নয়াদিল্লি: নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে রবিবার জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদী পড়ুয়াদের ওপর পুলিশি দমনপীড়নের অভিযোগে সোমবার রাজধানীতে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সামিল প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। উত্তর প্রদেশে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ওপরও পুলিশি হামলার অভিযোগ উঠেছে। ইন্ডিয়া গেটে অনুষ্ঠিত সভায় কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রের সরকার দেশের সংবিধানের ওপর আঘাত হেনেছে বলে দাবি করেছেন। ছাত্র বিক্ষোভ মোকাবিলায় পুলিশি আচরণকে দেশের আত্মার ওপর আক্রমণও বলেছেন তিনি। বলেছেন, যুবকরা দেশের বিবেক, আত্মা। ওদের প্রতিবাদ করার অধিকার আছে। আমিও একজন মা। ওদের লাইব্রেরিতে ঢুকে সেখান থেকে টেনে বের করে মারধর করা হয়েছে। এটা সন্ত্রাস। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে যা ঘটল, সেজন্য জবাবদিহি করা উচিত প্রধানমন্ত্রীর। ওনার সরকারই তো ছাত্রদের পিটিয়েছে। ওনার ডুবন্ত অর্থনীতি নিয়ে কথা বলা উচিত। ওনার দলের বিধায়ক একটি মেয়েকে ধর্ষণ করেছে, কেন উনি একটি কথাও বলেননি?
আজকের ‘প্রতীকী প্রতিবাদ’ কর্মসূচিতে কংগ্রেসের প্রতিটি সদস্য এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়বেন, ছাত্রদের পাশে দাঁড়াবেন বলেও জানান প্রিয়ঙ্কা। তাঁর সঙ্গে প্রতিবাদ সভায় সামিল হন প্রথম সারির বেশ কয়েকজন কংগ্রেস নেতা। প্রিয়ঙ্কার হাতে ধরা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, তরুণ পড়ুয়াদের ওপর আক্রমণ বন্ধ করুন। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার দাবি, এই সরকার দেশের যুবসমাজ, পড়ুয়াদের অধিকারের ওপর আক্রমণ নামিয়েছে। সেজন্যই প্রিয়ঙ্কা গাঁধী, অন্য সিনিয়র কংগ্রেস নেতারা ইন্ডিয়া গেটে প্রতীকী প্রতিবাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এর আগে তিনি গতকাল রাতে জামিয়ায় হিংসার জন্য বিজেপি সরকারকে দায়ী করে বলেন, ওরা সংবিধান ও পড়ুয়াদের আক্রমণ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে পড়ুয়াদের ওপর হামলা করা হয়েছে। আমরা সংবিধানের জন্য লড়ব, এই সরকারের বিরুদ্ধে লড়ব।
রবিবার জামিয়া নগর এলাকায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভের সময় বহু ছাত্র, পুলিশকর্মী আহত হন। বিক্ষোভকারীরা ভারত নগরের কাছে কয়েকটি ডিটিসি বাসে আগুন লাগায়। আগুন নেভানোর জন্য পাঠানো একটি দমকলও ভাঙচুর করা হয়। দিল্লি পুলিশের জনসংযোগ অফিসার বলেছিলেন, বিক্ষোভকারীদের একাংশ মারমুখী হয়ে উঠে পুলিশ ও এলাকার বাড়িগুলির ওপর পাথর ছুড়তে থাকে। পুলিশ লাঠি চালাতে, কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়তে বাধ্য হয়।
বিরোধী নেতারা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের কী প্রভাব-ফল হতে পারে, তা না ভেবেই তা পাশ করিয়েছে বলে অভিযোগ তুলে সরকারকে আক্রমণ করেন। কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারই ‘আসল অপরাধী’। তারা সংসদে এমন একটা ‘জনবিরোধী’ বিলে ছাড়পত্র দিল তার কী পরিণতি হতে পারে, সেটা না ভেবেই।