কলকাতা : গতকালই জানিয়েছিলেন তিনি তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন। সেইমতোই আজ তৃণমূলে যোগ দিলেন আলিপুরদুয়ার জেলা বিজেপির সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা। সুখেন্দুশেখর রায়, মুকুল রায় ও ব্রাত্য বসুর উপস্থিতিতে আজ তিনি তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নেন। 


আলিপুরদুয়ারে ভাল ফলের পরেও গেরুয়া শিবিরে ভাঙন। গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা সহ মোট আট জন আজ তৃণমূলে যোগ দিলেন। পরে গঙ্গাপ্রসাদবাবু বলেন, ভোটের আগে থেকেই এর পটভূমিকা তৈরি হয়েছিল। যখন বিজেপির জেলা নেতৃত্বকে তোয়াক্কা না করে জেলা থেকে সরাসরি মানুষকে কলকাতায় নিয়ে এসে যোগদান করিয়েছেন। দিল্লি নিয়ে গিয়ে যোগদান করিয়েছেন। জেলা নেতৃত্বকে জানানোর যোগ্যও মনে করেনি। তখন থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। আমি তার প্রতিবাদও করেছিলাম। কিন্তু, ভোটের সময় আমি দল ছাড়িনি। সেই সময় দল ছাড়লে আমাকে 'গদ্দার' বলা হত। আমি ফল করে দেখিয়েছি। পাঁচে পাঁচ দলকে দিয়েছি। রেজাল্ট দেওয়ার পরে আমার মন ভেঙে ছিল। তাই আজ আমি এই জায়গায়।    


বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি যাওয়ার হিড়িক পড়েছিল। প্রায় প্রত্যেকদিনই কোনও না কোনও নেতার বিজেপিতে যোগদানের খবর মিলছিল। কিন্তু বিধানসভা ভোটে ২০০ আসন পেয়ে বিজেপির ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন সফল হয়নি। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন ঘটেছে তৃণমূলের। ভোটের ফল ঘোষণার পর দল বদলে বিজেপিতে যাওয়া অনেক নেতাই পুরানো দলে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এরমধ্যে মুকুল রায়ের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের পর দক্ষিণবঙ্গে ভাঙনের মুখে বিজেপি। কার্যত একই পরিস্থিতি উত্তরবঙ্গে বিজেপির স্ট্রং-হোল্ড বলে পরিচিত আলিপুরদুয়ারেও। গেরুয়া ব্রিগেডে ভাঙন ধরিয়ে খোদ জেলা সভাপতিই সদলবলে তৃণমূলে যোগ দিলেন। বিজেপির জেলা সভাপতি হিসেবে পাওয়া গাড়িও ছেড়ে দিয়েছেন গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা। 


২০১৯-এর লোকসভা ভোটে তৃণমূলের হাত থেকে আলিপুরদুয়ার আসনটি ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। বিধানসভা ভোটে জেলার ৫টি বিধানসভার সবকটিই বিজেপির দখলে। পর্যবেক্ষক মহলের একাংশের মতে, ২০১৫ থেকে জেলা বিজেপির সভাপতির দায়িত্ব সামলানো গঙ্গাপ্রসাদ শর্মার মতো দক্ষ সংগঠকের দলত্যাগ নিঃসন্দেহে বিজেপির কাছে বড় ধাক্কা।