএফ আভাস দিচ্ছে, যদি বছরের দ্বিতীয় ভাগে অতিমারী নিয়ন্ত্রণেও আসে, তবুও বিশ্ব অর্থনীতির বৃদ্ধি ৫.৮ শতাংশের বেশি হবে না। গোপীনাথ বলেন, গত শতাব্দীর সেই অতিমন্দার পর এই প্রথম বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো এক সঙ্গে মন্দার কবলে পড়তে যাচ্ছে। আইএমএফের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালে মন্দার পর বিশ্বে অর্থনীতি ০.৭ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছিল। এবার তা হতে যাচ্ছে ৩ শতাংশ।
আরও আশঙ্কার কথা শুনিয়েছে আইএমএফ। করোনা ভাইরাস অতিমারী শেষ না হয়ে যদি দীর্ঘায়িত হয়, বা ২০২১ সালে যদি ফের দেখা দেয়, তবে পৃথিবীকে আরও ভয়াবহ ঝুঁকির মুখে পড়তে হবে। তাতে বিশ্বের জিডিপি বৃদ্ধি আরও ৮ শতাংশ পয়েন্ট কমবে বলে শঙ্কিত তারা। আর তা গরিব দেশগুলোকে যে বড় বিপর্যয়ের সামনে দাঁড় করিয়ে দেবে, তা নিয়েও চিন্তায় আইএমএফ। লকডাউনের বিরূপ প্রভাব অর্থনীতির উপর পড়লেও বর্তমান পরিস্থিতিতে কোয়ারেন্টিন ও সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখা ছাড়া অতিমারী প্রতিরোধের আর কোনও উপায় নেই বলে স্বীকার করে নিচ্ছে আইএমএফও। পাশাপাশি নোভেল করোনা ভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে এখন সব দেশকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে আইএমএফ।
১৯৩০ সালের পর ফের অতিমন্দার আশঙ্কা, করোনায় বিশ্ব অর্থনীতির ৩ শতাংশ ক্ষতির পূর্বাভাস আইএমএফের
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Updated at:
15 Apr 2020 01:09 PM (IST)
আরও আশঙ্কার কথা শুনিয়েছে আইএমএফ। করোনা ভাইরাস অতিমারী শেষ না হয়ে যদি দীর্ঘায়িত হয়, বা ২০২১ সালে যদি ফের দেখা দেয়, তবে পৃথিবীকে আরও ভয়াবহ ঝুঁকির মুখে পড়তে হবে।
NEXT
PREV
আজ ফোকাস-এ (aaj-focus-e) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -