Ahmedabad Plane Crash: নিহত পাইলটদের ঘাড়ে দোষ ঠেলার চেষ্টা? এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি, আদালতে মামলা
Air India Plane Crash: ক্যাপ্টেন সাবরওয়ালের বাবা, ৮৮ বছর বয়সি পুষ্করাজ সাবরওয়াল শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।

নয়াদিল্লি: আমদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান ভেঙে পড়ার পর চার মাস অতিক্রান্ত। দুর্ঘটনার সঠিক কারণ এখনও পর্যন্ত জানা না গেলেও, তা নিয়ে আঙুল তুলতে দ্বিধা করছেন না কেউ। সেই নিয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের পাইলট, প্রয়াত ক্যাপ্টেন সুমিত সাবরওয়ালের বাবা বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে বিচারবিভাগের নজরদারি চেয়ে আবেদন জানালেন তিনি। (Gujarat Plane Crash)
ক্যাপ্টেন সাবরওয়ালের বাবা, ৮৮ বছর বয়সি পুষ্করাজ সাবরওয়াল শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। প্রথম আবেদনকারী তাঁর নাম রয়েছে আবেদনে, দ্বিতীয় আবেদনকারী হিসেবে নাম রয়েছে ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান পাইলটস। তাঁদের দাবি, বিমান দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্ট ‘গভীর ভাবে ত্রুটিপূর্ণ’। তাঁদের অভিযোগ, তদন্তকারী দল শুধুমাত্র মৃত পাইলটদের উপর গুরুত্ব আরোপ করছেন। অথচ ওই দুই পাইলট নিজেদের হয়ে সওয়াল করার জায়গাতেই নেই। (Air India Plane Crash)
আদালতে যে আবেদনপত্র জমা পড়েছে, তাতে বলা হয়েছে, ‘তদন্তের বর্তমান গতিপ্রকৃতি যান্ত্রিক গোলযোগ, প্রক্রিয়াগত বিষয়গুলি পরীক্ষা করে দেখতে ব্যর্থ হয়েছে, দেখার তাগিদও অনুভব করেনি। বেছে বেছে যেটুকু অংশ প্রকাশ করা হয়েছে, বিশেষ করে বিমানকর্মীদের বিরুদ্ধে, যাঁরা নিজেদের হয়ে কথা বলার জায়গাতেই নেই, তা তথ্যগত ভাবে বিভ্রান্তিমূলক। দুর্ঘটনার আসল কারণ তুলে আনতে দেরি হচ্ছে এতে, বিমানযাত্রীর সুরক্ষা নিয়েও ঝুঁকি দেখা দিচ্ছে। এতে বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন’। (Ahmedabad Plane Carsh)
পাঁচ সদস্যের যে তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আবেদনকারীরা। বলা হয়েছে, ‘বিচারের মৌলিক নীতিই লঙ্ঘিত হয়েছে এক্ষেত্রে। কোনও ব্যক্তি, নিজের মামলার বিচার নিজেই করতে পারেন না। তদন্তকারী দলে রয়েছেন DGCA আধিকারিকরা, এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ, যাতে তদন্তপ্রক্রিয়া প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। DG, AAIB-র অধীনে রাখা হয়েছে তদন্তকারীদের। এতে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যেখানে যাঁরা বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে, তাঁরা নিজেরাই নিজেদের তদন্ত করছেন। বিচার বিভাগের নজরদারিতে, বিশেষজ্ঞদের দিয়ে, নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত এক্ষেত্রে। এতে দুর্ঘটনার আসল কারণ নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ উঠে আসবে, স্বচ্ছতা থাকবে এবং বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হবে। ঘাড়ে দায়িত্ব বর্তাবে, যাতে আগামীতে এমন বিপর্যয় আটকানো যায়’।
ক্যাপ্টেন সাবরওয়ালকে নিয়ে আবেদনপত্রে বলা হয়েছে, দীর্ঘ ৩০ বছরের নিষ্কলঙ্ক কেরিয়ার তাঁর। কোনও অনভিপ্রেত ঘটনা ছাড়াই ১৫ হাজার ৬৩৮ ঘণ্টা বিমান উড়িয়েছেন। এর মধ্যে বোয়িংয়ের বিমান উড়িয়েছেন ৮ হাজার ৫৯৬ ঘণ্টা। একবারও কোনও সমস্যা হয়নি, কারও প্রাণহানি ঘটেনি। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন পাইলট ইন কম্যান্ড, ক্লাইভ কুন্দর, ছিলেন ফার্স্ট অফিসার। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এবং স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের নজরদারিতে নিরপেক্ষ তদন্তের আর্জি জানানো হয়েছে আদালতে।
গত ১২ জুন গুজরাতের আমদাবাদ থেকে লন্ডন যাওয়ার পথে ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার AI-171 বিমান। উড়ানের মাত্র কয়েক সেকেন্ড পরই লোকালয়ে ভেঙে পড়ে বিমানটি, যাতে সব মিলিয়ে ২৬০ জন মারা যান। ঠিক কী কারণে বিমানটি ভেঙে পড়ে, তা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। দুই পাইলটের যে কথোপকথনের রেকর্ড তুলে ধরা হয়, তাও ছিল সংক্ষিপ্ত। একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘কেন বন্ধ করলে?’ অন্য জন বলেন, ‘আমি করিনি’।
ওই কথোপকথন সামনে আসতেই, নানা জল্পনা শুরু হয়। পাইলটদের ভুলেই বিমানটি ভেঙে পড়ে কি না, ভুল করে তাঁরা জ্বালানির জোগান বন্ধ করে দেন কি না, ওঠে প্রশ্ন। যদিও গোড়াতেই সেই নিয়ে আপত্তি তোলে সর্বভারতীয় পাইলটদের সংগঠন। যান্ত্রিক ত্রুটি, রক্ষণাবেক্ষণে অভাবের মতো গুরুতর অভিযোগ খতিয়ে দেখার পরিবর্তে, দুই পাইলটের কথোপকথনের কিছুটা অংশ কেন তুলে ধরা হল, প্রশ্ন তোলা হয়। তদন্তের গতিপথ নিয়েও একাধিক প্রশ্ন উঠে আসে। এবার পাইলটের বাবাই আদালতের দ্বারস্থ হলেন।






















