নয়াদিল্লি: নোট বাতিল নিয়ে নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র আক্রমণ করে রাহুল গাঁধী বললেন, বেকারির মতো ভয়াবহ সমস্যার সমাধান না হওয়া সত্ত্বেও কেন তিনি এত বড় একটা আঘাত দিলেন, দেশবাসীর কাছে তার জবাব দেওয়ার দায় রয়েছে ওনার।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে রাহুল বিমুদ্রাকরণকে দেশের ‘সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি’ আখ্যা দেন, বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই জবাব দিতে হবে, যেখানে বেকারি ও ডিজিপির হার কম থাকার মতো সমস্যা রয়েই গিয়েছে, সেসময় কেন তিনি নোট বাতিলের মতো এত বড় একটা আঘাত দিলেন।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নোট বাতিলের পরিণাম সম্পর্কে গতকালের রিপোর্টের উল্লেখ করেন তিনি। মোদীর ঘোষণায় বাতিল নোটের ৯৯ শতাংশের বেশি ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় ফিরে এসেছে বলে রিপোর্টে জানানো হয়েছে। মোদী দাবি করেছিলেন, ৫০০, ১০০০ টাকার নোট বেআইনি করে দেওয়ার ফলে যাদের কাছে কালো টাকা গচ্ছিত আছে, তারা তা ফেরত দেবে না। এটা কালো টাকার বিরুদ্ধে তাঁর যুদ্ধ।
পাশাপাশি নোট বাতিল নিছক কোনও ভুল নয়, সচেতন ভাবেই মানুষকে হয়রান করতে করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন রাহুল। বলেন, বিমুদ্রাকরণে প্রধানমন্ত্রী কালো টাকা, সন্ত্রাসে আর্থিক মদত, জাল নোট নির্মূল করা যাবে বলে দাবি করা সত্ত্বেও তার যাবতীয় ঘোষিত উদ্দেশ্যই ব্যর্থ, এটা প্রমাণিত হয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আর্থিক রিপোর্টে। কেন প্রধানমন্ত্রী নোট বাতিল করলেন? ওনার ১৫-২০ জন বড় শিল্পপতি বন্ধু কয়েক হাজার কোটি টাকার অনুত্পাদক সম্পত্তি করেছেন। নোট বাতিলের মাধ্যমে আপনাদের পকেটের টাকা কেড়ে নিয়ে সরাসরি ওনার ‘পছন্দের স্নেহধন্য পুঁজিপতিদের’ দেওয়া হয়েছে। গুজরাতের একটি সমবায় ব্যাঙ্কের ঘটনায় এটাই দেখা গিয়েছে। ওই ব্যাঙ্কের ডিরেক্টর বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।


রাফাল যু্দ্ধবিমান ডিল নিয়েও সুর চড়ান রাহুল। রাফাল ডিলের তদন্তে যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) গঠনের দাবি করেন তিনি। মোদীকে তিনি প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, কেন ৫২০ কোটি টাকা দামের একটা বিমান ১৬০০ কোটি টাকায় কিনলেন? কাদের মুনাফা তোলার সুযোগ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন আপনি? কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকেও নিশানা করে কংগ্রেস সভাপতি বলেন, উনি শুধু ব্লগিং করে যাচ্ছেন, জেপিসি তদন্তের দাবির ব্যাপারে কিছুই বলছেন না।
এদিন যুব কংগ্রেস কর্মীরা রাস্তায় নেমে রাফাল কেনার ডিলকে ‘বৃহত্তম কেলেঙ্কারি’ বলে স্লোগান দেন। ৩৬টি রাফাল জেটবিমান কেনার জন্য ২০১৬-র ২৩ সেপ্টেম্বর ভারত, ফ্রান্সের প্রায় ৫৯০০০ কোটি টাকার চুক্তি হয়। ২০১৯ এর সেপ্টেম্বর থেকে যুদ্ধবিমান সরবরাহ শুরু হওয়ার কথা। ডিলটি চূড়ান্ত হয় ইউপিএ সরকারের আমলে অনুসৃত সংগ্রহ পদ্ধতি অনুসারে। যদিও কংগ্রেসের অভিযোগ, ডিলে ব্যাপক গরমিল, অনিয়ম করা হয়েছে। ইউপিএ আমলে একেকটি যুদ্ধবিমানের দাম ৫২৬ কোটি টাকায় স্থির হলেও বর্তমান সরকার যুদ্ধবিমানপিছু দিচ্ছে ১৬৭০ কোটি টাকার বেশি। কেন ডিলে সরকারি সংস্থা হ্যালকে রাখা হয়নি, সেই প্রশ্নও তুলেছে তারা।